স্মার্ট মৎস্য সেক্টর গড়ে তুলতে হবে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

- আপডেট সময়ঃ ০৮:৪২:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুলাই ২০২৩
- / ১২২ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, শুধু মাছের উৎপাদন নয় বরং গুণগতমানের মাছ উৎপাদন এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মৎস্য সেক্টরও স্মার্ট করে গড়ে তুলতে হবে। আজ সোমবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে র্যালি শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু চত্বর ঘুরে পুনরায় সংসদ ভবনের সামনে এসে র্যালিটি শেষ হয়। র্যালি শেষে সাংবাদিকদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন এখন বিস্ময়কর, বৈপ্লবিক পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত। শুধু মাছের উৎপাদন নয় বরং গুণগতমানের মাছ উৎপাদন এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট মৎস্য সেক্টর গড়ে তোলা এখন আমাদের লক্ষ্য। দেশের চাহিদা মেটানোর পর উদ্বৃত্ত মাছ রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে মৎস্য খাত। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাছের উৎপাদন, বিপণনসহ মৎস্য খাতের সব প্রক্রিয়ায় যারা সম্পৃক্ত তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী এ সময় বলেন, সরকার আপনাদের সব ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা দিচ্ছে। অধিক পরিমাণে মাছের উৎপাদন করতে হবে। কোনো অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া যাবে না। মাছ বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনো ভেজাল মেশানো যাবে না। দেশ গঠনে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। এর আগে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শ ম রেজাউল করিম। এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল কাইয়ূম ও এ টি এম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সদস্য, মৎস্যজীবী ও মৎস্য খাতের বিভিন্ন অংশীজনরাও র্যালিতে অংশ নেন।
অন্যদিকে র্যালির আগে রমনায় মৎস্য অধিদপ্তরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পানির নিজস্ব উপাদান আছে, সেই উপাদন নষ্ট হলে মাছ উৎপাদনেও ক্ষতি হবে। মন্ত্রী বলেন, কোনোভাবেই পানির উপাদান নষ্ট করা যাবে না। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করে মাছ বিদেশে রপ্তানি করা। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, মাছ উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে নিরাপদ ও স্বাস্থসম্মত মাছ উৎপাদন বাড়াতে হবে। এটি দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। তিনি বলেন, দেশে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৭ দশমিক ৫৯ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) চেয়ে ৫৫ শতাংশ বেশি। ওই সময় মাছ উৎপাদিত হয়েছিল ৩০ দশমিক ৬২ লাখ টন। উৎপাদন বাড়ায় মাথাপিছু মাছ গ্রহণের হার ৬০ থেকে বেড়ে ৬৭ দশমিক ৮০ গ্রাম হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে স্মার্ট ফিশারিজ গড়ে তোলা হবে। ২০৪১ সালে মৎস্য উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ লাখ টন। সমুদ্রে মাছ ধরা ট্রলার মনিটরিং করতে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। রেজাউল করিম বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৭০ হাজার টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। সেখান থেকে আয় হয়েছে ৪ হাজার ৭৯০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এই খাতে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী বলেন, মাছের বহুমুখী ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিশেষ করে মাছের চিপস, কেকসহ বিভিন্ন প্রকারের খাদ্যপণ্য তৈরি করা হবে। তিনটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাব তৈরি করা হয়েছে। এসব ল্যাবে মাছের খাবার নিরাপদ কি না তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। আর যারা মাছের খাবারে ভেজাল মেশায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল কাইয়ূম ও এ টি এম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।