ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

জাতীয় নির্বাচনের দিনেই গণভোট: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময়ঃ ০৪:২৬:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
  • / ২৮ বার পড়া হয়েছে

সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই দেশের জনগণকে গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার বিষয়ে মত প্রকাশের সুযোগ দেওয়া হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, এই একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন করলে সময় ও খরচ দু’টোই সাশ্রয়ী হবে।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার পর তিনি দেশের নাগরিকদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিটিভি নিউজ ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড এ ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচার করে। তিনি বলেন, দেশের চলমান সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সবাই একমত, যদিও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু মতপার্থক্য থাকতে পারে।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, “গত ৯ মাস ধরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংবিধান সম্পর্কিত ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছে এবং একমত হয়েছে। এটি ভবিষ্যত রাজনীতির জন্য আশাব্যঞ্জক। আমরা কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাই।”

তিনি বিস্তারিত জানিয়ে বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বা সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়া অনুযায়ী চারটি বিষয় গণভোটের মাধ্যমে জনগণের অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গঠন, দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও কমিটির সভাপতির নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ অন্যান্য সংস্কার।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “গণভোটের দিন জনগণ এক প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে তাদের মতামত জানাবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘হ্যাঁ’ হলে নির্বাচিত প্রতিনিধি সংসদ সদস্য হিসেবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন করবেন। সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে, যার মেয়াদ হবে নিম্নকক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যেই বিচার, সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সাধারণ ফৌজদারি আদালতে চলছে। এছাড়া, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আর্থিক স্বচ্ছতা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, ডিজিটালাইজেশন সম্প্রসারণ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়িত হয়েছে।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, “আগামী নির্বাচনের আয়োজন উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে হবে। জনগণ যেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে, সে জন্য আমরা সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন দেশের সুশাসন এবং সংবিধান সংস্কারের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।”

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

জাতীয় নির্বাচনের দিনেই গণভোট: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময়ঃ ০৪:২৬:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই দেশের জনগণকে গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার বিষয়ে মত প্রকাশের সুযোগ দেওয়া হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, এই একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন করলে সময় ও খরচ দু’টোই সাশ্রয়ী হবে।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার পর তিনি দেশের নাগরিকদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিটিভি নিউজ ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড এ ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচার করে। তিনি বলেন, দেশের চলমান সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সবাই একমত, যদিও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু মতপার্থক্য থাকতে পারে।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, “গত ৯ মাস ধরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংবিধান সম্পর্কিত ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছে এবং একমত হয়েছে। এটি ভবিষ্যত রাজনীতির জন্য আশাব্যঞ্জক। আমরা কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাই।”

তিনি বিস্তারিত জানিয়ে বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বা সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়া অনুযায়ী চারটি বিষয় গণভোটের মাধ্যমে জনগণের অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গঠন, দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও কমিটির সভাপতির নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ অন্যান্য সংস্কার।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “গণভোটের দিন জনগণ এক প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে তাদের মতামত জানাবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘হ্যাঁ’ হলে নির্বাচিত প্রতিনিধি সংসদ সদস্য হিসেবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন করবেন। সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে, যার মেয়াদ হবে নিম্নকক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যেই বিচার, সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সাধারণ ফৌজদারি আদালতে চলছে। এছাড়া, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আর্থিক স্বচ্ছতা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, ডিজিটালাইজেশন সম্প্রসারণ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়িত হয়েছে।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, “আগামী নির্বাচনের আয়োজন উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে হবে। জনগণ যেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে, সে জন্য আমরা সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন দেশের সুশাসন এবং সংবিধান সংস্কারের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।”