নিজস্ব প্রতিবেদক :
নিরাপত্তা বাহিনী গুমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশে কেউ গুম হয় না। কেউ কেউ নানা কারণে আত্মগোপন করে, পরে আবার ফিরে আসে। আজ শনিবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে রাজধানী উচ্চবিদ্যালয়ে সরস্বতী পূজায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা সব সময় বলি, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কোনো গুমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না। যেখানেই গুম হচ্ছে, সেখানেই আমরা কিছু দিন পরেই তাকে পাচ্ছি। নানা কারণে আত্মগোপন করে থাকে, সেগুলোকে গুম বলে চালিয়ে দেয়। দু-একটি আত্মগোপনের ঘটনার তথ্য আমরা এখনো পাইনি। আমরা মনে করি, তাদের অচিরেই আমরা সামনে এনে দিতে পারবো। লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে সংসদে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কোন কোন লবিস্ট কার দ্বারা নিযুক্ত হয়েছেন। কত টাকা দিয়েছেন। সবগুলো কিন্তু তিনি সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এরপর বোধ হয় আমাদের আর কিছু বলার থাকে না। আমরা যেটা করছি, এই লবিস্ট নিয়োগে কীভাবে এখান থেকে টাকা পাঠালো সেটা আমরা খুঁজে বের করছি। আমরা মনে করি, যারা টাকা পাঠিয়েছেন তারাও এই ষড়যন্ত্রের অংশীদার এবং শিগগির তাদেরও আমরা সামনে আনবো। বান্দরবানের রুমায় সন্ত্রাসীর গুলিতে এক সেনাসদস্য নিহত হওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাহাড়ে কিছু সমস্যা আছে, সেনাবাহিনী কাজ করছে। এখানে অনেক ধরনের ষড়যন্ত্র কাজ করে। শান্তিচুক্তি অনুযায়ী সেনাবাহিনীর পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। এ ছাড়া র্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কিছু ভুল তথ্যের জন্য এমনটি হয়েছে। লবিস্ট নিয়োগের নামে কারা কীভাবে বিদেশে টাকা পাঠিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিগগির তাদের সামনে আনা হবে। যারা টাকা পাঠিয়েছে তাদের খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
গ্রন্থাগার যত সমৃদ্ধ হবে দেশ তত এগিয়ে যাবে: এদিকে গতকাল শনিবার সকালে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস-২০২২ উপলক্ষে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, গ্রন্থাগার যত সমৃদ্ধ হবে দেশ তত এগিয়ে যাবে। মন্ত্রী বলেন, গ্রন্থাগার হলো জ্ঞানের ভা-ার। যা জ্ঞান অর্জন, গবেষণা, চেতনা, মূল্যবোধের বিকাশ, চর্চাÑইত্যাদির মাধ্যমে মানুষকে আলোকিত করে। এটি নিশ্চিত করার জন্য মানুষের মাঝে পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে চাই পাঠ উপকরণ, যার অন্যতম হলো বই। মানসম্মত বই পড়া ও মানুষের মনোজগতের চাহিদা মেটাতে চাই গ্রন্থাগার। গ্রন্থাগার যত সমৃদ্ধ হবে দেশ তত এগিয়ে যাবে। গ্রন্থাগার যত সমৃদ্ধ হবে, দেশ তত আলোকিত হবে। নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশ যে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে তার সহায়ক হতে হবে। না হলে আমরা পথ হারিয়ে ফেলব। সেজন্য গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এসময় তিনি নতুন প্রজন্মকে বই পড়তে আগ্রহী করার পাশাপাশি সংস্কৃতির অন্য সকল দিকগুলো চর্চার উদ্যোগও গ্রহণ করতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, আমরা আধুনিক গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি। দশ বছর পর গ্রন্থাগারের এই চেহারা আর থাকবে না। প্রায় ৫ শত ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আধুনিক গ্রন্থাগার নির্মাণ করা হবে বলে তিনি জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ পাঠকদের যেন কষ্ট না হয় সে জন্য খুব কাছাকাছি জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি বলেন, সকল সভ্যতার মূলে আছে বই। সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্যবোধ থেকে বইয়ের সৃষ্টি। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, অসহিষ্ণুতা রোধ করতে বইয়ের একটি ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী বলেন, গ্রন্থাগার মানেÑযেখানে অনেক বইয়ের সমাহার রয়েছে, আর একটি মহান গ্রন্থাগার হচ্ছে যেখানে পাঠক সম্প্রদায় সৃষ্টি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গেলে আমরা দেখতে পাই তারা গ্রন্থাগারে জায়গায় পাচ্ছে না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য তারা সেখানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার পড়া পড়ছে। তাদেরকে আমি দোষারোপ করছি না, তাদের প্রস্তুতিরও দরকার আছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের তাদের পাঠ্যবই পড়ার সুন্দর পরিবেশ তৈরি করেছে, কিন্তু সেখানে এসএসসি, এইচএসসির বই পড়ার জন্য জায়গা দখল হয়ে থাকবেÑএটি কোনোভাবে কাম্য নয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর।