কেপ ভার্দের ইতিহাস, ৫ লাখ জনসংখ্যার দেশ এখন বিশ্বকাপে

- আপডেট সময়ঃ ০২:৫৩:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
- / ৩৪ বার পড়া হয়েছে
আফ্রিকার ছোট দ্বীপরাষ্ট্র কেপ ভার্দে ফুটবল ইতিহাসে রচনা করল নতুন অধ্যায়। মাত্র ৫ লাখ ৫০ হাজার জনসংখ্যার দেশটি প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। সোমবার প্রাইয়ায় এসওয়াতিনিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করে তারা। এর মধ্য দিয়ে আইসল্যান্ডের পর বিশ্বকাপে ওঠা দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ হলো কেপ ভার্দে।
‘ব্লু শার্কস’ নামে পরিচিত দলটি ১০ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপের শীর্ষে থেকে বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে। এই সাফল্যে তারা পেছনে ফেলেছে আটবারের বিশ্বকাপ অংশগ্রহণকারী মহাদেশীয় পরাশক্তি ক্যামেরুনকে। দ্বিতীয়ার্ধে ডেইলন লিভ্রামেন্টো, উইলি সেমেডো ও স্টোপিরার গোল প্রাইয়া শহরকে পরিণত করে উৎসবের নগরীতে।
আটলান্টিক মহাসাগরে ১০টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত কেপ ভার্দের জনসংখ্যা ৫ লাখ ২০ হাজারের মতো।
যা ঢাকার জনসংখ্যার মাত্র ৫ দশমিক ১ শতাংশ! এ ছাড়া জনসংখ্যার হিসাবে আইসল্যান্ডের পরই বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়া দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ।
‘বুবিস্তা’ নামে পরিচিত কেপ ভার্দের কোচ পেদ্রো ব্রিতো বলেন, ‘এই আনন্দটা আমাদের সব মানুষের জন্য। এটি কেবল ফুটবলের জয় নয়— এটি স্বাধীনতার জন্য যারা লড়েছিলেন, তাদের জয়ও বটে।’
দেশটি এ বছরই স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে।
খেলার পর পুরো রাজধানী প্রাইয়ায় শুরু হয় উল্লাস। রাস্তায় রাস্তায় মানুষের ঢল, বাজির আলো, গাড়ির হর্ন আর স্থানীয় ফুনানা ও রেগে সংগীতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো শহর।
এই সাফল্য আরো অনন্য কারণ, টুর্নামেন্টের শুরুটা কেপ ভার্দের জন্য ছিল কঠিন। অ্যাঙ্গোলার সঙ্গে ড্র ও ক্যামেরুনের বিপক্ষে হারের পর টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে তারা। দলটির বড় অংশই ইউরোপে জন্ম নেওয়া ফুটবলারদের নিয়ে গঠিত, যাদের বাবা-মা বা দাদা-দাদি কেপ ভার্দের নাগরিক ছিলেন।
আবেগঘন কণ্ঠে দলনেতা রায়ান মেন্ডেস বলেন, ‘এই মুহূর্তটা বর্ণনা করার মতো শব্দ নেই।’ দলের ৩৯ বছর বয়সী অভিজ্ঞ গোলরক্ষক ভোজনিয়া বলেন, ‘শৈশব থেকে এই দিনের স্বপ্ন দেখেছি। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।’
ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফান্তিনো এই সাফল্যকে ‘অসাধারণ প্রেরণার উৎস’ বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘এটি কেপ ভার্দের নতুন প্রজন্মকে ফুটবলের প্রতি আরো অনুপ্রাণিত করবে।’
আলজেরিয়া, মিসর, মরক্কো, তিউনিসিয়া ও ঘানার সঙ্গে কেপ ভার্দে এখন আফ্রিকার ছয় প্রতিনিধির একজন হিসেবে ২০২৬ সালের যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো বিশ্বকাপে খেলবে।
১৯৭৫ সালে পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়া কেপ ভার্দে প্রথমবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অংশ নিয়েছিল ২০০২ সালে। এরপর ধীরে ধীরে তারা আফ্রিকার ফুটবলে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করে, ২০১৩ ও ২০২৩ আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছিল দলটি।