• সোমবার, ২২ জুলাই ২০২৪, ০৮:১৪ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না: আইনমন্ত্রী নাইজেরিয়ান চক্রের মাধ্যমে চট্টগ্রামে কোকেন পাচার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বললেন ব্যারিস্টার সুমন পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় নদী শাসনে ব্যয় বাড়ছে পিএসসির উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীরসহ ৬ জনের রিমান্ড শুনানি পিছিয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যবহার করছে না রেল ট্রানজিট রাজাকারের পক্ষে স্লোগান সরকারবিরোধী নয়, রাষ্ট্রবিরোধী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র-আলোকচিত্র প্রদর্শনী

আগামী অর্থবছরে নিত্যপণ্যে ভর্তুকি বাড়াচ্ছে সরকার

Reporter Name / ১১৪ Time View
Update : সোমবার, ৩০ মে, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
জীবন ধারণের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হু হু করে বৃদ্ধিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। বিদ্যমান বৈশ্বিক সঙ্কটে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। মূলত আমদানি নির্ভর পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণেই দেশে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার আগামী (২০২২-২৩) মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেই বেশি গুরুত্ব দিতে যাচ্ছে। সেজন্য নতুন কৌশল নেয়া হচ্ছে। অর্থ বিভাগ খাদ্যপণ্য, সার, জ¦ালানি তেলসহ অন্যান্য পণ্যে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের রুটম্যাপ তৈরি করছে। সেজন্য আগামীতে ভর্তুকি ও প্রণোদনায় বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে ৮৩ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা বেশি। অর্থ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অর্থ বিভাগ ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাড়ানোর একটি কাঠামো দাঁড় করেছে। তাতে চলতি (২০২১-২২) অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে খাদ্যে ভর্তুকি ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু আগামী বাজেটের ক্ষেত্রে ১ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৬ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কৃষিতে চলতি সংশোধিত বাজেটে প্রণোদনা (কৃষকের সারের জন্য) সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। আগামী বাজেটে আড়াই হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ১২ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। বিদ্যুতে ভর্তুকি আগামী বাজেটে ১৮ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরে রয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। অন্যান্য খাতে ভর্তুকি চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরে ২ হাজার ৩শ কোটি টাকা বাড়ানো হচ্ছে। ফলে ভর্তুকি খাতে নতুন বাজেটে বরাদ্দ থাকছে ১৭ হাজার ৩শ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, কৃষককে ৩২ টাকা মূল্যে সার সরবরাহ অব্যাহত রাখলে উৎপাদিত পণ্যের দাম খুব বেশি বাড়বে না। কারণ বর্তমান বিশ্ববাজারে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের মূল্য ৯৬ টাকা উঠেছে। সেজন্য কৃষকের সারের ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। গরিব মানুষকে কম দামে ওএমএসসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে খাদ্য সরবরাহ করা হবে। যাতে বাজার থেকে বেশি দামে কিনে খেতে না হয়। সেজন্য খাদ্য খাতেও ভর্তুকির পরিমাণ বাড়বে। বিশ্ববাজারে এলএনজি গ্যাসের মূল্য বেড়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এ গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে। ফলে বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয়ও। বিদ্যুতেও বড় ধরনের ভর্তুকি গুনতে হবে। তবে সবচেয়ে বেশি মূল্য বেড়েছে জ¦ালানি তেলে। নভেম্বরে জ¦ালানি তেলের মূল্য এক দফা সমন্বয় করার পর নতুন করে আর দাম বাড়ানো হচ্ছে না। কিন্তু বিশ্ববাজার থেকে বেশি মূল্যে কিনতে হচ্ছে জ¦ালানি তেল। এ খাতেও ভর্তুকি দিয়ে নির্ধারিত মূল্যেই জ¦ালানি তেল বিক্রি করবে সরকার। কারণ এ মুহূর্তে তা করা না হলে মূল্যস্ফীতি আরো এক দফা বাড়বে।
সূত্র মতে, মূল্যস্ফীতির কারণে বড় ধরনের সমস্যা পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। মানুষের নিত্যপণ্য ভোজ্যতেল ও পামতেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য বেড়েছে ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ এবং সয়াবিন বেড়েছে ২০ শতাংশ। তার প্রভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে আরো বেশি বেড়েছে। আর গমের দাম বেড়েছে ৪২ দশমিক ৭ শতাংশ। গমের একটি বড় অংশ ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে আসছে। যুদ্ধের কারণে ওসব পণ্যের দাম বেড়েছে। তাছাড়া প্রায় দ্বিগুণের মতো বেড়েছে জ¦ালানি তেলের মূল্য। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ যতো দীর্ঘায়িত হবে, ততোই বাড়বে মূল্যস্ফীতির ভোগান্তি। ওই যুদ্ধের কারণে গ্যাস থেকে গম ও তুলা পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্যে দাম অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।
এদিকে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রধান চ্যালেঞ্জ। সেজন্য ভর্তুকি ব্যয় বাড়ানো হবে। তা না হলে মূল্যস্ফীতির হার আরো বেড়ে যাবে। আমদানিকৃত পণ্যের কারণে দেশে বর্তমান মূল্যস্ফীতি ঘটছে। বৈশ্বিক যে অনিশ্চয়তা ও বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়ছে। বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমন পরিস্থিতিতে অর্থ বিভাগ আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। নতুন কৌশল মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে। যদিও বিশ্ববাজারের প্রভাবে দেশের মূল্যস্ফীতির হার বর্তমান ৬ দশমিক ২২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৪ শতাংশ ধরা হলে সংশোধিত বাজেটে এ হার বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও মূল্যস্ফীতির হার ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category