• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৮ অপরাহ্ন

এ বছর শেষ হচ্ছে না সাবরিনা বিরুদ্ধে মামলার বিচারকাজ

Reporter Name / ৩৪৪ Time View
Update : শনিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার নামে জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রতারণা, জাল সনদ দেওয়ার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ দুই কর্মকর্তা ডা. সাবরিনা ও আরিফুল চৌধুরীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিচার চলতি বছরেও শেষ হবে না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। তবে আগামী বছরের শুরুর দিকেই আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করতে পারবে বলে আশাবাদী রাষ্ট্রপক্ষ। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ১০ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য রয়েছে। জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান জানান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শেষ হওয়ার পর পুনরায় আদালত মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেছেন। গত ১ বছর করোনার জন্য মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত ছিল। এছাড়াও বিচারিক আদালত বদলি হওয়ায় কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত বিচারক তাদের কোর্টের কাজ শেষে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এজন্য আদালতে অনেক সাক্ষী আসলেও সাক্ষ্যগ্রহণ করতে পারে না।
তিনি বলেন, নরমালি এসব কোর্টে ২ মাস পর পর সাক্ষীর জন্য তারিখ ধার্য হয়। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২০/২৫ দিন পরপর তারিখ ধার্য করেছেন। মামলাটিতে আরও ৭/৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। সব মিলিয়ে এই বছরে রায় ঘোষণা করা সম্ভব হবে না। আগামী বছরের শুরুর দিকে এ মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে বলে তিনি আশা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সর্বোচ্চ সাজা সাত বছরের কারাদ- আশা করেন এ আইনজীবী। এ বিষয়ে সাবরিনার আইনজীবী প্রণব কান্তি ভৌমিক জানান, মামলাটিতে এখন পর্যন্ত যে ২০ জন সাক্ষ্য দিয়েছে, তারা কেউই সাবরিনার নাম বলেননি। সাবরিনা এ মামলার মূল আসামি না। আসামিদের উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মামলাটির রায় ঘোষণা হলে সাবরিনাসহ অন্যান্য আসামিরা খালাস পাবে বলে তিনি আশা করেন। ২০২০ সালের করোনা সংক্রমণের শুরুতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে কোনো রকম পরীক্ষা না করেই ২৭ হাজার মানুষকে রিপোর্ট দেয় জেকেজি হেলথ কেয়ার। এর বেশিরভাগই ভুয়া বলে ধরা পড়ে। এ অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ জুন অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় তেজগাঁও থানায় প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। গত বছরের ৫ আগস্ট এ মামলায় ঢাকা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী। ওই বছরের ২০ আগস্ট সাবরিনাসহ ৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলাটিতে ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত অপর আসামিরা হলেন- সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী তানজীনা পাটোয়ারী, নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইন্সেসের স্বত্বাধিকারী জেবুন্নেছা রিমা, বিপ্লব দাস ও মামুনুর রশীদ। বর্তমানে সকলেই কারাগারে রয়েছেন। চার্জশিটে জেকেজি হেলথ কেয়ারের কম্পিউটারে এক হাজার ৯৮৫টি ভুয়া রিপোর্ট ও ৩৪টি ভুয়া সার্টিফিকেট জব্দের কথা বলা হয়েছে। ২০২০ সালের ২৩ জুন জেকেজির সিইও আরিফসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। এরপর তাদের কয়েক দফা রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। এছাড়াও তথ্য গোপন ও জালিয়াতির মাধ্যমে দুইটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেওয়ার অভিযোগে জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে মামলাটির প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রয়েছে। সাবরিনার দুটি এনআইডি কার্ড সক্রিয় রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি টের পাওয়ার পর বিস্তারিত জানতে ইসির কাছে তথ্য চেয়েছে। সাবরিনা ২০১৬ সালের ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় দ্বিতীয়বার ভোটার হন। তিনি প্রথমে ভোটার হন সাবরীনা শারমিন হোসেন নামে। একটিতে জন্ম তারিখ দেওয়া ১৯৭৮ সালের ২ ডিসেম্বর। অন্যটিতে ১৯৮৩ সালের ২ ডিসেম্বর। প্রথমটিতে স্বামীর নাম হিসেবে ব্যবহার করেছেন আর এইচ হক। আর দ্বিতীয়টিতে স্বামীর নাম লেখা হয়েছে আরিফুল চৌধুরী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category