১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫ | ই-পেপার

কক্সবাজারে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়: ডিবির সাত সদস্যের কারাদন্ড

  • দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৭:২৮:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১২১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজারে ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বহিষ্কৃত সাত সদস্যের সাত বছরের কারাদ- দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদ-ের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কক্সবাজার জেলা দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যা ডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় বিচারক এই রায় ঘোষণা করেছেন। বিচারক ৩৬৫ ধারায় পাঁচ বছর এবং ৩৮৬ ধারায় সাত বছর কারাদ- দেন। উভয় সাজা তাদের একসঙ্গে ভোগ করতে হবে। ফলে সাজা সাত বছর বলে গণ্য হবে। রায় ঘোষণাকালে সাত আসামিই এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর কক্সবাজার শহরের থানার পেছনের রোড থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা টেকনাফের ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। এরপর ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে স্বজনদের কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। দেনদরবারের পর ১৭ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় পরিবার। টাকা পৌঁছে দেওয়া হলে পরদিন ভোরে আবদুল গফুরকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি গফুরের স্বজনেরা সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা চৌকির কর্মকর্তাকে জানান। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য সেনাবাহিনীর এই নিরাপত্তাচৌকি স্থাপন করা হয়েছিল। মুক্তিপণ আদায়কারী ডিবি পুলিশের সদস্যরা মাইক্রোবাসে মেরিন ড্রাইভ সড়কে চৌকির সেনাসদস্যরা মাইক্রোবাস তল্লাশি করে তাতে ১৭ লাখ টাকা পান। এ সময় ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান দৌড়ে পালিয়ে গেলেও বাকি ছয়জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেন সেনাসদস্যরা। ফরিদুল আলম জানান জানান, এ ঘটনায় ব্যবসায়ী আবদুল গফুর বাদী হয়ে ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান ও আবুল কালাম আজাদ, এএসআই ফিরোজ, গোলাম মোস্তফা ও আলাউদ্দিন এবং দুই কনস্টেবল আল আমিন ও মোস্তফা আজমকে আসামি করে টেকনাফ থানায় মামলা করেন। ঘটনার প্রায় ১০ মাস পার ২০১৮ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ডিবির সাত জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত ৫ সেপ্টেম্বর মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে জামিনে থাকা ডিবি পুলিশের সাত সদস্যের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান বিচারক। মামলার রায়ের জন্য ২০ সেপ্টেম্বর সময় নির্ধারণ করেন। এদিন শারীরিক অসুস্থতার কারণে রায় ঘোষণার সময় মামলার বাদী আবদুল গফুর উপস্থিত ছিলেন না। তবে তার বড় ভাই টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ?এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, সেটি তুলে ধরেছেন আদালত।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে ব্যয় কমানোর উদ্যোগ

কক্সবাজারে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়: ডিবির সাত সদস্যের কারাদন্ড

আপডেট সময়ঃ ০৭:২৮:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজারে ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বহিষ্কৃত সাত সদস্যের সাত বছরের কারাদ- দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদ-ের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কক্সবাজার জেলা দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যা ডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় বিচারক এই রায় ঘোষণা করেছেন। বিচারক ৩৬৫ ধারায় পাঁচ বছর এবং ৩৮৬ ধারায় সাত বছর কারাদ- দেন। উভয় সাজা তাদের একসঙ্গে ভোগ করতে হবে। ফলে সাজা সাত বছর বলে গণ্য হবে। রায় ঘোষণাকালে সাত আসামিই এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর কক্সবাজার শহরের থানার পেছনের রোড থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা টেকনাফের ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। এরপর ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে স্বজনদের কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। দেনদরবারের পর ১৭ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় পরিবার। টাকা পৌঁছে দেওয়া হলে পরদিন ভোরে আবদুল গফুরকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি গফুরের স্বজনেরা সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা চৌকির কর্মকর্তাকে জানান। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য সেনাবাহিনীর এই নিরাপত্তাচৌকি স্থাপন করা হয়েছিল। মুক্তিপণ আদায়কারী ডিবি পুলিশের সদস্যরা মাইক্রোবাসে মেরিন ড্রাইভ সড়কে চৌকির সেনাসদস্যরা মাইক্রোবাস তল্লাশি করে তাতে ১৭ লাখ টাকা পান। এ সময় ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান দৌড়ে পালিয়ে গেলেও বাকি ছয়জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেন সেনাসদস্যরা। ফরিদুল আলম জানান জানান, এ ঘটনায় ব্যবসায়ী আবদুল গফুর বাদী হয়ে ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান ও আবুল কালাম আজাদ, এএসআই ফিরোজ, গোলাম মোস্তফা ও আলাউদ্দিন এবং দুই কনস্টেবল আল আমিন ও মোস্তফা আজমকে আসামি করে টেকনাফ থানায় মামলা করেন। ঘটনার প্রায় ১০ মাস পার ২০১৮ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ডিবির সাত জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত ৫ সেপ্টেম্বর মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে জামিনে থাকা ডিবি পুলিশের সাত সদস্যের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান বিচারক। মামলার রায়ের জন্য ২০ সেপ্টেম্বর সময় নির্ধারণ করেন। এদিন শারীরিক অসুস্থতার কারণে রায় ঘোষণার সময় মামলার বাদী আবদুল গফুর উপস্থিত ছিলেন না। তবে তার বড় ভাই টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ?এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, সেটি তুলে ধরেছেন আদালত।