ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার আপিল শুনানির তারিখ নির্ধারণ

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৪:৩৮:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১১১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নিষিদ্ধের আদেশ বাতিলের পর এবার রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে খারিজ হওয়া আপিল শুনানিতে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ২১ অক্টোবর আবেদনটি শুনানির জন্য রাখা হয়েছে বলে জানা যায়।

আজ রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) এ জন্য সর্বোচ্চ আদালতের চেম্বার আদালতে আপিল পুনরুজ্জীবীত করতে আবেদন (রিস্টোরেশন পিটিশন) করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির আইনজীবীরা।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের আপিল গত বছর ১৯ নভেম্বর খারিজ করে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। একবার খারিজ হওয়া সেই আপিল আবার শুনানিতে উঠতে পারে কি না, জানতে চাইলে আইনজীবী শিশির মনির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শুনানিতে আপিলের পক্ষে আইনজীবী না থাকায় তখন তা ডিসমিস ফর ডিফল্ট, অর্থাৎ খারিজ করে দিয়েছিলেন সর্বোচ্চ আদালত। এই খারিজ আদেশের অর্থ হচ্ছে, শুনানি না হওয়ায় আপিল বা আবেদনটি খারিজ করে দেওয়া। ফলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কী যুক্তিতে আপিলটি করা হয়েছিল, তা সর্বোচ্চ আদালত জানেন না।

অর্থাৎ জামায়াতের আপিলটি মেরিটে (গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নে) খারিজ করা হয়নি।’
এ আইনজীবী আরো বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট রুলস অনুযায়ী কোনো আপিল এভাবে খারিজ হলে আপিলকারী আপিলটি পুনরুজ্জীবীত করতে আবেদন করতে পারেন। এ ধরনের আবেদনকে রিস্টোরেশন পিটিশন বলা হয়ে থাকে। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে সেই আবেদনটি করা হয়েছে।

আগামী ২১ অক্টোবর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য রাখা হয়েছে।’
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনে নির্বাচন কমিশন। সে সময় ৩৮টি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীও ছিল। আইন অনুযায়ী শুধু নিবন্ধিত দলগুলোই নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়।

নিবন্ধন দেওয়ার পরের বছরই, অর্থাৎ ২০০৯ সালে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন।
রিটে বলা হয়, চার কারণে জামায়াত রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধন পেতে পারে না। এক. জামায়াত নীতিগতভাবে জনগণকে সব ক্ষমতার উৎস বলে মনে করে না। সেই সঙ্গে আইন প্রণয়নে জনপ্রতিনিধিদের নিরঙ্কুশ ক্ষমতাকেও স্বীকার করে না। দুই. গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুসারে কোনো সাম্প্রদায়িক দল নিবন্ধন পেতে পারে না। অথচ কাজে কর্মে ও বিশ্বাসে জামায়াত একটি সাম্প্রদায়িক দল। তিন. নিবন্ধন পাওয়া রাজনৈতিক দল ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গের কোনো বৈষম্য করতে পারবে না। কিন্তু জামায়াতের শীর্ষপদে কখনো কোনো নারী বা অমুসলিম যেতে পারবে না। চার. কোনো দলের বিদেশে কোনো শাখা থাকতে পারবে না। অথচ জামায়াত বিদেশের একটি সংগঠনের শাখা। তারা স্বীকারই করে- তাদের জন্ম ভারতে, বিশ্বজুড়ে তাদের শাখা রয়েছে।

এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেন। জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি (১) (বি) (২) ও ৯০ (সি) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন ঘোষণা করা হবে না- জানতে চাওয়া হয় রুলে।

রুল জারির পর নিবন্ধন বাঁচাতে দলীয় গঠনতন্ত্রে ব্যাপক সংশোধন আনে জামায়াত। গঠনতন্ত্র থেকে আল্লাহ প্রদত্ত ও রসুল প্রদর্শিত ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বলা হয়। কিন্তু চূড়ান্ত শুনানির পর সে রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। সংবিধানের সঙ্গে জামায়াতের গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিক হওয়ায় দলটির নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয় ওই রায়ে। ফলে বিএনপির রাজনৈতিক মিত্র ধর্মভিত্তিক দল জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন করার পথ বন্ধ হয়ে যায়।

পরে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিল জামায়াত। কিন্তু ২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট সে আবেদন খারিজ করে দেন চেম্বার আদালত। এরপর ওই বছর ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পেলে রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে জামায়াতে ইসলামী, যা পরে আপিল হিসেবে গণ্য করা হয়। হাইকোর্টের রায়ের পর দশম, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেনি জামায়াতে ইসলামী। হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করার পাঁচ বছর পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।

গত বছর ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হওয়ার দিন রাজধানীতে সমাবেশ করে জামায়াত। দলটির কর্মসূচি চলতে থাকলে তা বন্ধ করতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন চ্যালেঞ্জ করা রিটকারী তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ কয়েকজন (রিটকারী)। একটি আবেদনে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলটির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। অন্যটিতে বিচারাধীন বিষয় উপেক্ষা করে নিবন্ধন দাবি করায় জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনার অরাজি জানানো হয়।

গত বছর ২৬ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন দুটি উপস্থাপন করা হয়। সেদিন চেম্বার আদালত আবেদন দুটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। পরে ৩ আগস্ট থেকে আবেদন দুটি কার্যতালিকায় উঠলেও আপিল বিভাগ শুনানি মুলতবি করেন। পরে জামায়াতের আইনজীবীর সময় আবেদনে শুনানি কয়েকবার পেছানো হয়।

গত ৬ নভেম্বর সর্বোচ্চ আদালত এক আদেশে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দলটির আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত নেন। এর জন্য ১২ নভেম্বর তারিখ রাখেন। এদিনও জামায়াতের মনোনীত আইনজীবীর পক্ষে সময় চাইলে আপিল বিভাগ শুনানি পিছিয়ে দেন। সে ধারাবাহিকতায় ১৯ নভেম্বর দুটি আবেদনসহ জামায়াতের আপিলটি শুনানিতে ওঠে। সেদিন জামায়াতের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তবে জামায়াতের আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে অন্য এক আইনজীবী সময় আবেদন নিয়ে দাঁড়ান। আদালত এ আবেদন না নিয়ে শুনানির সময় পিছিয়ে দেন। ওই সময়েও জামায়াতের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় আপিলটি খারিজ করে দেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার আপিল শুনানির তারিখ নির্ধারণ

আপডেট সময়ঃ ০৪:৩৮:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নিষিদ্ধের আদেশ বাতিলের পর এবার রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে খারিজ হওয়া আপিল শুনানিতে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ২১ অক্টোবর আবেদনটি শুনানির জন্য রাখা হয়েছে বলে জানা যায়।

আজ রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) এ জন্য সর্বোচ্চ আদালতের চেম্বার আদালতে আপিল পুনরুজ্জীবীত করতে আবেদন (রিস্টোরেশন পিটিশন) করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির আইনজীবীরা।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের আপিল গত বছর ১৯ নভেম্বর খারিজ করে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। একবার খারিজ হওয়া সেই আপিল আবার শুনানিতে উঠতে পারে কি না, জানতে চাইলে আইনজীবী শিশির মনির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শুনানিতে আপিলের পক্ষে আইনজীবী না থাকায় তখন তা ডিসমিস ফর ডিফল্ট, অর্থাৎ খারিজ করে দিয়েছিলেন সর্বোচ্চ আদালত। এই খারিজ আদেশের অর্থ হচ্ছে, শুনানি না হওয়ায় আপিল বা আবেদনটি খারিজ করে দেওয়া। ফলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কী যুক্তিতে আপিলটি করা হয়েছিল, তা সর্বোচ্চ আদালত জানেন না।

অর্থাৎ জামায়াতের আপিলটি মেরিটে (গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নে) খারিজ করা হয়নি।’
এ আইনজীবী আরো বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট রুলস অনুযায়ী কোনো আপিল এভাবে খারিজ হলে আপিলকারী আপিলটি পুনরুজ্জীবীত করতে আবেদন করতে পারেন। এ ধরনের আবেদনকে রিস্টোরেশন পিটিশন বলা হয়ে থাকে। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে সেই আবেদনটি করা হয়েছে।

আগামী ২১ অক্টোবর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য রাখা হয়েছে।’
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনে নির্বাচন কমিশন। সে সময় ৩৮টি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীও ছিল। আইন অনুযায়ী শুধু নিবন্ধিত দলগুলোই নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়।

নিবন্ধন দেওয়ার পরের বছরই, অর্থাৎ ২০০৯ সালে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন।
রিটে বলা হয়, চার কারণে জামায়াত রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধন পেতে পারে না। এক. জামায়াত নীতিগতভাবে জনগণকে সব ক্ষমতার উৎস বলে মনে করে না। সেই সঙ্গে আইন প্রণয়নে জনপ্রতিনিধিদের নিরঙ্কুশ ক্ষমতাকেও স্বীকার করে না। দুই. গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুসারে কোনো সাম্প্রদায়িক দল নিবন্ধন পেতে পারে না। অথচ কাজে কর্মে ও বিশ্বাসে জামায়াত একটি সাম্প্রদায়িক দল। তিন. নিবন্ধন পাওয়া রাজনৈতিক দল ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গের কোনো বৈষম্য করতে পারবে না। কিন্তু জামায়াতের শীর্ষপদে কখনো কোনো নারী বা অমুসলিম যেতে পারবে না। চার. কোনো দলের বিদেশে কোনো শাখা থাকতে পারবে না। অথচ জামায়াত বিদেশের একটি সংগঠনের শাখা। তারা স্বীকারই করে- তাদের জন্ম ভারতে, বিশ্বজুড়ে তাদের শাখা রয়েছে।

এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেন। জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি (১) (বি) (২) ও ৯০ (সি) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন ঘোষণা করা হবে না- জানতে চাওয়া হয় রুলে।

রুল জারির পর নিবন্ধন বাঁচাতে দলীয় গঠনতন্ত্রে ব্যাপক সংশোধন আনে জামায়াত। গঠনতন্ত্র থেকে আল্লাহ প্রদত্ত ও রসুল প্রদর্শিত ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বলা হয়। কিন্তু চূড়ান্ত শুনানির পর সে রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। সংবিধানের সঙ্গে জামায়াতের গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিক হওয়ায় দলটির নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয় ওই রায়ে। ফলে বিএনপির রাজনৈতিক মিত্র ধর্মভিত্তিক দল জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন করার পথ বন্ধ হয়ে যায়।

পরে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিল জামায়াত। কিন্তু ২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট সে আবেদন খারিজ করে দেন চেম্বার আদালত। এরপর ওই বছর ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পেলে রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে জামায়াতে ইসলামী, যা পরে আপিল হিসেবে গণ্য করা হয়। হাইকোর্টের রায়ের পর দশম, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেনি জামায়াতে ইসলামী। হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করার পাঁচ বছর পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।

গত বছর ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হওয়ার দিন রাজধানীতে সমাবেশ করে জামায়াত। দলটির কর্মসূচি চলতে থাকলে তা বন্ধ করতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন চ্যালেঞ্জ করা রিটকারী তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ কয়েকজন (রিটকারী)। একটি আবেদনে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলটির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। অন্যটিতে বিচারাধীন বিষয় উপেক্ষা করে নিবন্ধন দাবি করায় জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনার অরাজি জানানো হয়।

গত বছর ২৬ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন দুটি উপস্থাপন করা হয়। সেদিন চেম্বার আদালত আবেদন দুটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। পরে ৩ আগস্ট থেকে আবেদন দুটি কার্যতালিকায় উঠলেও আপিল বিভাগ শুনানি মুলতবি করেন। পরে জামায়াতের আইনজীবীর সময় আবেদনে শুনানি কয়েকবার পেছানো হয়।

গত ৬ নভেম্বর সর্বোচ্চ আদালত এক আদেশে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দলটির আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত নেন। এর জন্য ১২ নভেম্বর তারিখ রাখেন। এদিনও জামায়াতের মনোনীত আইনজীবীর পক্ষে সময় চাইলে আপিল বিভাগ শুনানি পিছিয়ে দেন। সে ধারাবাহিকতায় ১৯ নভেম্বর দুটি আবেদনসহ জামায়াতের আপিলটি শুনানিতে ওঠে। সেদিন জামায়াতের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তবে জামায়াতের আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে অন্য এক আইনজীবী সময় আবেদন নিয়ে দাঁড়ান। আদালত এ আবেদন না নিয়ে শুনানির সময় পিছিয়ে দেন। ওই সময়েও জামায়াতের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় আপিলটি খারিজ করে দেন।