নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বীর শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। ১৯৯০ সালের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার ক্ষমতায় এসে দুনীতি, শোষণ, দলীয়করণ আর স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকে দেশকে বিচ্যুত করেছে। জিএম কাদের বলেন, ক্ষমতাসীনরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের মাঠেই দাঁড়াতে দিচ্ছে না। প্রশাসনের সহায়তায় প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে চাপ দিচ্ছে। আবার ঠুনকো কারণে বিরোধীদলীয় প্রার্থীদের প্রার্থীতা বাতিল করছে। এমন বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়নি, এমন বাংলাদেশের জন্য বীর শহীদরা আত্মত্যাগ করেননি। শনিবার জুরাইন রেলগেটে জাতীয় পার্টি শ্যামপুর ও কদমতলী আয়োজিত বিজয় সমাবেশ ও পতাকা মিছিল উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পূর্বে পশ্চিম পাকিস্তানিরা আমাদের শোষণ করতো, পূর্ব পাকিস্তানের টাকায় তারা পশ্চিম পাকিস্তান সাজাতো। এখনো আমারা শোষণের শিকার হচ্ছি, আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকা প্রতিবছর পাচার হয়ে যাচ্ছে। পশ্চিম পাকিস্তানিরা আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করেছিল। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে পরিণত করেছিল তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিকে। ঠিক তেমনিভাবেই এখনো আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের সঙ্গে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। ক্ষমতাসীন দল না করলে চাকরি মেলে না, ব্যবসা করতে পারে না। বৈষম্য সৃষ্টি করেছে ধনী ও গরিবের মাঝে। ধনীদের জন্য এক আইন আর গরিবদের জন্য আলাদা আইন। স্বাধীনতার মূল নীতি হচ্ছে শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়া। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে স্বাধীনতার মূল চেতনা থেকে দেশকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের মানুষ সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতারাই বলেছিলেন জাতীয় পার্টির সমর্থন না পেলে ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে আওয়ামী লীগ টিকতো না। ১৩ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকে বিএনপি হা-হুতাশ শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অচল মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দেশের মানুষ নতুন মুদ্রা চায়, যারা দেশের মানুষকে শোষণ ও বৈষম্য থেকে মুক্তি দিতে পারবে। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা জহিরুল আলম রুবেল, ভাইস চেয়ারম্যান আমির উদ্দিন আহমেদ ডালু, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দে, যুগ্ম সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য শেখ মাশুকুর রহমান, সমরেশ মন্ডল মানিক, এম এ সোবহান, আক্তার হোসেন দেওয়ান, ইব্রাহিম মোল্লা, কাওসার মোল্লা, মামুন মোল্লা।