নিজস্ব প্রতিবেদক :
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, কোথায় যুদ্ধ করেছেন, কোন রাষ্ট্র জয় করেছে জানি না। আইয়ুব খান নিজেকে ফিল্ড মার্শাল উপাধি দিয়েছিলেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যাদের অপবাদ দিয়েছে তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীদের। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দাবি করতো, তারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সেনাবাহিনী। তারা (পাকিস্তানি সেনারা) আমাদের কাছে, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে মাথা নত করে, হাঁটু গেড়ে আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়েছিল। সেদিন কিছু সংখ্যক স্বাধীনতাবিরোধী ছাড়া সবাই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার স্বপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভবনে ‘ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ও সেবা সপ্তাহ ২০২২ উদযাপন’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে, সকাল ১১টায় স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে একটি র্যালি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে শুরু হয়ে সচিবালয়, ওসমানী উদ্যানের সামনে দিয়ে ঘুরে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, পাকিস্তানিরা বাঙালিদের সেনাবাহিনীতে নিতো না। তৎকালীন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতে মাত্র সাত শতাংশ বাঙালি ছিল। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতে বাকি ৯৩ শতাংশ ছিল ওরা। আইয়ুব খান অহংকার করে একটি কথা বলেছিলেন ফ্রেন্ডস নট মাস্টার বইতে ‘তারা (বাঙালিরা) যোদ্ধা নয়। যুদ্ধ করতে জানতো না, ভীরু, কাপুরুষ। এজন্য তাদের সেনাবাহিনীতে নেওয়া হয় না। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমস্যা যেমন বুঝতেন, তেমনি সমাধানও জানতেন। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের দেশের সম্পদ দিয়েছিলেন তা আমরা সদ্ব্যবহার করতে পারি। সেটা আমাদের ব্যর্থতা পরবর্তীতে আমরা যারা ছিলাম। সে সম্পদ রক্ষা করতে পারিনি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয় অর্জন করেছি। ১৬ ডিসেম্বর আমরা পাকিস্তানকে পরাজিত করে বিজয়ী, উল্লসিত ও আনন্দিত হয়েছি। কিন্তু সেই আনন্দে পরিপূর্ণ ছিল না। কারণ যিনি যুদ্ধের মহানায়ক, তিনি আমাদের মাঝে ছিলেন না। আমরা জানতাম না তিনি বেঁচে আছেন না মারা গেছেন। কি অবস্থায় আছেন। তাও আমাদের জানা ছিল না। ১০ জনুয়ারি বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে ফেরত আসার মাধ্যমে আমাদের বিজয় পূর্ণতা লাভ করে। আমরা পরিপূর্ণভাবে আনন্দিত উল্লসিত হই। ১০ জানুয়ারি বাঙালি জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দিন। সেই দিনে আজকে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।