• শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না: আইনমন্ত্রী নাইজেরিয়ান চক্রের মাধ্যমে চট্টগ্রামে কোকেন পাচার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বললেন ব্যারিস্টার সুমন পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় নদী শাসনে ব্যয় বাড়ছে পিএসসির উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীরসহ ৬ জনের রিমান্ড শুনানি পিছিয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যবহার করছে না রেল ট্রানজিট রাজাকারের পক্ষে স্লোগান সরকারবিরোধী নয়, রাষ্ট্রবিরোধী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র-আলোকচিত্র প্রদর্শনী

অর্ধশতাধিক মানুষের টাকা-স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয়া ভন্ড কবিরাজ গ্রেপ্তার

Reporter Name / ১৩৬ Time View
Update : বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপনের প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও অর্থ আত্মসাতকারী ভ- কবিরাজ ওয়াস কুরুনীকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। কবিরাজ ওয়াস কুরুনীর কাছে- দাম্পত্য জীবনের সমস্যা, বিয়ে না হওয়া, প্রেমে ব্যর্থতা, এমনকি কাউকে বশ করার তাবিজ পাওয়া যেতো। প্রায় ৩ বছর ধরে এভাবে প্রতারণা করে অর্ধশতাধিক মানুষের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ও লাখ লাখ টাকা লুটে নিয়েছেন তিনি। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলিতে র‌্যাব-৩ কার‌্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, গতকাল বুধবার সকালে মুন্সিগঞ্জ থেকে এ প্রতারককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৩। এ সময় তার কাছ থেকে একটি পাগড়ী, দুটি গলার হার, ৫টি চেইন, দুই জোড়া কানের দুল, একটি টিকলি, ৫টি সাপ, ৪টি বিভিন্ন মন্ত্র লেখা কাগজ, একটি তাবিজের খোসা, দুটি বনাজি কাঠের লাঠি, দুটি হরিণের চামড়া, বিভিন্ন ধরনের বনাজি গাছ-গাছালি, ৪টি সিংগা, দুটি বড় কড়ি, ৫টি ছোট কড়ি, তিনটি হাড়ের টুকরা, একটি মরিয়ম ফুল এবং একটি মোবাইল জব্দ করা হয়। র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করেই তিনি এ প্রতারণা করতেন। তার ২০ থেকে ২২ জনের দল রয়েছে। এরাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট ছড়িয়ে দিতো এবং আগ্রহীদের প্রতারণার শিকার বানিয়ে তাদের কাছ থেকে কৌশলে মোটা অংকের টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিতেন। তিনি বলেন, বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভ- কবিরাজকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৩ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে র‌্যাব-৩ অধিনায়ক বলেন, তার কবিরাজ আলী আশরাফ, তান্ত্রিক কবিরাজ এবং হুমায়ুন আহমেদ নামে তিনটি ফেসবুক আ্যকাউন্ট রয়েছে। এ আ্যকাউন্টগুলোতে সে মানুষের দৈনন্দিন জীবন-যাপনের চিরাচরিত সমস্যা যেমন- উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েদের গোপন রোগের চিকিৎসা, দাম্পত্য জীবনের সমস্যা, বিয়ে না হওয়া, প্রেমে ব্যর্থতা, চাকরি না পাওয়া, জমি নিয়ে ঝামেলা, কাউকে বশ করার প্রবণতা, মামলায় জয়ী হওয়ার মন্ত্র, বিয়ের প্রস্তাব আসার তাবিজ, প্রেম সফল করার তাবিজ, বিয়ে বন্ধ করার তাবিজ, মানুষকে পাগল করার তাবিজ ইত্যাদি শিরোনামে বিভিন্ন লেখা পোস্ট করতেন। আগ্রহীদের প্রতারণার শিকার বানিয়ে তাদের কাছ থেকে কৌশলে মোটা অংকের টাকা এবং হাদিয়া হিসেবে স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিতো। এ ছাড়া অভিভাবক পরিচয়ে কবিরাজের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের বিভিন্ন গোপন সমস্যা নিয়ে কথা বলে এবং সে সমস্যা কবিরাজী চিকিৎসা ও তাবিজ গ্রহণের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের ব্যাপারে তাদের প্রলুব্ধ করেন। তাদের প্রলোভনে পড়ে ভুক্তভোগীদের জমানো টাকা, অলংকার এবং পারিবারিক যে কোনো মূল্যবান সম্পদের বিনিময়ে হলেও সমস্যা সমাধানের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, টার্গেট করা নারী ও পুরুষ ভুক্তভোগীদের সঙ্গে বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে চ্যাটিং ও ভয়েস কলে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তাদের সমস্যা সমাধানে আশ্বাস দেন। প্রাথমিকভাবে তিনি জিন চালানের মাধ্যমে ওষুধ দেওয়া এবং গায়েবি চিকিৎসা শুরু করার জন্য দুর্লভ কিছু উপাদান (যেমন- কচি কবুতরের রক্ত, ইদুরের মাংস, বানরের লোম, বাদুরের পা, গভীর রাতে শ্মশানঘাট থেকে মাটির কলসিতে পানি সংগ্রহ করাসহ দুষ্প্রাপ্য জিনিস) সংগ্রহ করতে বলতেন। তখন ভুক্তভোগীরা জানায়, এসব জিনিস তাদের পক্ষে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। তখন তিনি এসব জিনিস সংগ্রহ করার বদলে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। কেউ তার প্রতি অবিশ্বাস বা সন্দেহ প্রকাশ করলে দুষ্ট জিন দ্বারা নিয়মিতভাবে তাদের শারীরিক এবং মানসিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে হুমকি দিতেন। এভাবে ভ- কবিরাজ ভুক্তভোগীদের গায়েবি ভয়-ভীতি দেখিয়ে ধাপে ধাপে তাদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিতেন। এসব স্বর্ণালংকার ও অর্থ দিয়ে তিনি লৌহজং এলাকায় জমি কিনে বাড়ি তৈরি করেছেন। র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক আরও বলেন, গ্রেপ্তার ওয়াস কুরুনী মাদ্রাসা থেকে হেফজখানা পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। তিনি ১৫-১৬ বছর বয়স থেকে কবিরাজি পেশা শুরু করেন। প্রথমে যাত্রীবাহী বাসে তাবিজ বিক্রি ও বশিভূতকরণের বই বিক্রি করতেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে সহজ-সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করতেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category