এডিসের লার্ভা ধ্বংসের কীটনাশক পরীক্ষা করে আমদানির নির্দেশ

- আপডেট সময়ঃ ০৯:৫৬:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪
- / ১১০ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসের আমদানিকৃত কীটনাশকের গুণগতমান পরীক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। আজ বুধবার সচিবালয়ে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক জাতীয় কমিটির ২০২৪ সালের প্রথম সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিমসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় মন্ত্রী এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসের আমদানিকৃত কীটনাশকের গুণগতমান পরীক্ষা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, গতবার মশার কীটনাশক স্প্রে নিয়ে কিছু বিতর্ক তৈরি হওয়ায় এ বছর পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে যাতে ওষুধ কার্যকর হয়। পরিবেশবান্ধব কীটনাশক আমদানির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিবেশবান্ধব কীটনাশকই আমরা ব্যবহার করি। ২০১৯ সাল থেকে এটা আমরা আমদানি শুরু করেছি। ইতোমধ্যে আরও কিছুকিছু কীটনাশক আবিষ্কার হয়েছে যেটা আরও বেশি কার্যকরী এবং পরিবেশের জন্য কম ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলো ইতোমধ্যে আমরা বাণিজ্যিকভাবে আমদানির জন্য বিভিন্নজনকে উৎসাহিত করছি। আমাদের সিটি করপোরেশনগুলো সীমিত আকারে এটি ব্যবহার করছে। সভার শুরুতে মন্ত্রী ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার প্রজননস্থলগুলো চিহ্নিত করে লার্ভা ধ্বংস করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বসত বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা যাতে জন্মাতে না পারে সেজন্য ফুলের টব, টায়ার, ফ্রিজের নিচে কিংবা বাসার ভেতর জমা পানি প্রতি তিনদিনে একবার পরিষ্কার করার ওপর জোর দেন। এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, হাসপাতাল ও এর মেডিকেল বর্জ্য এবং বিভিন্ন থানায় জব্দকৃত যানবাহনে যাতে এডিস মশা জন্মাতে না পারে সেজন্য বছরের প্রথম থেকেই সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষকে সচেতন হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ব্যাংক ও আবাসিক এলাকাগুলোকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ওপর গুরুত্ব দিতে আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা নিজেরা সচেতন হলে ডেঙ্গু ও এডিস মশা প্রতিরোধ কার্যকর করা সম্ভব। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সভায় এ বছর সারা দেশব্যাপী ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদকে কার্যকর ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন। তিনি এ সময় সারা দেশে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজারের অধিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ডেঙ্গু সচেতনতা বাড়াতে সক্রিয় হওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নিতে বলেন। তিনি জানান, গ্রামের অর্থনীতি শক্তিশালী হওয়ায় গ্রামেও নগরায়ণের ছোঁয়া লেগেছে ফলে গ্রামেও স্বচ্ছ জমাটবদ্ধ পানি থেকে এডিস মশার লার্ভা উৎপন্ন হতে পারে। যেহেতু গত বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে তাই আশঙ্কার কথা হচ্ছে এ বছর তা আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে যদি আমরা এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে না পারি। মন্ত্রী এ সময় এ বছরের ডেঙ্গুর গবেষণা ও ডাটা সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় ফলাফল সংরক্ষণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশনা দেন। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় যাতে ঠিক থাকে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে বলেন তিনি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ডেঙ্গু সচেতনতা বাড়াতে স্বাস্থ্য ও এডিসসহ নানা ধরনের মশার বিষয়ে শিক্ষা কারিকুলামে যোগ করা যায় কিনা সে বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিবেচনার আহ্বান জানান। এক বছরের কর্মপরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রতি বছরই কর্মসূচি আছে। এ বছরের জন্য আমাদের নতুন কোনো থ্রেট আছে কি না সেটি সবাই মিলে চিহ্নিত করতে বসেছি। গত বছরের মতো এবারও ডেঙ্গুর ভয়াবহতা দেখব কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, এটা আমি বলতে পারব না। কারণ বাংলাদেশের সব জায়গায় এটি সংক্রামিত হয়ে গেছে। এর পরিমাণ কমে যাবে সেটা বলা যাবে না। অনেক ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি না হওয়ায় রেকর্ডের বাইরে থাকে, সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটাই একমাত্র পন্থা। আপনি আক্রান্ত হয়েছেন এটা আপনার জানতে হবে। আপনি আক্রান্ত হয়েছেন এটা না জানলে কাউন্ট কীভাবে করবে? মশা নিয়ে এবার কলকাতায় মিছিল হয়েছে। কলকাতার উদাহরণ দেই সেটি ঠিক আছে, কারণ কলকাতা আমাদের থেকে অনেকটা এগিয়ে। তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় তিন হাজার মানুষ আছে কীটনাশক ছেটানোর জন্য। ঢাকার বাইরেও সেই ব্যবস্থা আমরা করতে পারি। ভলান্টিয়ার দিয়ে এটি করার ব্যবস্থা করছি। এজন্য ইউনিয়ন পরিষদকেও সচেতন করতে হবে। হঠাৎ করে একটি দুর্যোগ আসতে পারে। এখন কোভিড বিষয়ে সবাই জানে। সেজন্য জনসচেতনতা সবার দরকার।