ঢাকা, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ দুর্গোৎসব

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৯:০৯:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১০৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি হয়েছে আজ রোববার। দেবীকে বিদায় জানাতে রাজধানীতে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে জড়ো হয় হাজারো ভক্ত। শহরের বিভিন্ন মন্দির ও পাড়া থেকে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় এখানে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রতি শরতে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বর্গলোক কৈলাস ছেড়ে মর্ত্যে আসেন দেবী দুর্গা। নির্দিষ্ট তিথি পর্যন্ত বাবার বাড়িতে কাটিয়ে আবার ফিরে যান দেবালয়ের কৈলাসে স্বামীর বাড়িতে। দেবীর অবস্থানকালে এই পাঁচ দিন পৃথিবীতে ভক্তরা দেবীর বন্দনা করেন। বিজয়া দশমীতে পূজা উদযাপনের প্রধান আচারের অংশ হিসেবে এদিন নারীরা সিদুঁর খেলায় অংশ নেন। শহরের ম-প ও মন্দিরে দুর্গার পায়ে সিঁদুর নিবেদন করেন, যা ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলার অংশ। এই আচারটি দেবী দুর্গার শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। তারপর হিন্দু নারীরা একে অপরের গায়ে সিঁদুর মাখিয়ে জীবনে সমৃদ্ধি কামনা করেন। হাজারো মানুষ প্রতিমা বিসর্জন দেখতে জড়ো হয়েছেন বিভিন্ন নদীর ঘাটে। প্রতিমা বিসর্জনের সময় অনেক ভক্ত অশ্রুসিক্ত থাকেন। আবার অনেকেই ক্ষণটিকে সুন্দর করে কাটাতে নেচে-গেয়ে উদযাপন করেন। বিসর্জনের আয়োজন দুর্গা পূজার স্থায়ী সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য তুলে ধরে।
পতেঙ্গায় মানুষের ঢল
প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে দুপুর থেকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে বিপুলসংখ্যক মানুষের ঢল নামে। পতেঙ্গায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে চলে প্রতিমা বিসর্জন। এতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম। এবার চট্টগ্রামে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ছাড়াও পাথরঘাটার গঙ্গাবাড়ি এলাকায় কর্ণফুলীতে, কালুরঘাট, কাট্টলী রানী রাসমণি ঘাটেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। বিভিন্ন নদী এবং পুকুরেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জি বলেন, ‘এবার চট্টগ্রামে ২ হাজার ৪৫৮টি ম-পে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে মহানগরে ২৯৩টি এবং জেলার ১৫টি উপজেলায় পূজাম-প ছিল ২ হাজার ১৬৫টি। বেলা ১২টা থেকে পতেঙ্গা সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। খুবই সুশৃঙ্খলভাবে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসন সহায়তা করছে।’ গতকাল রোববার বিকালে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিময় সম্প্রীতির জনপদ। এখানে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মাচরণ পালনের অধিকার আছে। এ দেশে ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই। সবাই নিজ ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রকৃত ধার্মিক ও মানবিক মানুষের সুদৃঢ় ঐক্যে শান্তির বাংলাদেশ গড়তে হবে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এই সম্প্রীতি অক্ষুণœ রাখতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। বিগত বছরগুলোর মতো এবারও শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষে পূজাম-পে পরিচ্ছন্নতা, আলোকায়ন, পানীয়-জলের ব্যবস্থা এবং পূজার্থীদের নিরাপত্তাসহ পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিমা বিসর্জনের আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।’ চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জির সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিখিল চন্দ্র নাথের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ দুর্গোৎসব

আপডেট সময়ঃ ০৯:০৯:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি হয়েছে আজ রোববার। দেবীকে বিদায় জানাতে রাজধানীতে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে জড়ো হয় হাজারো ভক্ত। শহরের বিভিন্ন মন্দির ও পাড়া থেকে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় এখানে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রতি শরতে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বর্গলোক কৈলাস ছেড়ে মর্ত্যে আসেন দেবী দুর্গা। নির্দিষ্ট তিথি পর্যন্ত বাবার বাড়িতে কাটিয়ে আবার ফিরে যান দেবালয়ের কৈলাসে স্বামীর বাড়িতে। দেবীর অবস্থানকালে এই পাঁচ দিন পৃথিবীতে ভক্তরা দেবীর বন্দনা করেন। বিজয়া দশমীতে পূজা উদযাপনের প্রধান আচারের অংশ হিসেবে এদিন নারীরা সিদুঁর খেলায় অংশ নেন। শহরের ম-প ও মন্দিরে দুর্গার পায়ে সিঁদুর নিবেদন করেন, যা ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলার অংশ। এই আচারটি দেবী দুর্গার শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। তারপর হিন্দু নারীরা একে অপরের গায়ে সিঁদুর মাখিয়ে জীবনে সমৃদ্ধি কামনা করেন। হাজারো মানুষ প্রতিমা বিসর্জন দেখতে জড়ো হয়েছেন বিভিন্ন নদীর ঘাটে। প্রতিমা বিসর্জনের সময় অনেক ভক্ত অশ্রুসিক্ত থাকেন। আবার অনেকেই ক্ষণটিকে সুন্দর করে কাটাতে নেচে-গেয়ে উদযাপন করেন। বিসর্জনের আয়োজন দুর্গা পূজার স্থায়ী সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য তুলে ধরে।
পতেঙ্গায় মানুষের ঢল
প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে দুপুর থেকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে বিপুলসংখ্যক মানুষের ঢল নামে। পতেঙ্গায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে চলে প্রতিমা বিসর্জন। এতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম। এবার চট্টগ্রামে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ছাড়াও পাথরঘাটার গঙ্গাবাড়ি এলাকায় কর্ণফুলীতে, কালুরঘাট, কাট্টলী রানী রাসমণি ঘাটেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। বিভিন্ন নদী এবং পুকুরেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জি বলেন, ‘এবার চট্টগ্রামে ২ হাজার ৪৫৮টি ম-পে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে মহানগরে ২৯৩টি এবং জেলার ১৫টি উপজেলায় পূজাম-প ছিল ২ হাজার ১৬৫টি। বেলা ১২টা থেকে পতেঙ্গা সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। খুবই সুশৃঙ্খলভাবে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসন সহায়তা করছে।’ গতকাল রোববার বিকালে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিময় সম্প্রীতির জনপদ। এখানে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মাচরণ পালনের অধিকার আছে। এ দেশে ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই। সবাই নিজ ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রকৃত ধার্মিক ও মানবিক মানুষের সুদৃঢ় ঐক্যে শান্তির বাংলাদেশ গড়তে হবে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এই সম্প্রীতি অক্ষুণœ রাখতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। বিগত বছরগুলোর মতো এবারও শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষে পূজাম-পে পরিচ্ছন্নতা, আলোকায়ন, পানীয়-জলের ব্যবস্থা এবং পূজার্থীদের নিরাপত্তাসহ পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিমা বিসর্জনের আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।’ চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জির সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিখিল চন্দ্র নাথের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন।