০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | ই-পেপার

অসম আইনের বেড়াজালে দরিদ্র জনগোষ্ঠী: পরিকল্পনামন্ত্রী

  • দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:৫৭:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১৫৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী অসম আইনের বেড়াজালে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, দরিদ্র মানুষের জন্য নানা ধরনের আইনের মারপ্যাঁচ। একদিকে তারা দরিদ্র, অন্যদিকে আইনের নানা বেড়াজাল। অসম আইনের বেড়াজালে দরিদ্র জনগোষ্ঠী। তারা তাদের ন্যায্য পাওনা পায় না। নিজেদের অবস্থানেরও কোনো পরিবর্তন হয় না। আজ বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘স্ট্রেন্ডিং স্মল হোল্ডারস ফার্মস অ্যান্ড রুরাল এন্টারপ্রাইজ টু বেটার কপি উইথ ক্লাইমেট চেঞ্জ ইন দ্যা ভালনারেবল হাওর রিজন অব বাংলাদেশ প্রজেক্ট’ নিয়ে আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তবে বর্তমান সরকার এসব মানুষের জীবনে স্বস্তি আনতে কাজ করছে জানিয়ে কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, দরিদ্র মানুষের প্রাপ্যটা বুঝিয়ে দিলেই সমস্যা নিরসন সহজ হবে। এম এ মান্নান বলেন, প্রকৃতি আমাদের পানি, বায়ু ও মাটি দিয়েছে। কিন্তু এগুলো দরিদ্র মানুষ পায় না। ফলে নিজেদের অবস্থানেরও কোনো পরিবর্তন হয় না। দরিদ্রকে মোকাবিলা করাই আমাদের প্রথম এবং প্রধান সংগ্রাম। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সামনের কাতার থেকে কাজ করবে কৃষি। কৃষিকে এগিয়ে নিতে হবে। কৃষিতে একটু নজর দিতে হবে। সরকার কৃষি নিয়ে উদারভাবে কাজ করছে। কৃষিখাতে নানা ধরনের ভর্তুকি দিচ্ছে। শুধু সার ও বীজ নয়, কৃষি যান্ত্রিকীকরণেও ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, হাওর আমার এলাকা, হাওরে জন্ম। হাওরের পানি ও হিজল গাছের ছায়ায় বড় হয়েছি। বাঙালি জাতির আধুনিক সোপানের পথ কৃষি। এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা বলা হচ্ছে। তবে মৌলিক বিপ্লব কৃষির হাত ধরেই। মাছ ধরা, ধান চাষ করা সবই আমাদের সংস্কৃতি ও সংগ্রামের অংশ। অনেকে বলে হাওরের জীবন কষ্টের। আমি এ কথায় দ্বিমত পোষণ করি। কোনো জীবনই কষ্টের নয়। কষ্টের একমাত্র বিষয় হলো দরিদ্র। থাকা ও খাওয়ার নিশ্চয়তা পেলেই কষ্ট থাকার কথা নয়। হাওরের খলসা, পুঠি ও ট্যাংরা মাছ ধরে খাওয়ার আলাদা একটা মজা আছে। পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, আমার এলাকায় চার থেকে পাঁচটি বিল আছে। বিলগুলোর নাম আমার মুখস্ত। সরকার বিলগুলো ইজারা দিয়ে কিছু পয়সা আয় করে। ছোট বেলায় এসব বিলে পলো এবং জাল দিয়ে আমি মাছ ধরতাম। কিন্তু এখন কেউ মাছ ধরতে পারে না। বিলগুলো ভূমি মন্ত্রণালয় ইজারা দিয়ে দিলো। কেন ইজারা দিলো সেটা ঠিক জানি না। তবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুক্তি বিলগুলো ইজারা না দিলে একদিনেই সব মাছ খেয়ে ফেলবে। ইজারাদাররা নাকি উন্নয়ন করে। তিনি আরও বলেন, বিলে মাটিকাটা প্রকল্প কীভাবে তৈরি হয়, ব্যবহার করা হয় আমার জানা আছে। আষাঢ় মাসে সরকারি খরচে লাখ-কোটি মাছের পোনা ছাড়া হয়। সরকার এগুলো ছাড়ে জনগণের অর্থে। দু-তিন মাস পর সেই পোনাগুলো কার পেটে যায়? কীভাবে বিলুপ্তি হয়, তা আমরা জানি না। তবে কোনো মহাজনের পেটে যায়, মাছের পেছনে হেঁটে হেঁটে আমরা এগুলো বের করতে পারি। অথচ দরিদ্র মানুষ এসব মাছ খেতে পান না। এম এ মান্না বলেন, আমি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে কাজ করি। এখানে কৃষিপ্রকল্পে বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। কৃষির মাধ্যমে একটা সময় মানুষ দরিদ্র হয়েছে, এখন কৃষি দিয়ে দরিদ্র মোকাবিলা করবো। প্রধানমন্ত্রী সব সময় আমাদের সাপোর্ট দেন কৃষিপ্রকল্প গ্রহণের জন্য। প্রধানমন্ত্রী কৃষকবান্ধব। তিনি কৃষকের আপনজন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টারের পরিচালক ড. মো. বখতিয়ার হোসেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সমুদ্রসম্পদ আহরণের জন্য গবেষণার ওপর জোর দিতে হবে:চসিক মেয়র

অসম আইনের বেড়াজালে দরিদ্র জনগোষ্ঠী: পরিকল্পনামন্ত্রী

আপডেট সময়ঃ ০৬:৫৭:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী অসম আইনের বেড়াজালে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, দরিদ্র মানুষের জন্য নানা ধরনের আইনের মারপ্যাঁচ। একদিকে তারা দরিদ্র, অন্যদিকে আইনের নানা বেড়াজাল। অসম আইনের বেড়াজালে দরিদ্র জনগোষ্ঠী। তারা তাদের ন্যায্য পাওনা পায় না। নিজেদের অবস্থানেরও কোনো পরিবর্তন হয় না। আজ বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘স্ট্রেন্ডিং স্মল হোল্ডারস ফার্মস অ্যান্ড রুরাল এন্টারপ্রাইজ টু বেটার কপি উইথ ক্লাইমেট চেঞ্জ ইন দ্যা ভালনারেবল হাওর রিজন অব বাংলাদেশ প্রজেক্ট’ নিয়ে আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তবে বর্তমান সরকার এসব মানুষের জীবনে স্বস্তি আনতে কাজ করছে জানিয়ে কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, দরিদ্র মানুষের প্রাপ্যটা বুঝিয়ে দিলেই সমস্যা নিরসন সহজ হবে। এম এ মান্নান বলেন, প্রকৃতি আমাদের পানি, বায়ু ও মাটি দিয়েছে। কিন্তু এগুলো দরিদ্র মানুষ পায় না। ফলে নিজেদের অবস্থানেরও কোনো পরিবর্তন হয় না। দরিদ্রকে মোকাবিলা করাই আমাদের প্রথম এবং প্রধান সংগ্রাম। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সামনের কাতার থেকে কাজ করবে কৃষি। কৃষিকে এগিয়ে নিতে হবে। কৃষিতে একটু নজর দিতে হবে। সরকার কৃষি নিয়ে উদারভাবে কাজ করছে। কৃষিখাতে নানা ধরনের ভর্তুকি দিচ্ছে। শুধু সার ও বীজ নয়, কৃষি যান্ত্রিকীকরণেও ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, হাওর আমার এলাকা, হাওরে জন্ম। হাওরের পানি ও হিজল গাছের ছায়ায় বড় হয়েছি। বাঙালি জাতির আধুনিক সোপানের পথ কৃষি। এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা বলা হচ্ছে। তবে মৌলিক বিপ্লব কৃষির হাত ধরেই। মাছ ধরা, ধান চাষ করা সবই আমাদের সংস্কৃতি ও সংগ্রামের অংশ। অনেকে বলে হাওরের জীবন কষ্টের। আমি এ কথায় দ্বিমত পোষণ করি। কোনো জীবনই কষ্টের নয়। কষ্টের একমাত্র বিষয় হলো দরিদ্র। থাকা ও খাওয়ার নিশ্চয়তা পেলেই কষ্ট থাকার কথা নয়। হাওরের খলসা, পুঠি ও ট্যাংরা মাছ ধরে খাওয়ার আলাদা একটা মজা আছে। পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, আমার এলাকায় চার থেকে পাঁচটি বিল আছে। বিলগুলোর নাম আমার মুখস্ত। সরকার বিলগুলো ইজারা দিয়ে কিছু পয়সা আয় করে। ছোট বেলায় এসব বিলে পলো এবং জাল দিয়ে আমি মাছ ধরতাম। কিন্তু এখন কেউ মাছ ধরতে পারে না। বিলগুলো ভূমি মন্ত্রণালয় ইজারা দিয়ে দিলো। কেন ইজারা দিলো সেটা ঠিক জানি না। তবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুক্তি বিলগুলো ইজারা না দিলে একদিনেই সব মাছ খেয়ে ফেলবে। ইজারাদাররা নাকি উন্নয়ন করে। তিনি আরও বলেন, বিলে মাটিকাটা প্রকল্প কীভাবে তৈরি হয়, ব্যবহার করা হয় আমার জানা আছে। আষাঢ় মাসে সরকারি খরচে লাখ-কোটি মাছের পোনা ছাড়া হয়। সরকার এগুলো ছাড়ে জনগণের অর্থে। দু-তিন মাস পর সেই পোনাগুলো কার পেটে যায়? কীভাবে বিলুপ্তি হয়, তা আমরা জানি না। তবে কোনো মহাজনের পেটে যায়, মাছের পেছনে হেঁটে হেঁটে আমরা এগুলো বের করতে পারি। অথচ দরিদ্র মানুষ এসব মাছ খেতে পান না। এম এ মান্না বলেন, আমি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে কাজ করি। এখানে কৃষিপ্রকল্পে বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। কৃষির মাধ্যমে একটা সময় মানুষ দরিদ্র হয়েছে, এখন কৃষি দিয়ে দরিদ্র মোকাবিলা করবো। প্রধানমন্ত্রী সব সময় আমাদের সাপোর্ট দেন কৃষিপ্রকল্প গ্রহণের জন্য। প্রধানমন্ত্রী কৃষকবান্ধব। তিনি কৃষকের আপনজন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টারের পরিচালক ড. মো. বখতিয়ার হোসেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার।