মোঃ ইসমাইল হোসেন
অসাম্প্রদায়িক ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে যাচ্ছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আওতাধীন ছয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদ । ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপি করে ক্ষমতায় বসে বর্তমান চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদ । নোয়াখালী জন্মের ১০৯ বছরের ইতিহাসেও জেলার কোথাও কখনো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপরে হামলা,ভাংচুরের ঘটনা না ঘটলেও এবারের দূর্গাপূজায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আওতাধীন ছয়ানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদের হামলার মাধ্যমে সেই ইতিহাস টিও ভেঁঙ্গে যায়।
ইতিমধ্যে পুরো ইউনিয়নের সমস্ত সাধারণ জনগণ এক হয়ে চলমান মেয়াদে দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম,চাঁদাবাজি,টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর থেকে টেন্ডার ক্রয় করে পরবর্তীতে বেশি টাকার বিনিময়ে সেই টেন্ডার অন্যত্র বিক্রি সহ ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে যাওয়া সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে টাকা দাবী,এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট ও চেয়ারম্যানের পালিত সন্ত্রাসী দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার মতো নানান অভিযোগ করে চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদের বিরুদ্ধে ।
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উঠে আসা অভিযোগ গুলো নিয়ে সরেজমিনে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়,বর্তমান মেয়াদে দায়িত্বে থাকা ছয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদের ক্ষমতাকালে এলাকায় উন্নয়নের বিন্দু পরিমাণ ছোঁয়াও লাগেনি । যেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাকালে বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জের এমন কোন জায়গা বাকী নেই,যেখানে সরকারের উন্নয়ন হয়নি । কিন্তু নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আওতাধীন ছয়ানী ইউনিয়ন যেনো সরকারের সেই উন্নয়নের বাইরেই থেকে গেছে ।
ছয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদের ক্ষমতাকালে এলাকায় নতুন কোন রাস্তা ঘাট হয়নি,হয়নি কোন ব্রিজ-কালভার্ট । ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে যাওয়া ইউনিয়নের সাধারণ মানুষকে পোহাতে হয় অসহ্য যন্ত্রণা ও হতে হয় হয়রানির শিকার । ইউনিয়ন পরিষদে টাকা ছাড়া একপা ও নড়ে না কোন ফাইল । টাকা না দিলে দিনের পর দিন কাজ না করেই ফেলে রাখে সাধারণ জনগণের কাগজ পত্র ।
ইতিমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদের ছত্র-ছায়ায় পুরো ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে অসংখ্য কিশোর গ্যাং,জনে জনে গ্রুপিং ও খোলা মেলা মাদক দ্রব্য কেনা-বেচা । মাদক কারবারিরা প্রতিমাসে মাসে তাদের বিক্রি করা মাদক দ্রব্য থেকে একটা অংশ সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হয় চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদের পকেটে । বিনিময়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করে এই চেয়ারম্যান । হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজার কিছুদিন আগে থেকে ছয়ানী ইউনিয়নে বসবাসরত হিন্দুদের উপর বারে বারে চেয়ারম্যানের নিয়ন্ত্রিত সন্ত্রাসী বাহিনীরা চেয়ারম্যানের নির্দেশে ছয়ানী বাজারে ১৮২২ সালে অবস্থিত ছয়ানী সার্বজনীন শ্রী শ্রী হরি মন্দির সেবাশ্রম (কালী মন্দির) এ হামলা,ভাংচুর ও লুটপাট চালায় । চেয়ারম্যানের এমন নিকৃষ্ট কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলেই স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর রাতের আধারে নেমে আসতো চেয়ারম্যানের অমানবিক,বর্বর নির্যাতনের ভয়ংকর তান্ডব লীলা । ছয়ানী বাজারের উপরে কালী মন্দিরের পাশে শত বছরের পুরাতন বট গাছটিও রাতের আধারে কেটে ফেলেছে চেয়ারম্যানের পৃষ্ঠ-পোষকরা । এদিকে বারে বারে ছয়ানী কালী মন্দিরে হামলার দায় এড়াতে হিন্দুদের সেই ছয়ানী বাজারের হরি-মন্দিরের চাবি চেয়ারম্যানের নিকট জমা থাকা সত্ত্বেও সু-পরিকল্পিত ভাবে চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদের সহযোগী সন্ত্রাসীরা রাতের আধারে সেই কালীগাছ/বট গাছটি কেটে ফেলার পরে সেই গাছ ও মন্দিরের জায়গায় দোকান করে দিবে বলে স্থানীয় বাতেন নামের এক হুজুরের কাছ থেকে তিন (৩,০০,০০০) লক্ষ টাকা সু-কৌশলে হাতিয়ে নেয় চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদ ও তার একাšল্প দুই সহযোগী হারুন এবং আর্জু । চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদ একই জায়গায়,যেনো মুসলমান সম্প্রদায়ের কোন লোক উক্ত খালি জায়গা দখল করতে না আসে এবং উক্ত কালী মন্দিরের আশেপাশের জায়গা গুলো যেসব মুসলিমরা জোর পূর্বক দখল করে রেখেছে,তাদের থেকে সেই জায়গা হিন্দুদের দখল করে দিবে বলেও টাকা নেয় চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদ ও তার সহযোগিরা । চেয়ারম্যানের এসব কু-পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে পেরে স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কোর্টে মামলা দায়ের করলে চেয়ারম্যানের পরবর্তী অবৈধ পরিকল্পনা গুলো ভেস্তে যায় ।
রীতিমতো নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আওতাধীন ছয়ানী ইউনিয়নের সকল মুসলিম-হিন্দু,খেটে-খাওয়া সাধারণ জনগণ চেয়ারম্যানের প্রজায় পরিণত হয়েছে । ছয়ানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন রশিদের এমন নিকৃষ্ট,জঘন্য ও অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতন ও অনিয়ম,দূর্নীতি থেকে রক্ষা চায় এলাকার সর্বস্থরের জনগণ ।