ঢাকা, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

ঢাকা-১৭ আসন উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৯:০৯:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০২৩
  • / ১২৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা-১৭ আসন উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম।
আজ সোমবার রাত আটটায় এ প্রতিবেদন তৈরি পর্যন্ত ১২৪টি কেন্দ্রের মধ্যে প্রাপ্ত ১১৪ কেন্দ্রের ফলে এগিয়ে ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত। তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ২৬ হাজার ৫৮৮। একতারা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন আলম পান ৫ হাজার ১০২ ভোট। গতকাল সোমবার বিকেল থেকে রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজে এই ফল ঘোষণা শুরু হয়। ফল ঘোষণা করছেন ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান।
এদিকে উপনির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সিসিটিভির মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে নির্বাচন কমিশন। সংস্থাটির দাবি, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো ছিল। এদিকে এ উপনির্বাচনের পাশাপাশি গতকাল সোমবার দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল থেকে এই নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন অংশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে ভোটারের উপস্থিতিও ছিল বেশ কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি কিছুটা বাড়ে, যদিও তা সন্তোষজনক নয়। ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কারণ তুলে ধরে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আট জন। তবে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। মোহম্মদ এ আরাফাত ছাড়াও দলীয় প্রার্থীরা হচ্ছেন, জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান, জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মো. আকবর হোসেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মো. আশরাফুল আলম (হিরো আলম) ও মো. তারিকুল ইসলাম। প্রার্থীদের মধ্যে প্রচারণায় বেশি তৎপর ছিলেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মোহম্মদ আলী আরাফাত, একতারা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম ও জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের সিকদার আনিসুর রহমান।
প্রার্থীর ওপর হামলা: এদিকে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে এ হামালার ঘটনা ঘটে। এরপর রামপুরায় বেটার লাইফ হাসপাতালে নেওয়া হয় হিরো আলমকে। এ ঘটনার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হিরো আলম বলেন, আমি সারাদিন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। বিকেল ৩টা পর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল কেন্দ্রে কিছু লোক আমার ওপর হামলা চালায়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, তিনি (হিরো আলম) অনেক সমর্থকসহ কেন্দ্রে ঢোকার চেষ্টা করেন। তার সঙ্গে প্রায় ৭০ জনের মতো ইউটিউবার ছিলেন। তখন তাকে গেটে আটকে দেওয়া হয়। বলা হয়েছে, আপনার এজেন্ট বা চার-পাঁচজন নিয়ে ঢুকতে পারবেন। বাকিদের কেন্দ্র থেকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ভোটকেন্দ্রে কোনো কিছু হয়নি। তিনি যখন রাস্তায় এসেছেন তখন ওনাকে কে বা কারা ধাওয়া দিয়েছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি সুষ্ঠু-তদন্তের। এরইমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত। গতকাল সোমবার ভোটগ্রহণ শেষে এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ আহ্বান জানান তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ আরাফাত বলেন, আমি শুনেছি একজন প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। যদি তারা আমাদের দলের কর্মী হয়, তাহলে দলের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি চাই সত্যটা উন্মোচিত হোক। হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ‘খুবই অনাকাক্সিক্ষত’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনার তথ্য আমি জানতে পেরেছি। একজন প্রার্থীর সঙ্গে যে ঘটনাটি ঘটেছে আমি শুনেছি এবং জেনেছি, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমি মনে করি এটি খুবই অনাকাক্সিক্ষত। নির্বাচন সারা দিন খুব সুন্দরভাবে চলছিল, শেষ মুহূর্তে এরকম অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটার প্রয়োজন ছিল বলে আমি মনে করি না। তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনকে বিতর্কিত করার একটি অপচেষ্টা কেউ করেছে বলে মনে হয়। মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, যা ঘটেছে তার জন্য তীব্র নিন্দা জানাই। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমি দাবি জানাই এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তাদের ওপর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে নির্বাচনকে ঘিরে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।
ভোট বর্জন: এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় অভিযোগ করে ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনের ভোট বর্জন করেছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. তারেকুল ইসলাম ভূঁইয়া। গতকাল সোমবার রাজধানীর বনানী মডেল স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান। মো. তারেকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমি একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী, ছোট প্রার্থী। আমার এজেন্টদের প্রশাসন কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে না। আমাকে যদি সবাই মিলে সহযোগিতা করতো, প্রশাসন-নির্বাচন কমিশন থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত তাহলে আমি নির্বাচনে থাকতাম। আমার মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশন বাতিল করেছে। হাইকোর্ট থেকে আমি ২৬ জুন রায় নিয়ে আসছি। তিনি আরও বলেন, আমি কেন্দ্র পরিদর্শনের জন্য গুলশান দিয়ে ঢুকতে গিয়ে আমার গাড়ি আটক করা হয়েছে। প্রায় আধা ঘণ্টা ওখানে আমাকে আটক রাখার পর বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে ভেতরে এসেছি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, দুই-তিনটি কেন্দ্র পরিদর্শন করে আমি দেখেছি, সেখানে কোনো ভোটার নেই। সরকার দলীয় লোক ছাড়া আর কেউ সেখানে নেই। আমাদের এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তারা যে যার বাসায় চলে গেছে। তিনি বলেন, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনো প্রকারেই সম্ভব না। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার একটি কারণ জাতিকে আমি দেখাতে চেয়েছিলাম, সামনে জাতীয় নির্বাচনকে রেখে ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। কিন্তু কেন্দ্রের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ হলেও বাইরের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ নয়। আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে। কাজেই এভাবে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আগে অনেকগুলো অভিযোগ করেছিলাম, কিন্তু তারা আমাদের কথায় দাম দেয়নি। যেহেতু আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী, তাই আমাদের কোনো মূল্যায়ন নেই। তাই আমি আমার আত্মসম্মান নিয়ে প্রথমেই নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

ঢাকা-১৭ আসন উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত

আপডেট সময়ঃ ০৯:০৯:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা-১৭ আসন উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম।
আজ সোমবার রাত আটটায় এ প্রতিবেদন তৈরি পর্যন্ত ১২৪টি কেন্দ্রের মধ্যে প্রাপ্ত ১১৪ কেন্দ্রের ফলে এগিয়ে ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত। তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ২৬ হাজার ৫৮৮। একতারা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন আলম পান ৫ হাজার ১০২ ভোট। গতকাল সোমবার বিকেল থেকে রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজে এই ফল ঘোষণা শুরু হয়। ফল ঘোষণা করছেন ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান।
এদিকে উপনির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সিসিটিভির মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে নির্বাচন কমিশন। সংস্থাটির দাবি, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো ছিল। এদিকে এ উপনির্বাচনের পাশাপাশি গতকাল সোমবার দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল থেকে এই নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন অংশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে ভোটারের উপস্থিতিও ছিল বেশ কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি কিছুটা বাড়ে, যদিও তা সন্তোষজনক নয়। ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কারণ তুলে ধরে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আট জন। তবে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। মোহম্মদ এ আরাফাত ছাড়াও দলীয় প্রার্থীরা হচ্ছেন, জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান, জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মো. আকবর হোসেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মো. আশরাফুল আলম (হিরো আলম) ও মো. তারিকুল ইসলাম। প্রার্থীদের মধ্যে প্রচারণায় বেশি তৎপর ছিলেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মোহম্মদ আলী আরাফাত, একতারা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম ও জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের সিকদার আনিসুর রহমান।
প্রার্থীর ওপর হামলা: এদিকে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে এ হামালার ঘটনা ঘটে। এরপর রামপুরায় বেটার লাইফ হাসপাতালে নেওয়া হয় হিরো আলমকে। এ ঘটনার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হিরো আলম বলেন, আমি সারাদিন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। বিকেল ৩টা পর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল কেন্দ্রে কিছু লোক আমার ওপর হামলা চালায়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, তিনি (হিরো আলম) অনেক সমর্থকসহ কেন্দ্রে ঢোকার চেষ্টা করেন। তার সঙ্গে প্রায় ৭০ জনের মতো ইউটিউবার ছিলেন। তখন তাকে গেটে আটকে দেওয়া হয়। বলা হয়েছে, আপনার এজেন্ট বা চার-পাঁচজন নিয়ে ঢুকতে পারবেন। বাকিদের কেন্দ্র থেকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ভোটকেন্দ্রে কোনো কিছু হয়নি। তিনি যখন রাস্তায় এসেছেন তখন ওনাকে কে বা কারা ধাওয়া দিয়েছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি সুষ্ঠু-তদন্তের। এরইমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত। গতকাল সোমবার ভোটগ্রহণ শেষে এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ আহ্বান জানান তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ আরাফাত বলেন, আমি শুনেছি একজন প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। যদি তারা আমাদের দলের কর্মী হয়, তাহলে দলের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি চাই সত্যটা উন্মোচিত হোক। হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ‘খুবই অনাকাক্সিক্ষত’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনার তথ্য আমি জানতে পেরেছি। একজন প্রার্থীর সঙ্গে যে ঘটনাটি ঘটেছে আমি শুনেছি এবং জেনেছি, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমি মনে করি এটি খুবই অনাকাক্সিক্ষত। নির্বাচন সারা দিন খুব সুন্দরভাবে চলছিল, শেষ মুহূর্তে এরকম অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটার প্রয়োজন ছিল বলে আমি মনে করি না। তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনকে বিতর্কিত করার একটি অপচেষ্টা কেউ করেছে বলে মনে হয়। মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, যা ঘটেছে তার জন্য তীব্র নিন্দা জানাই। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমি দাবি জানাই এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তাদের ওপর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে নির্বাচনকে ঘিরে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।
ভোট বর্জন: এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় অভিযোগ করে ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনের ভোট বর্জন করেছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. তারেকুল ইসলাম ভূঁইয়া। গতকাল সোমবার রাজধানীর বনানী মডেল স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান। মো. তারেকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমি একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী, ছোট প্রার্থী। আমার এজেন্টদের প্রশাসন কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে না। আমাকে যদি সবাই মিলে সহযোগিতা করতো, প্রশাসন-নির্বাচন কমিশন থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত তাহলে আমি নির্বাচনে থাকতাম। আমার মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশন বাতিল করেছে। হাইকোর্ট থেকে আমি ২৬ জুন রায় নিয়ে আসছি। তিনি আরও বলেন, আমি কেন্দ্র পরিদর্শনের জন্য গুলশান দিয়ে ঢুকতে গিয়ে আমার গাড়ি আটক করা হয়েছে। প্রায় আধা ঘণ্টা ওখানে আমাকে আটক রাখার পর বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে ভেতরে এসেছি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, দুই-তিনটি কেন্দ্র পরিদর্শন করে আমি দেখেছি, সেখানে কোনো ভোটার নেই। সরকার দলীয় লোক ছাড়া আর কেউ সেখানে নেই। আমাদের এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তারা যে যার বাসায় চলে গেছে। তিনি বলেন, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনো প্রকারেই সম্ভব না। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার একটি কারণ জাতিকে আমি দেখাতে চেয়েছিলাম, সামনে জাতীয় নির্বাচনকে রেখে ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। কিন্তু কেন্দ্রের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ হলেও বাইরের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ নয়। আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে। কাজেই এভাবে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আগে অনেকগুলো অভিযোগ করেছিলাম, কিন্তু তারা আমাদের কথায় দাম দেয়নি। যেহেতু আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী, তাই আমাদের কোনো মূল্যায়ন নেই। তাই আমি আমার আত্মসম্মান নিয়ে প্রথমেই নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছি।