যুদ্ধ চাই না, তবে গায়ে এসে পড়লে ছাড় নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

- আপডেট সময়ঃ ১০:২২:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ১১৯ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, তবে কেউ গায়ের ওপর এসে পড়লে ছেড়ে দেয়া হবে না। আমরা সবসময় তৈরি আছি। আজ রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারে সবসময়ই নানা ধরনের বিদ্রোহ লেগেই আছে। সম্প্রতি আমরা দেখেছি, রাখাইনের অনেক এলাকা একের পর এক দখল করে নিচ্ছে আরাকান আর্মি নামের একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। ক্রমাগত তারা শক্তিশালী হয়ে আরও সামনের দিকে এগোচ্ছে। আমাদের কাছে এই তথ্য এসেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছে। এদিকে মিয়ানমারের যে বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), তাদের ঘাঁটিগুলো একের পর এক দখল করে নিচ্ছে আরাকান আর্মি। আমাদের সীমান্তের সংলগ্ন যেগুলো ছিল, সেগুলো দখল করে নিয়েছে। আত্মরক্ষার্থে বিজিপির কয়েকজন সদস্য আমাদের সীমানায় ঢুকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। বিজিবি সদস্যরা তাদেরকে অবরুদ্ধ করেছেন। তাদের অস্ত্র জমা নিয়ে একটি জায়গায় আটকে রেখেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে, যাতে তারা এদেরকে নিয়ে যান। বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য কতটা হুমকি জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, দেখুন, আমরা কোনো যুদ্ধে জড়াতে চাই না। আমরা যুদ্ধ চাই না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময়ই আমাদেরকে সেই নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। তার মানে এই নয় যে, আমাদের গায়ে এসে পড়বে আর আমরা ছেড়ে দেব। সেটার জন্য আমরা সবসময় তৈরি আছি। আমরা ওখানে শক্তি বাড়িয়েছি। আমাদের পুলিশ ও কোস্টগার্ডকেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যাতে আমাদের সীমানায় কেউ কোনোভাবে অনুপ্রবেশ করতে না পারে। সে ব্যাপারে আমরা খুব সতর্ক আছি। আসাদুজ্জামান খান বলেন, মিয়ানমারে যে যুদ্ধ চলছে, সেটা কতদিন চলবে; আমরা জানি না। আমাদের সীমান্ত অতিক্রম করে কাউকে আমরা আসতে দেব না। বিজিবিকে আমরা সেই নির্দেশনা দিয়েছি। মিয়ানমার সীমান্ত পুলিশের যে ১৪ সদস্য বাংলাদেশে ঢুকেছে, তারা কোনো বাধার মুখে পড়েছিল কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা অস্ত্র হাতে ঢুকেছিল। তবে তারা আত্মরক্ষার্থে এখানে ঢুকেছে। এটা হতেই পারে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা যখন ভারতে ঢুকে পড়েছিলাম, মনে আছে সবার? আমরা একজন না, কোটি মানুষ সেখানে গিয়েছিলাম। সেভাবে মিয়ানমারের সীমান্ত পুলিশ আত্মরক্ষার্থে বাংলাদেশে ঢুকেছে, যুদ্ধের জন্য না।
কাউকে অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হবে না। যদি এভাবে আত্মরক্ষার্থে ঢুকে থাকে, তাহলে দেবেন কিনা, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সীমান্তের কাছে বার্ডার পুলিশ যারা, তারা যদি এমন আত্মরক্ষার্থে কেউ বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে, সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কিছু থাকে না। তাদেরকে আবার ফেরত পাঠাতে হবে। আমরা তাদের আটক রেখেছি, তাদের ফেরত পাঠানো হবে। রোহিঙ্গাদের আর প্রবেশ করতে দেয়া হবে কিনা- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত একটাই, সীমান্তে এখন যুদ্ধ চলছে, এখানে এখন কারও আসা উচিত হবে না। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যদি মনে করে, তাদের ওখানে যুদ্ধ হচ্ছে, তারা অন্য কোথাও যাবে, এই মুহূর্তে আর কাউকে আমরা ঢুকতে দেব না। মানবাধিকারের প্রশ্ন এখন আসবে না, কারণ যুদ্ধ চলছে। গোলাগুলি চলছে। এখানে কারও আসা উচিত হবে না। যেই আসবে, তাকে আবদ্ধ করে মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেয়া হবে।