• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১২:২২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
উপজেলা ভোটে দুর্গম এলাকা ছাড়া সব কেন্দ্রে ব্যালট যাবে সকালে থাইল্যান্ড সফর দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পক উন্নয়নে এক মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী মেহনতি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নই আ. লীগের মূল লক্ষ্য: কাদের সংসদ অধবিশেন চলবে ৯ মে র্পযন্ত মাদ্রাসার সভাপতি হতে স্বাক্ষর জালিয়াতি, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বান্দরবানে কেএনএফের আরো ১ নারী আটক: রিমান্ড ফেরত ১৪ জন আসামি কারাগারে অফিস সময়ে চিকিৎসকরা হাসপাতালের বাইরে গেলে ব্যবস্থা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ৪৬ কিলোমিটার বাড়ছে ঢাকা আউটার রিং রোডের দৈর্ঘ্য, ব্যয় বাড়ছে তিনগুণ বৃহস্পতিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে: শিক্ষামন্ত্রী জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির

বিদ্যুৎ খাতের বিপুল ঋণ ভর্তুকিতে রূপান্তর করতে চাইছে বিপিডিবি

Reporter Name / ১২১ Time View
Update : বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিদ্যুৎ খাতের বিপুল ঋণ ভতুর্কিতে রূপান্তরিত করতে চাইছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত ওই সংস্থাটি লোকসানের পরিমাণ সাড়ে ৫১ হাজার কোটি টাকারও বেশি। আর তার পুরোটাই সরকার বিপিডিবিকে সংস্থাটিকে ঋণ হিসেবে দিয়েছে। তার মধ্যে শুধুমাত্র ২০০৬-০৭ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যেই সরকার বিপিডিবিকে ৪৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ হিসেবে দিয়েছে। কিন্তু ওই বিপুল পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না বিপিডিবি। আবার ওই ঋণের কারণেই বিপিডিবি বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে ঋণকে ভর্তুকিতে রূপান্তরের জন্য কয়েক দফা অর্থ বিভাগে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। আর অর্থ বিভাগ বলছে ঋণের টাকা ভর্তুকিতে রূপান্তরের কোনো সুযোগ নেই। তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো বসে এ বিষয়ে সমাধান বের করতে পারে। বিপিডিবি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে বিপিডিবি কোনো বহুজাতিক কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে গেলেই বিপুল পরিমাণ ঋণের বিষয়টি বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জ্বালানি খাতের আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো ঋণগ্রস্ত বিবেচনায় বিপিডিবির সঙ্গে যে কোনো চুক্তির প্রস্তাব থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। তাতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বিপিডিবির অর্থনৈতিক অগ্রগতি। এমন অবস্থায় সংস্থাটি ঋণের অর্থকে ভর্তুকিতে রূপান্তরের কোনো বিকল্প দেখতে পাচ্ছে না।
সূত্র জানায়, বিগত ২০০৬-০৭ অর্থবছর থেকে ২০১৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে বিদ্যুৎ খাতে কোনো ভর্তুকি দেয়া হয়নি। ওই সময়ে বিদ্যুৎ ক্রয়-বিক্রয়ে প্রয়োজনীয় অর্থের ঘাটতি পূরণ ও উন্নয়ন ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকার বিপিডিবিকে ভর্তুকির পরিবর্তে ঋণ দিয়েছে। আর ওই ঋণের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজার ১৬০ কোটি ১২ লাখ টাকা। বর্তমানে বিপিডিবির সরকারের কাছে যে ঋণ রয়েছে তা পরিশোধ করার সক্ষমতা সংস্থাটির নেই। সেজন্য ওই ঋণকে ভর্তুকিতে রূপান্তরের জন্য অর্থ বিভাগকে কয়েকবার চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থ বিভাগ বিষয়টি তাদের নীতিমালায় নেই বলে জানিয়েছে। ওই কারণে দীর্ঘদিন ধরে ঋণের বিষয়টি ঝুলে আছে। তাছাড়া এবার বিপিডিবি বলেছে অর্থ বিভাগ থেকে যে টাকা দেয়া হবে তা যাতে ভর্তুকি হিসেবে দেয়া হয়।
সূত্র আরো জানায়, দেশের সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বিপিডিবি। সংস্থাটি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নির্ধারিত মূল্যে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিদ্যুৎ কেনে। আর ওই বিদ্যুৎ কম মূল্যেবিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে বিক্রি করা হয়। শুধুমাত্র ওই বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ সংস্থাটির ইফনিটপ্রতি ৩-৪ টাকা লোকসান হয়। আর সব মিলিয়ে বছর শেষে মোট লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮-১০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বর্তমানে অলস বসে থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতার চার্জ হিসেবে পরিশোধিত অর্থ বিপিডিবির আর্থিক অবস্থাকে নাজুক করে তুলছে। দেশে বর্তমানে ২৫ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। তার বাইরে ভারত থেকে ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। তবে ওই সক্ষমতার মাত্র ৩৯ শতাংশ বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে। ওই হিসাবে দেশে বিদ্যুতের দৈনিক সাড়ে ৯ থেকে ১০ হাজার মেগাওয়াটের মতো ব্যবহার হচ্ছে। বাকি সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই বিপিডিবির কাছ থেকে সক্ষমতা বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা ওই বিপুল পরিমাণ ব্যয়কে অপচয় হিসেবে দেখছে। আর বছরের পর বছর বিদ্যুৎ কেনাবেচায় বিপুল পরিমাণ লোকসানের পাশাপাশি ওই ব্যয় প্রতিষ্ঠানটিকে আর্থিকভাবে নাজুক অবস্থানে নিয়ে গেছে। ফলে সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এখন সরকারের ভর্তুকি ও ঋণের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আর ওই চাপ কমাতে গিয়েই সংস্থাটি আগের বছরগুলোর দেনাকে এখন ভর্তুকিতে রূপান্তর করতে চাচ্ছে।
এদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, বিপিডিবিকে বিপুল লোকসান থেকে রক্ষায় সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে বিপুল অংকের ওই ঋণ সরকার ভর্তুকি বা ইকুইটি হিসেবে দিতে পারে। ওই টাকা থেকে সরকার এখন কোনো কিছু আশা করতে পারবে না। কারণ বিদ্যুৎ খাত পরিচালনা করতে গিয়েই ওই অর্থ ব্যয় হয়েছে। একই সঙ্গে আগামীতে যাতে পিডিবি আর ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সরকারকে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি, বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা এবং আইপিপি খাতের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান জানান, বেশ কিছুদিন আগে বিপিডিবির ঋণ অনুদানে পরিণত করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে যে কোনো কারণে তা ঝুলে রয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনগণের সুবিধার্থে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে বিক্রি করা হয়েছে। ফলে বিশাল পরিমাণ ঋণ পিডিবির ওপর চাপ তৈরি করেছে। তা পরিশোধ করা সংস্থাটির পক্ষে সম্ভব নয়। সেজন্যই ঋণকে অনুদান বা ভর্তুকিতে রূপান্তরিত করতে হবে। সেজন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category