• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ
শ্রমিকদের জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে: স্পিকার ‘মাদক নিয়ে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স’ আইনগত সহায়তা দরিদ্র-অসহায় নাগরিকের অধিকার: আইনমন্ত্রী রোগীর প্রতি চিকিৎসকের অবহেলা সহ্য করা হবে না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী নৌকা-জাল মেরামতে ব্যস্ত, নদীতে নামার অপেক্ষায় জেলেরা বান্দরবানে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত হয়েছে সাংবাদিকবৃন্দদের সাথে মতবিনিময় উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুছ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কৃত্রিম বৃষ্টিতে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে ভিজলেন মেয়র আতিক বিএনপির ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই: কাদের

পণ্য সংখ্যা বাড়তে থাকলেও মান নিয়ন্ত্রণে সক্ষমতা বাড়ছে না বিএসটিআই’র

Reporter Name / ১২১ Time View
Update : বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বড় হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তালিকাও। একই সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর বাধ্যতামূলক পণ্যের তালিকায় যুক্ত করা হচ্ছে নতুন নতুন পণ্য। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত পণ্যের সংখ্যা ছিল ১৯৪টি। সর্বশেষ বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত করা হয়েছে আরও ৪৩ পণ্য। নতুন তালিকাভুক্তির পর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৩৭টি। এসব পণ্যের উৎপাদন, বাজারজাতকরণ বা বিক্রির ক্ষেত্রে তদারকির এখতিয়ার দেশের একমাত্র মাননিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। পণ্য বাড়লেও সক্ষমতা বাড়ছে না সংস্থাটির। এবছর খাবারের পাশাপাশি ঘরের কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী, বেশকিছু প্রসাধনী, কাপড়, জুতা, স্বর্ণ, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস এবং নির্মাণকাজে ব্যবহৃত পণ্যগুলোর জন্য বিএসটিআইয়ের মান সনদ নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বর্তমানে বাধ্যতামূলক তালিকায় রয়েছে মোট ২৩৯টি পণ্য। এর মধ্যে এবছর যুক্ত হয়েছে নতুন ৪৭টি পণ্য। এর আগে একসঙ্গে এতগুলো পণ্য কখনো বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক তালিকায় যুক্ত হয়নি। এসব পণ্য এখন বাজারজাতকরণে বাধ্যতামূলকভাবে বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স নিতে হয়। পাশাপাশি পণ্যগুলোর মান সার্ভিলেন্স করছে সংস্থাটি। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের একমাত্র মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিএসটিআইয়ের সক্ষমতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় আমাদের বাধ্যতামূলক পণ্যের তালিকা অনেক ছোট। বিশেষ করে সব ধরনের খাদ্যপণ্য বিএসটিআইর তদারকির আওতায় থাকা দরকার। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, এবছর একসঙ্গে এতগুলো পণ্য বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক তালিকায় যুক্ত করার বিষয়টিকে সাধুবাদ জানাই। সংস্থাটির সক্ষমতা আরও বাড়ানো দরকার। কারণ এটি দেশের একমাত্র মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। তিনি বলেন, নিত্য ব্যবহার্য পণ্যগুলোর মান নিয়ে মানুষ খুবই শঙ্কায় থাকে। সেগুলোর মান বিএসটিআইকে দেখতে হবে। এজন্য সারাদেশে বিএসটিআইয়ের কার্যক্রম জোরদার করা উচিত। এ বিষয়ে বিএসটিআইয়ের পরিচালক (প্রশাসন) তাহের জামিল বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলো স্ট্যান্ডার্ড ফর্মুলেশনের জন্য আমাদের ৭৬টি কমিটি রয়েছে। তারাই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পণ্য বাধ্যতামূলক করতে সুপারিশ করে। পাশাপাশি বিএসটিআই বাজারের পরিস্থিতি বুঝে বিভিন্ন নতুন পণ্য বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করে। এরপর বিএসটিআইয়ের গভর্নিং কাউন্সিল সেগুলো চূড়ান্ত করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আইন মন্ত্রণালয় সেসব বাধ্যতামূলক তালিকা নিশ্চিত করে। ফলে পণ্য বাধ্যতামূলক করার ক্ষেত্রে বিএসটিআই চাইলেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। একমাত্র মান সংস্থা হওয়ায় দেশের বাজারে উৎপাদন ও আমদানি করা সব পণ্যের উৎপাদন কার্যক্রম, বাজারজাতকরণ, মোড়কীকরণ এবং বিক্রয় কার্যক্রম নজরদারির দায়িত্ব বিএসটিআইয়ের। কিন্তু বিএসটিআই আইনে বাধ্যতামূলক পণ্যের বাইরে অন্য পণ্যগুলো তদারকির সম্পূর্ণ এখতিয়ার নেই প্রতিষ্ঠানটির। এদিকে এখতিয়ারভুক্ত পণ্যগুলোর সার্ভিলেন্স করছে বিএসটিআই। ২০২০-২১ অর্থবছরে এক হাজার ২৯৬টি সার্ভিলেন্স কার্যক্রম চালিয়েছে সংস্থাটি। এ কার্যক্রমে ২২৬টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করা হয়। এসব মামলায় সাজা হয়েছে ৪৩ জনের এবং ৫১টি কারখানা স্থায়ীভাবে সিলগালা করা হয়েছে গত এক বছরে। এদিকে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে বিএসটিআইয়ের যে সর্বশেষ সভায় তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয় সেই সভায় বলা হয়, গত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে সংস্থার মান সনদভুক্ত পণ্যের পরিধি বাড়লেও তা সক্ষমতা থেকে অনেক দূরে। কাউন্সিল সভায় বলা হয়, মান সনদ দেয়ার দাবি রাখে ভোক্তাপর্যায়ে ব্যবহৃত এমন চার হাজার পণ্য তালিকা রয়েছে বিএসটিআইয়ের হাতে। উৎপাদন ও বিপণন পর্যায়ে গুণগত মান নিশ্চিত না হওয়াসহ সংস্থাটির দুর্বলতার কারণে সেগুলো তালিকাভুক্তির আওতায় আনা যাচ্ছে না। ভোক্তাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় নতুন নতুন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যকে বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতায় আনা এবং আওতাবহির্ভূত পণ্যের অবাধ বিপণন বন্ধে সংস্থটিকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেন শিল্পমন্ত্রী। পাশাপাশি সভায় গুণগত শিল্পায়নের চলমান ধারা জোরদারে জেলা পর্যায়ে বিএসটিআইয়ের মান নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সম্প্রসারণের তাগিদ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ ল্যাবরেটরি সুবিধার প্রসার, প্রাতিষ্ঠানিক জনবল বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ সুবিধা জোরদার, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন, যাতায়াত ও প্রণোদনার সুযোগ বাড়ানো এবং হালাল খাদ্যের রপ্তানি বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় জেলা পর্যায়ে বিএসটিআইয়ের অফিস সম্প্রসারণে বিভাগীয় অফিসের পাশাপাশি আরও ১৩টি আঞ্চলিক অফিস স্থাপনের মাধ্যমে ৬৪টি জেলায় কার্যক্রম সম্প্রসারণের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৪৩টি জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত, ফ্যাক্টরি পরিদর্শন ও সার্ভিল্যান্স পরিচালনার সীমিত জনবলে অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ভোক্তাপর্যায়ে ব্যবহৃত পণ্য গুণগত মানসম্পন্ন করতে সবার আগে বিএসটিআইকে শক্তিশালী হওয়া দরকার। কারণ এ প্রতিষ্ঠানের গুণগত মানের সঙ্গে জনগণের জীবনের সুরক্ষাও জড়িত। তিনি বলেন, বিএসটিআই সক্ষম হলে তৃণমূল পর্যায়ে গুণগত শিল্পায়নের ধারা জোরদার হবে। পণ্যমানও ভালো হবে। তাতে দেশীয় পণ্যের বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা বাড়বে। এতে রপ্তানিও বাড়বে। সরকার সে লক্ষ্যেই বিএসটিআইয়ের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে। মান সনদের আওতায় পণ্যসংখা বাড়লে ক্রেতার প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। কারণ পণ্যের মান সম্পর্কে নিশ্চয়তা দেবে বিএসটিআই। শিল্পমন্ত্রী বলেন, শুধু মান সনদে পণ্য সংখ্যা বাড়ালেই হবে না। নিয়মিত তদারকিও করতে হবে। সঙ্গে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধেও বিএসটিআইকে সোচ্চার হতে হবে। তবেই ভোক্তারা সুরক্ষিত থাকবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category