নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার মামলায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারপারসন ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরীসহ আট আসামির ১১ বছর করে কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন দ-বিধির পৃথক তিন ধারায় এ কারাদ- ঘোষণা করেন। কারাদ-প্রাপ্ত অপর ছয় আসামি হলেন- আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা। আসামিদের দ-বিধির ৪২০ ধারায় তিন বছরের কারাদ- ও তিন হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন আদালত। জরিমানা অনাদায় আরও তিন মাস কারাভোগ করতে হবে। দ-বিধির ৪৬৬ ধারায় চার বছরের কারাদ- ও চার হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায় আরও চার মাস কারাভোগ করতে হবে। এ ছাড়া দ-বিধি ৪৭১ ধারায় চার বছরের কারাদ- ও চার হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে চার মাস কারাভোগ করতে হবে। তিন ধারার শাস্তি একের পর এক চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে দ-বিধির ১৭০/২৬৯/৪০৬/৪৬৫ ধারায় অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ হয়নি। এ ধারাগুলোতে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের এ ধারাগুলোতে খালাস প্রদান করেন আদালত।রায় ঘোষণার আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তাদের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। তাদের রাখা হয় আদালতের হাজতখানায়। পরে তাদের আদালতে ওঠানো হয়। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন করোনার ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে মানুষের জীবন নিয়ে খেলেছেন জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারপারসন ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরীসহ আট আসামি। তাই আসামিদের সাজা দেওয়া প্রয়োজন। বিচারক বলেন, ডা. সাবরিনা-আরিফসহ অন্য আসামিরা করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে। রাষ্ট্র যখন নাগরিকের করোনা পরীক্ষা বিনামূল্যে করার দায়িত্ব নেয়। তখন তারা করোনার ভুয়া পরীক্ষা করে মানুষের জীবন নিয়ে খেলেছে। তারা মানুষদের করোনার ভুয়া সার্টিফিকেট দিতো। এজন্য তাদের সাজা দেওয়া হলো। গত ২৯ জুন ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৯ জুলাই দিন ধার্য করেন। এর আগে গত ১১ মে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। গত ২০ এপ্রিল একই আদালতে সাক্ষ্য দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জন বিভিন্ন সময়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করেই জেকেজি হেলথকেয়ার ২৭ হাজার মানুষকে ভুয়া রিপোর্ট দেয়। এ অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ জুন অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করলে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।