স্পোর্টস ডেস্ক :
অপেক্ষা দীর্ঘ হচ্ছিল। হতাশাও বাড়ছিল। তবে অবশেষে যখন ব্রাজিল জাতীয় দলে অভিষেকের সুযোগ এলো, সেটি দুহাতেই গ্রহণ করলেন। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচে আক্রমণে নেতৃত্ব দিলেন তিনি। উচ্ছ্বসিত ফরোয়ার্ড রাফিনিয়া জানালেন, ঐতিহ্যবাহী জার্সিটি গায়ে চাপানোর উপলক্ষটা রাঙানোর জন্য তার অপেক্ষা স্বার্থক হয়েছে। লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ভেনেজুয়েলাকে ৩-১ গোলে হারায় ব্রাজিল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বদলি নেমে দুটি গোলে অবদান রাখেন রাফিনিয়া। লিডস ইউনাইটেডে খেলা ২৪ বছর বয়সী এই ফুটবলার প্রথম জাতীয় দলে ডাক পান গত মাসে। কিন্তু যুক্ত্যরাজ্য সরকারের কোভিড-১৯ ঝুঁকিতে লাল তালিকায় থাকা দেশগুলোতে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো খেলোয়াড়দের ছাড়তে রাজি না হওয়ায় বিশ্বকাপ বাছাইয়ের সেই পর্বে খেলতে পারেননি তিনি। নিষেধাজ্ঞার কারণে এই ম্যাচে ব্রাজিল দলে ছিলেন না তারকা ফরোয়ার্ড নেইমার। ফলে আক্রমণভাগের গুরুদায়িত্ব এসে পড়ে রাফিনিয়ার ওপর। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে কখনও বিশ্বকাপের মূল পর্বে না খেলা দেশ ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে প্রথমার্ধে বেশ ভুগতে হয়েছিল তিতের দলকে। এরপর সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের ফিরে পায় পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচের পর রাফিনিয়া জানান, অনেক প্রতীক্ষার পর অভিষেক ম্যাচ নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে সেটা ছাপিয়ে তার চেষ্টা ছিল, মাঠে নিজের সেরাটা দেওয়ার। “আমার অভিষেকের জন্য সত্যিই উদ্বিগ্ন ছিলাম। আমাকে প্রথমবার (ক্লাব থেকে জাতীয় দলে) আসার অনুমতি না দেওয়ার পর আমি এখানে আসার জন্য এবং ব্রাজিলের জার্সি পরার জন্য আরও বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। তাই আমি মনে করি, আমার সেরাটা দিয়েছি এবং ব্যক্তিগতভাবে এটা আমার জন্য ভালো ছিল। মাঠে সতীর্থদের সাহায্য করতে পেরে ভালো লেগেছে।” “লিডসের হয়ে যা করি তিতে সেটাই আমাকে করতে বলেছিলেন। আমি মনে করি না, আমি তাকে, আমার সতীর্থদের কিংবা ব্রাজিলের ভক্তদেরকে হতাশ করেছি।” গোল পেলে বেশি ভালো লাগত রাফিনিয়ার। তবে দুটি গোলে অবদান রাখতে পারার খুশিতে নিজে না পাওয়ার হতাশা ভুলে থাকছেন তিনি। “দলের জয়ে সাহায্য করা, আমার কাছে অনেক অর্থবহ। আমি মনে করি, অ্যাসিস্টও গোলের সমান। আক্রমণভাগের একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমি অবশ্যই গোল করতে পছন্দ করি, কিন্তু যখন সতীর্থদের গোল করার সুযোগ তৈরি করে দিই তখনও আমি খুশি। এটা আমার কাছে গোল করার মতই।” “তাই শুধু গোলের সুযোগ তৈরি করে দিয়েই আমি খুশি নই বরং যেভাবে খেলেছি এবং মাঠে যা করতে পেরেছি, সেই সঙ্গে জয়ের জন্য যা আমাদের জয়যাত্রা ধরে রেখেছে এর জন্য আমি খুশি।” বাছাইয়ের পরের দুই ম্যাচে কলম্বিয়া ও উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে একাদশে নেইমারের ফিরে আসাটা প্রায় নিশ্চিত। ফলে এমন সপ্রভিত পারফরম্যান্সের পরও দলে জায়গা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রাফিনিয়া। তবে কোচকে মধুর সমস্যায় ফেলতে পারাটা দলের জন্যই ভালো বলে মনে করছেন তিনি। “নিঃসন্দেহে আমি মনে করি এটি তার (তিতে) জন্য ভালো। এখন আমি খেলব কি খেলব না সেটা তার সিদ্ধান্ত।”
৯ ম্যাচে টানা ৯ জয়ে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও সুসংহত করেছে ব্রাজিল। এই জয়ে কাতার বিশ্বকাপ নিশ্চিত করার দুয়ারে পৌঁছে গেছে দলটি।