ঢাকা, সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

ঘটনার ১৩ বছর পর হারুন-বিপ্লবের বিরুদ্ধে ফারুকের মামলা

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ১০:৩১:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪
  • / ১৩১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি বিরোধী দলে থাকাকালীন ২০১১ সালের ৬ জুলাই সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুককে লাঠি পেটায় গুরুতর আহত করে পুলিশ সদস্যরা। এ ঘটনার ১৩ বছর পর হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকারসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন জয়নাল আবেদীন ফারুক। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় এ হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন তিনি। বর্তমানে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। মামলা নম্বর ৮। মামলার এজাহারে উল্লেখ্য করা হয়, তৎকালীন সময়ে (২০১১ সালের ৬ জুলাই) ঘটনায় জড়িত ছিলেন তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) বর্তমানে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ এবং তৎকালীন সহকারী কমিশনার (এসি) ও বর্তমানে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। ২০১১ সালের ৬ জুলাই সকালে জয়নাল আবেদীন ফারুকের নেতৃত্বে বিরোধী দলের ১৫-২০ জন সংসদ সদস্য মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের সামনে জড়ো হন। ভোরবেলা তারা হেঁটে সংসদ ভবন এলাকা থেকে ফার্মগেট এলাকায় পৌঁছান। পরে ফার্মগেট থেকে তারা আবার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ফিরে যান। এ সময় হঠাৎ একটি বাস লক্ষ্য করে ঢিল ছোঁড়া হয়। পরে তৎকালীন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ডিসি ইমাম হোসেন, সহকারী উপকমিশনার হারুন অর রশিদ ও মোহাম্মদপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার সংসদ সদস্যদের সামনে গিয়ে তাদের থামানোর চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে জয়নাল আবেদীন ফারুকের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ জয়নাল আবেদীন ফারুকের দিকে তেড়ে যায়। আরও কয়েকজন পুলিশ তার দিকে এগিয়ে গেলে ধস্তাধস্তি শুরু হয় এবং তিনি মাটিতে পড়ে যান। পুলিশের কয়েকজন সদস্য তাকে লাথি মারেন এবং ধরে টানাহেঁচড়া করতে থাকেন। এ সময় ফারুকের গেঞ্জি খুলে যায়। একপর্যায়ে একজন পুলিশ সদস্যের লাঠির আঘাতে তার মাথা ফেটে যায়। ফারুকের মাথায় রক্ত দেখে নারী সংসদ সদস্যরা তাকে নিয়ে ন্যাম ভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ আবার এগিয়ে এলে জয়নাল আবদীন ফারুক আত্মরক্ষায় ন্যাম ভবনের দিকে দৌড় দেন। পুলিশও পিছু নিয়ে আবার সেখানে গিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। পুলিশ জয়নাল আবেদীন ফারুককে চ্যাংদোলা করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান। এরপর ফারুককে উদ্ধার করে নারী এমপি পাপিয়া আশরাফিয়ার ন্যাম ভবনের বাসায় নিয়ে যান। কয়েক ঘণ্টা পর সকাল ১০টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুকের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার পর আদালত এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। থানা মামলা না নেওয়ায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুকের ওপর হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ফারুককে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বিএনপির সংসদ সদস্য আশরাফউদ্দিন মিজান মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে ঢাকার একটি থানা এ-সংক্রান্ত মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। শেখ হাসিনার পদত্যাগে সরকার পতন ও তার দেশত্যাগের পর পলাতক এই দুই কর্মকর্তাসহ দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গতকাল সোমবার দুপুর ২টায় শেরে বাংলা নগর থানায় উপস্থিত হন বিএনপি নেতা জয়নালে আবেদীন ফারুক।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

ঘটনার ১৩ বছর পর হারুন-বিপ্লবের বিরুদ্ধে ফারুকের মামলা

আপডেট সময়ঃ ১০:৩১:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি বিরোধী দলে থাকাকালীন ২০১১ সালের ৬ জুলাই সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুককে লাঠি পেটায় গুরুতর আহত করে পুলিশ সদস্যরা। এ ঘটনার ১৩ বছর পর হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকারসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন জয়নাল আবেদীন ফারুক। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় এ হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন তিনি। বর্তমানে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। মামলা নম্বর ৮। মামলার এজাহারে উল্লেখ্য করা হয়, তৎকালীন সময়ে (২০১১ সালের ৬ জুলাই) ঘটনায় জড়িত ছিলেন তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) বর্তমানে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ এবং তৎকালীন সহকারী কমিশনার (এসি) ও বর্তমানে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। ২০১১ সালের ৬ জুলাই সকালে জয়নাল আবেদীন ফারুকের নেতৃত্বে বিরোধী দলের ১৫-২০ জন সংসদ সদস্য মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের সামনে জড়ো হন। ভোরবেলা তারা হেঁটে সংসদ ভবন এলাকা থেকে ফার্মগেট এলাকায় পৌঁছান। পরে ফার্মগেট থেকে তারা আবার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ফিরে যান। এ সময় হঠাৎ একটি বাস লক্ষ্য করে ঢিল ছোঁড়া হয়। পরে তৎকালীন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ডিসি ইমাম হোসেন, সহকারী উপকমিশনার হারুন অর রশিদ ও মোহাম্মদপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার সংসদ সদস্যদের সামনে গিয়ে তাদের থামানোর চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে জয়নাল আবেদীন ফারুকের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ জয়নাল আবেদীন ফারুকের দিকে তেড়ে যায়। আরও কয়েকজন পুলিশ তার দিকে এগিয়ে গেলে ধস্তাধস্তি শুরু হয় এবং তিনি মাটিতে পড়ে যান। পুলিশের কয়েকজন সদস্য তাকে লাথি মারেন এবং ধরে টানাহেঁচড়া করতে থাকেন। এ সময় ফারুকের গেঞ্জি খুলে যায়। একপর্যায়ে একজন পুলিশ সদস্যের লাঠির আঘাতে তার মাথা ফেটে যায়। ফারুকের মাথায় রক্ত দেখে নারী সংসদ সদস্যরা তাকে নিয়ে ন্যাম ভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ আবার এগিয়ে এলে জয়নাল আবদীন ফারুক আত্মরক্ষায় ন্যাম ভবনের দিকে দৌড় দেন। পুলিশও পিছু নিয়ে আবার সেখানে গিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। পুলিশ জয়নাল আবেদীন ফারুককে চ্যাংদোলা করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান। এরপর ফারুককে উদ্ধার করে নারী এমপি পাপিয়া আশরাফিয়ার ন্যাম ভবনের বাসায় নিয়ে যান। কয়েক ঘণ্টা পর সকাল ১০টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুকের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার পর আদালত এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। থানা মামলা না নেওয়ায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুকের ওপর হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ফারুককে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বিএনপির সংসদ সদস্য আশরাফউদ্দিন মিজান মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে ঢাকার একটি থানা এ-সংক্রান্ত মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। শেখ হাসিনার পদত্যাগে সরকার পতন ও তার দেশত্যাগের পর পলাতক এই দুই কর্মকর্তাসহ দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গতকাল সোমবার দুপুর ২টায় শেরে বাংলা নগর থানায় উপস্থিত হন বিএনপি নেতা জয়নালে আবেদীন ফারুক।