নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঝালকাঠিতে অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে তিন ডজন মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় লঞ্চ মালিক হামজালাল শেখকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব। আজ সোমবার সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান। র্যাব বলছে, লঞ্চে অগ্নিকা-ের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর এক আত্মীয়র বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন হামজালাল। ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে ঝালকাঠির গাবখানের কাছাকাছি সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার পর আগুনে পুড়ে যায় অভিযান-১০। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৮ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। আহত হয়ে ৮০ জনের বেশি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রাত ৩টার দিকে যখন চলন্ত লঞ্চে আগুনের সূত্রপাত হয়, যাত্রীদের বেশিরভাগই তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। না থামিয়ে ওই অবস্থায় চালিয়ে নেওয়া হয় অনেকটা পথ। একপর্যায়ে নদীর মধ্যে পুরো লঞ্চ দাউ দাউ করে জ¦লতে থাকে। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনটি মামলা হয়েছে। ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন শনিবার ঝালকাঠি সদর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। এরপর বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম নাসির রোববার ২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন বরগুনার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে। সেখানে লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখকেও আসামি করা হয়েছে। আর সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক শফিকুর রহমান বাদী হয়ে রোববার তৃতীয় মামলাটি দায়ের করেন মতিঝিলের নৌ আদালতে। সেখানে লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখসহ আটজনকে আসামি করা হয়। পরে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানা এলাকা অতিক্রম করার পর ইঞ্জিন রুম থেকে আগুযনের সূত্রপাত হয়। পরপরই আগুন নিয়ন্ত্রণের কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় পুরো নৌযানটি আগুনে পুড়ে যায়। সেখানে পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রও ছিল না। পর্যপ্ত বালির ব্রাক্স ও বালতি ছিল না। ইঞ্জিন রুমের বাইরে অননুমোদিত অনেকগুলো ডিজেল বোঝাই ড্রাম এবং রান্নার জন্য সিলিন্ডার গ্যাসের চুলা ছিল, যা নিয়মের পরিপন্থি। অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল আইনের ৫৬, ৬৬, ৬৯ ও ৭০ ধারায় করা এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ বছরের কারাদ- এবং ৫ লাখ টাকা অর্থদ- হতে পারে। অগ্নিকা-ের পর হামজালাল শেখ দাবি করেছিলেন, তার লঞ্চের ইঞ্জিনে কোনো সমস্যা ছিল না, অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রও ছিল। তবে ইঞ্জিন রুমের পাশে ব্যারেলে ভর্তি ছয় হাজার লিটার তেল থাকার কথা তিনি স্বীকার করেছেন। মুন্সীগঞ্জ সদরের আবুল ওহাব আলী শেখের ছেলে হামজালাল শেখ (৫২) থাকেন ঢাকার ওয়ারীতে। গত শতকের ৯০ এর দশকের শুরু থেকে তিনি লঞ্চ ব্যবসায় জড়িত। অভিযান-৩, ৫ ও ১০ লঞ্চে মালিকানা রয়েছে হামজালালের। এ ছাড়া পুরান ঢাকার ইসলামপুরে পারিবারিক কাপড়ের ব্যবসা এবং কয়েকটি দোকান রয়েছে। ২০০৪ সালের দিকে খেয়াঘাট নিয়ে বিরোধের জের ধরে কেরানীগঞ্জের তেলঘাট এলাকায় অভিযান-৩ ও রিয়াজ-৪ নামে দুটি লঞ্চে আগুন দেওয়া হয়েছিল। হামজালাল বিভিন্ন সময়ে লঞ্চ মালিক সমিতির পরিচালক ও নির্বাহী সদস্যের দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি এবং মালিকদের নিয়ে গঠিত স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য তিনি।
ঢাকা
০১:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
সর্বশেষঃ
অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হামজালাল গ্রেপ্তার
-
দৈনিক আইন বার্তা
- আপডেট সময়ঃ ০৭:৪৩:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১
- ৩৯১ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ