আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার মামলার রায়ের খবর
- আপডেট সময়ঃ ০১:৩৫:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
- / ২৬ বার পড়া হয়েছে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা প্রথম মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ। খবরটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করছে।
‘ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার আগে বাংলাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে’ শিরোনামে বিবিসি লাইভ সম্প্রচার শুরু করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একটি ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণা করতে যাচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন। পদচ্যুত এই নেত্রীকে গত বছর ছাত্র নেতৃত্বাধীন ওই আন্দোলনের ওপর সহিংস দমন-পীড়নের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
আন্দোলনে জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছিল। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি বর্তমানে ভারতে নির্বাসনে রয়েছেন।
তার অনুপস্থিতিতেই অনুষ্ঠিত এ মামলায় প্রসিকিউশন মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করেছে। রায়কে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের আশঙ্কায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
আলজাজিরাও ‘ক্ষমতাচ্যুত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতের রায় আজ’ শিরোনামে লাইভ সম্প্রচার শুরু করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আজ ঘোষণা করবেন।
তিনি ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ দমনে সহিংস অভিযানের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত।
তাতে আরো বলা হয়, ৭৮ বছর বয়সী হাসিনাসহ আরো দুই কর্মকর্তাও এই মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন। গত বছর সরকারি চাকরিতে বিতর্কিত কোটাব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া ব্যাপক গণবিক্ষোভ দমন-পীড়নে ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে শেখ হাসিনাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সেই অভিযানে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনার টানা ১৫ বছরের শাসনের পতন ঘটে।
তার শাসনামলে বিরোধী মত দমন, বিচারবহির্ভূত আটক ও হত্যার মতো অভিযোগ বহুবার উঠেছিল। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি ভারতে নির্বাসনে চলে যান এবং এরপর তাকে জনসমক্ষে বা অনলাইনে আর দেখা যায়নি।
এদিকে শেখ হাসিনার এখন নিষিদ্ধঘোষিত দল আওয়ামী লীগ ঢাকার এই বিশেষ ট্রাইব্যুনালকে ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ বলে দাবি করেছে এবং সমর্থকদের রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছে—যা দেশে নতুন করে সহিংসতার শঙ্কা বাড়িয়েছে।
এদিকে বেশির ভাগ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করা হয়েছে হাসিনার সম্ভাব্য মৃত্যুদণ্ড নিয়ে। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দেখা যায়, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির শীর্ষ ৫টি খবরের ৪টিই হাসিনার রায় ঘিরেই। এদিকে দ্য হিন্দু সরাসরি আপডেট দিচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। হিন্দুস্তান টাইমসের শীর্ষ দুই খবরের একটিতে রাখা হয়েছে এই খবরকে। এবিপি লাইভের শীর্ষ সংবাদ হিসেবে রাখা হয়েছে এই ইস্যুকে। ওপার বাংলার গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রধান সংবাদ হিসেবে আছে এটি।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স ‘ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হাসিনার রায়ের আগে বাংলাদেশে টান টান উত্তেজনা’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার ঢাকায় কয়েকটি ককটেল বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এতে কেউ আহত না হলেও সোমবার ঘোষণার কথা থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায়কে সামনে রেখে রাজধানীতে উত্তেজনা আরো বেড়েছে।
গত কয়েক দিনের রাজনৈতিক অস্থিরতায় আগে থেকেই অশান্ত ঢাকায় এসব বিস্ফোরণ পরিস্থিতিকে আরো উদ্বেগজনক করে তুলেছে। ৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনার ( অনুপস্থিতি) বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচার চলছে।
আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে এ মামলার রায়ের জন্য ধার্য আছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন— বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। শেখ হাসিনার পাশাপাশি মামলায় অপর দুই আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।




















