০৬:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ | ই-পেপার

কিছু পরিবহন ব্যবসায়ীর কাছে জনগণ জিম্মি: জিএম কাদের

  • দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৭:২৬:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ নভেম্বর ২০২১
  • ৪৪৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, বর্তমানে পরিবহন খাতের কিছু ব্যবসায়ীর কাছে দেশের জনগণ জিম্মি হয়ে আছে। গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফভাড়ার দাবিটি যৌক্তিক। অতীতেও গণপরিবহনে হাফ ভাড়া ছিল। তাই এটি পুনরায় চালু করা উচিত। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ এফডিসিতে ‘মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকা’ শীর্ষক এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। জিএম কাদের বলেন, ‘পণ্য উৎপাদনকারী, ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সরকারের দায়িত্ব বেশি। তবে দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকেও নজরদারির ভূমিকা পালন করতে হবে। অবৈধ সিন্ডিকেট দ্বারা পণ্য মজুদ করে কৃত্তিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করা অপরাধ। এ ধরনের অপরাধের জন্য দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তির বিধান রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভর্তুকি প্রদান একটি সাময়িক ব্যবস্থা। কোনোভাবেই এটি দীর্ঘায়িত হতে পারে না। বিদ্যুৎখাতে দীর্ঘমেয়াদী ভর্তুকি দেওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই এবং এই খাতে ইনডেমনিটি সমর্থন করা যায় না। দরিদ্র মানুষকে স্বল্পমূল্যে নিত্যপণ্য সরবরাহ করা টিসিবির লক্ষ্য। তবে এই প্রতিষ্ঠানটি আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করতে পারছে না। কৃষক যেন উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় সেজন্য বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকারের সহযোগিতা ও সড়কপথে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’ জিএম কাদের বলেন, ‘দেশে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। ক্রমশ মানুষ ভোটবিমুখ হচ্ছে। যা রাজনীতি ও গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত। গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে হলে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না। ভোটবাক্স দখল করে নেওয়া হচ্ছে। জনগণ এর থেকে মুক্তি চায়। সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিমূলক শাসন ব্যবস্থা করতে পারলে দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রিত হবে।’ হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘বাংলাদেশে এক শ্রেণির মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়লেও দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতা অনেক কমেছে। এর মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কতটা লাগামহীন টিসিবির খোলাবাজারে ট্রাকের পিছনে মানুষের দীর্ঘলাইন দেখলে তা বোঝা যায়। করোনার কারণে যে আড়াই-তিন কোটি মানুষ নতুনভাবে দরিদ্র হয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি তাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। দেশে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই, হরতাল নেই। সরকার বলছে খাদ্যের মজুদ পর্যাপ্ত রয়েছে। তাহলে কেন দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি?’ এ সময় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ১০ দফা সুপারিশ করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যন হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতায় ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিককে পরাজিত করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়। ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট শিরোনামে প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক আরিফুর রহমান, সাংবাদিক সবুজ ইউনুস, সাংবাদিক উম্মান নাহার আজমী ও আবুল বশির খান। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় পৃথিবীর সেরাদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

কিছু পরিবহন ব্যবসায়ীর কাছে জনগণ জিম্মি: জিএম কাদের

আপডেট সময়ঃ ০৭:২৬:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ নভেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, বর্তমানে পরিবহন খাতের কিছু ব্যবসায়ীর কাছে দেশের জনগণ জিম্মি হয়ে আছে। গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফভাড়ার দাবিটি যৌক্তিক। অতীতেও গণপরিবহনে হাফ ভাড়া ছিল। তাই এটি পুনরায় চালু করা উচিত। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ এফডিসিতে ‘মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকা’ শীর্ষক এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। জিএম কাদের বলেন, ‘পণ্য উৎপাদনকারী, ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সরকারের দায়িত্ব বেশি। তবে দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকেও নজরদারির ভূমিকা পালন করতে হবে। অবৈধ সিন্ডিকেট দ্বারা পণ্য মজুদ করে কৃত্তিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করা অপরাধ। এ ধরনের অপরাধের জন্য দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তির বিধান রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভর্তুকি প্রদান একটি সাময়িক ব্যবস্থা। কোনোভাবেই এটি দীর্ঘায়িত হতে পারে না। বিদ্যুৎখাতে দীর্ঘমেয়াদী ভর্তুকি দেওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই এবং এই খাতে ইনডেমনিটি সমর্থন করা যায় না। দরিদ্র মানুষকে স্বল্পমূল্যে নিত্যপণ্য সরবরাহ করা টিসিবির লক্ষ্য। তবে এই প্রতিষ্ঠানটি আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করতে পারছে না। কৃষক যেন উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় সেজন্য বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকারের সহযোগিতা ও সড়কপথে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’ জিএম কাদের বলেন, ‘দেশে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। ক্রমশ মানুষ ভোটবিমুখ হচ্ছে। যা রাজনীতি ও গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত। গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে হলে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না। ভোটবাক্স দখল করে নেওয়া হচ্ছে। জনগণ এর থেকে মুক্তি চায়। সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিমূলক শাসন ব্যবস্থা করতে পারলে দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রিত হবে।’ হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘বাংলাদেশে এক শ্রেণির মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়লেও দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতা অনেক কমেছে। এর মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কতটা লাগামহীন টিসিবির খোলাবাজারে ট্রাকের পিছনে মানুষের দীর্ঘলাইন দেখলে তা বোঝা যায়। করোনার কারণে যে আড়াই-তিন কোটি মানুষ নতুনভাবে দরিদ্র হয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি তাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। দেশে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই, হরতাল নেই। সরকার বলছে খাদ্যের মজুদ পর্যাপ্ত রয়েছে। তাহলে কেন দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি?’ এ সময় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ১০ দফা সুপারিশ করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যন হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতায় ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিককে পরাজিত করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়। ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট শিরোনামে প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক আরিফুর রহমান, সাংবাদিক সবুজ ইউনুস, সাংবাদিক উম্মান নাহার আজমী ও আবুল বশির খান। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।