• শনিবার, ২০ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩৮ অপরাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না: আইনমন্ত্রী নাইজেরিয়ান চক্রের মাধ্যমে চট্টগ্রামে কোকেন পাচার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বললেন ব্যারিস্টার সুমন পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় নদী শাসনে ব্যয় বাড়ছে পিএসসির উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীরসহ ৬ জনের রিমান্ড শুনানি পিছিয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যবহার করছে না রেল ট্রানজিট রাজাকারের পক্ষে স্লোগান সরকারবিরোধী নয়, রাষ্ট্রবিরোধী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র-আলোকচিত্র প্রদর্শনী

উগ্রপন্থিদের রোষানলের বলি হুমায়ুন আজাদ: আদালতের পর্যবেক্ষণ

Reporter Name / ১৩২ Time View
Update : বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ভাষা বিজ্ঞানী, সমালোচক, কিশোর সাহিত্যিক, গবেষক এবং অধ্যাপক। সমাজের প্রচলিত রীতিনীতির বাইরে গিয়ে সাহিত্য রচনার কারণে কতিপয় ধর্মান্ধ, উগ্রপন্থি লোকদের রোষানলের বলি হতে হয় তাকে। ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে এসব কথা বলেন বিচারক। এ মামলায় জেএমবির চার সদস্যের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আল-মামুন এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ড. হুমায়ুন আজাদ সুনামের সঙ্গে অধ্যাপনা করেছেন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সাধ্যের সবটুকু দিয়ে অকাতরে জ্ঞান বিতরণ করেছন ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে। জীবদ্দশায় নানাবিধ প্রতিকূলতার পাশ কাটিয়ে প্রচলিত রীতিনীতির বাইরে গিয়ে রচনা করেছেন অংখ্য গ্রন্থ, যা বাংলা সাহিত্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছ বহুগুণে। তার রচিত বিভিন্ন গ্রন্থের সাহিত্যগুণ বিবেচনায় আরোহন করেছিলেন সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে। জায়গা করে নিয়েছিলেন সাহিত্য প্রেমীদের মনের মনিকোঠায়। তবে সমাজের প্রচলিত রীতিনীতির বাইরে গিয়ে সাহিত্য রচনার কারণে কতিপয় ধর্মান্ধ, উগ্রপন্থি লোকদের রোষানলের বলি হতে হয় তাকে। বিচারক আরও বলেন, ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে বের হয়ে বাসায় ফেরার পথে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে আসামি মিজানুর রহমান, আনোয়ারুল আলম, সালেহীন ও নূর মোহাম্মদ রাতের অন্ধকারে চাপাতি, বোমাসহ ড. হুমায়ুন আজাদের ওপর আক্রমণ করেন। তার ওপর জেএমবির সদস্যদের এ আক্রমণ ও পরে মৃত্যুর ঘটনায় বহির্বিশ্বে শাস্তিপ্রিয় ও ধর্ম নিরপেক্ষ দেশের সুনাম বহুলাংশে ক্ষণ করেছে। মামলার আসামিরা জেএমবির সক্রিয় সদস্য হিসেবে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেন, যা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আল-মামুন জেএমবির চার সদস্যের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জেএমবির শুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগিনা শহিদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। গত ২৭ মার্চ ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আল-মামুন রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন। ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন হুমায়ুন আজাদ। তাকে চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ঘটনার পরদিন তার ভাই মঞ্জুর কবির রাজধানীর রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। ওই হামলার পর ২২ দিন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এবং ৪৮ দিন থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন হুমায়ুন আজাদ। পরে জার্মানির মিউনিখে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ১২ আগস্ট মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়। ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে হত্যা এবং বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার আসামিরা হলেন- জেএমবির শুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগিনা শহিদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন, হাফিজ মাহমুদ ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। আসামিদের মধ্যে মিনহাজ ও আনোয়ার কারাগারে। সালাহউদ্দিন ও নূর মোহাম্মদ পলাতক। এ ছাড়া হাফিজ মারা গেছেন। এ মামলায় জেএমবির শুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক ও আনোয়ার আলম ওরফে ভাগিনা শহিদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হত্যা মামলায় ৫৮ সাক্ষীর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৪১ জন সাক্ষ্য দেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category