নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, গত জাতীয় নির্বাচনে যে স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হয়েছে, আমরা আর তার নিচে নামতে দিতে চাই না, বরং ওপরে উঠতে চাই। আসছে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করাই আমাদের লক্ষ্য। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজশাহীতে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন-২০২৪ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়। ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিতভাবে প্রয়োগ করবেন। বাইরে গিয়ে যেন তারা বলতে পারেন, আমার ভোট আমি দিয়েছি। এ ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাটাই এখন নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। তিনি বলেন, এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে যত ভোট দেশে হবে, অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দরই হবে। ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। ইচ্ছেমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ কথা আমরা সবাই বলেছি। তবে এ গুরুত্বপূর্ণ কাজ নির্বাচন কমিশনের পক্ষে একা সম্ভব না। নির্বাচন সফল করতে সব বাহিনীকে এক ধারায় নিয়ে যাওয়াটাই এখন কমিশনের প্রধান কাজ। সমন্বয় ছাড়া কখনও এমন মহাযজ্ঞ করা সম্ভব নয়। ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, উপজেলা নির্বাচন ধাপে ধাপে হবে। তাই এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ কাজ। উৎসবমুখর পরিবেশে অবাধ, সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে কাজ করে যাচ্ছে কমিশন। মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এবার জামানতের ক্ষেত্রেও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। চেয়ারম্যান প্রার্থীর জন্য জামানত দিতে হবে এক লাখ টাকা। অনেকেরই প্রশ্ন, এটি কেন বাড়ানো হলো। উত্তর হলো এ নিয়ম ২০-৩০ বছর আগের অর্থাৎ অনেক আগের। তাই ২০-৩০ বছর আগে যেটির প্রচলন ছিল, সেটি এখনো থাকবে, তা বাস্তবসম্মত নয়। আমরা কিন্তু এই বাস্তবতা মেনে এই জামানত বাড়িয়েছি। তিনি আরও বলেন, আমরা আরেকটি বিষয় সংশোধন করেছি। আগে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর আড়াইশ ভোটারের স্বাক্ষর লাগত। আমরা তা সংশোধন করেছি। কারণ এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। একজন ভোটার আগে থেকেই একজনের পক্ষে হয়ে যাবেন, মানুষ জেনে যাবে- তিনি তার পক্ষে লোক, এতে ভোটারের গোপনীয়তা থাকে না। তাই আমরা এটি তুলে ফেলেছি। যাচাই-বাছাই করে আমরা ধীরে ধীরে সব নির্বাচন থেকেই এমন ধরনের বিধি তুলে নেব। ইভিএম ব্যবহার প্রসঙ্গে ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, ইভিএমে সব নির্বাচন করতে পারলে আমরা খুশি হতাম। তবে আমাদের এত ইভিএমের সক্ষমতা নেই। এখন যেসব ভালো ইভিএম আছে, সেসব আমরা নির্বাচনে কাজে লাগাতে চাইছি। সেক্ষেত্রে প্রতি বিভাগে দুটি জেলায় ইভিএমে ভোট পাচ্ছি। রাজশাহী বিভাগের মধ্যে আমরা সিরাজগঞ্জ ও পাবনায় ইভিএমে নির্বাচন করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ফয়সাল মাহমুদ, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হেমায়েতুল ইসলাম ও রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন। এ ছাড়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় রাজশাহী বিভাগের আট জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।