মহাসড়কে বেড়েছে ঘরমুখী মানুষের চাপ

- আপডেট সময়ঃ ১২:২৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০২৩
- / ১২৩ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকা ছাড়ছেন ঘরমুখো মানুষ। এজন্য উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গমুখী মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। তবে কোথাও যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিক গতিতেই চলছে যানবাহন। এদিকে, মহাসড়কে দূরপাল্লার বাসের পাশাপাশি বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল। সড়কে বিপুল সংখ্যক মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার চলতে দেখা গেছে। উত্তরবঙ্গের পথে সাভার, নবীনগর-চন্দ্রা, আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের প্রতিটি পয়েন্টেই রয়েছে যানবাহনের চাপ। সেইসঙ্গে বাস স্ট্যান্ডগুলোতে ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। আজ সোমবার বিকেলে শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ার সড়কগুলোতে দেখা গেছে এমন চিত্র। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার, হেমায়েতপুর, সাভার বাসস্ট্যান্ড, নবীনগর, নয়ারহাটসহ কয়েকটি পয়েন্টে রয়েছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের আশুলিয়া, জিরাবো, জামগড়া ও বাইপাইলের সড়কগুলোতে রয়েছে একই চিত্র। এ ছাড়া নবীনগর-চন্দ্রা সড়কের পল্লীবিদ্যুৎ, ডিইপিজেড, শ্রীপুর ও জিরানীতেও রয়েছে যানবাহনের জটলা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সড়কগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক ইনচার্জ (টিআই) জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা সড়কে আছি। সকাল থেকে পরিবহন বা যাত্রীর তেমন চাপ ছিল না। দুপুরের পর থেকে ধীরে ধীরে যাত্রীর চাপ ও যানবাহন বাড়তে শুরু করেছে। রাতে এই চাপ আরও বাড়বে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, যাত্রীদের নির্বিঘেœ গন্তব্যে পৌঁছে দিতে আমাদের ট্রাফিকসহ পুলিশ সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা সড়কে অবস্থান করছেন। যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সব ধরনের কাজ করছেন তারা। এদিকে গতকাল সোমবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ওসি রওশন ইয়াজদানী বলেন, সকাল থেকে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে কোথাও কোনো যানজট নেই। যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। হাটিকুমরুল হাইওয়ে ওসি বদরুল কবীর বলেন, হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে কাজ করছে। এ ছাড়া মোবাইল টিমও কাজ করছে। আশা করছি, এবার ঘরেমুখো মানুষের ঈদযাত্রা স্বস্তির হবে। ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জ ফেরা আব্দুল্লাহ সেখ বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বে কিছুটা যানজট থাকলেও পশ্চিম পাশে কোনো যানজট নেই। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কোনোরকম ভোগান্তি ছাড়া বাড়িতে পৌঁছেছি। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমের কড্ডা এলাকায় গেলে দেখা যায়, ঢাকার গাবতলী থেকে প্রাইভেটকারে যাত্রী নিয়ে বগুড়া যাচ্ছেন সোহেল। তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে যানচলাচল এতটা স্বাভাবিক থাকবে ভাবতে পারিনি। ঈদের আগে এরকম থাকলে গাড়ি চালিয়ে স্বস্তি পাওয়া যাবে। একটু বেশি আয়ও করা যাবে। সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান ম-ল বলেন, এবার যানজটের ভোগান্তি ছাড়াই স্বস্তিতেই মানুষ বাড়ি ফিরছে। যানজট যেন না হয় সেজন্য কড্ডার মোড় ও হাটিকুমরুল গোল চত্বর এলাকায় মাইকিং করে চালকদের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে যানজট নিরসনে সহ¯্রাধিক পুলিশ সদস্য মহাসড়কে কাজ করছেন।
এদিকে ঈদ এলেই যানজটের শঙ্কা তৈরি হতো দেশের ‘লাইফলাইন’ খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘরমুখো মানুষের। কিন্তু এবারের ঈদযাত্রায় মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের কোথাও যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। গত ঈদুল ফিতর ও গত বছরের দুই ঈদেও তেমন যানজট ছিল না। গতকাল সোমবার সরেজমিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার বিভিন্ন অংশে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কে গাড়ির চাপ কিছুটা বেড়েছে। তবে গাড়ি চলছে নির্বিঘেœ। কোথাও যানজট নেই। যানজটমুক্ত মহাসড়ক পেয়ে খুশি কুমিল্লার যাত্রীরা। ঢাকা থেকে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে আসা যাত্রী ওমর ফারুক বলেন, রাজধানীর টিকাটুলি মোড় থেকে বাসে উঠে মাত্র দেড় ঘণ্টায় কুমিল্লায় পৌঁছেছি। এর আগে কোনো ঈদে এত তাড়াতাড়ি কুমিল্লায় পৌঁছাতে পারিনি। চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লায় আসা যাত্রী শেখ ফরিদ জানান, চট্টগ্রামের অলংকার থেকে বাসে উঠেছি। শুরুতে রাস্তায় গাড়ির চাপ বেশি মনে হচ্ছিল। একটু পর রাস্তা কিছুটা ফাঁকা মনে হয়। চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লায় আসতে আড়াই ঘণ্টা সময় লেগেছে। হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, গত ১৮ জুন একটি মিটিংয়ে মহাসড়কে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কোনো যানবাহন না থামানোর নির্দেশনা দেই। কুমিল্লা রিজিয়নের ২২টি থানা ও ফাঁড়ির ৬৬টি পেট্রোল টিমের পাশাপাশি ইমার্জেন্সি সামাল দিতে ৩০টি কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে। যেকোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ৫টি সরকারি ও ১২টি বেসরকারি রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাদের সেবার জন্য অতিরিক্ত অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে।