নিজস্ব প্রতিবেদক :
ই-কমার্স খাত নিয়ন্ত্রণে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওই লক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কমিটি ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় ই-কমার্স খাত পরিচালনা-সংক্রান্ত সুপারিশ নির্ধারণ করে একটি প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দিয়েছে। তাতে প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন গ্রহণের প্রক্রিয়া, লাইসেন্স প্রাপ্তির পদ্ধতি ও যোগ্যতা, সব কোম্পানিকে একই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা, আর্থিক লেনদেনের পদ্ধতি, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও আয়করের আওতায় কিভাবে আনা যায় ওসব বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। তাছাড়া কমিটি সুপারিশে ‘ডিজিটাল কমার্স ম্যানেজমেন্ট সেল’ করার ওপর সর্বোচ্চ জোর দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে শিগগিরই জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরের অধীনে ওই সেল গঠন করা হবে। ওই সেল সারাদেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করবে। ওসব দিক বিবেচনায় নিয়ে দক্ষ লোকবল নিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে গ্রাহক হয়রানি নিয়ন্ত্রণ ও ই-কমার্স খাতকে আইনি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর ই-কমার্স খাতের নিবন্ধনসহ যাবতীয় সেবা নিশ্চিত করবে। সেজন্য করা হবে ডিজিটাল কমার্স ম্যানেজমেন্ট সেল। এতোদিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) সেলের মাধ্যমে ই-কমার্স খাত মনিটরিং করা হতো। সম্প্রতি ই-কমার্স নিয়ে কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় ওই সংক্রান্ত গঠিত দুটি কমিটি এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (আইআইটি) বিভাগের অধীনে কাজ করছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জন্য করা সুপারিশ ও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ই-কমার্স খাত সঠিকভাবে পরিচালনা ও দেখভালের জন্য পৃথক সেল করা অপরিহার্য হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ওই খাতের নিবন্ধন এবং ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় ডিজিটাল কমার্স ম্যানেজমেন্ট সেল হওয়া উচিত। যারা ই-কমার্স খাতের নিবন্ধনসহ ভোক্তার অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারবে। ওই সংক্রান্ত গঠিত দুটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পরবর্তী নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করছে। কমিটি আশা করছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দেয়া হবে।
সূত্র জানায়, দেশের ই-কমার্স খাত পরিচালনা-সংক্রান্ত বিষয়ে আগামী মন্ত্রিসভা বৈঠকে একটি ঘোষণা দেয়া হতে পারে। ওই লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে কমিটির উত্থাপিত প্রতিবেদন গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তার আগের বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে নিবন্ধনের বাইরে কেউ ই-কমার্স ব্যবসা করার কোন সুযোগ নেই। ওই কারণে ই-কমার্স খাত পরিচালনা-সংক্রান্ত সুপারিশ পাওয়ার পর পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ই-কমার্স খাত-সংক্রান্ত গঠিত কমিটির প্রধান এএইচএম সফিকুজ্জামান জানান, ই-কমার্স খাতের জন্য পৃথক ডিজিটাল কমার্স ম্যানেজমেন্ট সেল করার জন্য বলা হয়েছে। আশাবাদী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পর্যবেক্ষণে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হবে। ভোক্তা সংরক্ষণের অফিস দেশের সব জেলায় রয়েছে। এখন আবার কার্যক্রম বাড়ায় উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও ভোক্তার কার্যালয় করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। অধিদফতরটি শিগগিরই উপজেলায় কাজ শুরু করবে। ওই কারণে কমিটি ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরের অধীনে ডিজিটাল কমার্স ম্যানেজমেন্ট সেল করার করার সুপারিশ করেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পরবর্তী নির্দেশনা নিয়ে ই-কমার্স উন্নয়নে কাজ করা হবে।