• বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না: আইনমন্ত্রী নাইজেরিয়ান চক্রের মাধ্যমে চট্টগ্রামে কোকেন পাচার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বললেন ব্যারিস্টার সুমন পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় নদী শাসনে ব্যয় বাড়ছে পিএসসির উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীরসহ ৬ জনের রিমান্ড শুনানি পিছিয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যবহার করছে না রেল ট্রানজিট রাজাকারের পক্ষে স্লোগান সরকারবিরোধী নয়, রাষ্ট্রবিরোধী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র-আলোকচিত্র প্রদর্শনী

কিডনি কেনাবেচা চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

Reporter Name / ৩৭৭ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচা করতো একটি চক্র। কিডনি বেচে তারা ১৫-২০ লাখ টাকা পেলেও ডোনারকে দিতো দুই লাখ টাকা। আর এজন্য টার্গেট করা হতো গরিব ও অসহায় মানুষ। কিডনি কেনাবেচা চক্রের ফেসবুক পেজের অন্যতম হোতা মো. শাহরিয়ার ইমরানসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র?্যাব। শাহরিয়ার আবার দুটি পেজের অ্যাডমিন। একটির নাম ‘বাংলাদেশ কিডনি ও লিভার পেশেন্ট চিকিৎসা সেবা’ এবং অপরটি ‘কিডনি লিভার চিকিৎসা সেবা’। র?্যাব বলছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব মানুষ চিহ্নিত করে তাদের অর্থের বিনিময়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য ডোনার হতে প্রলুব্ধ করা হতো। এরপর ডোনারকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাঠানো হতো। চক্রটি প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য রোগীর কাছ থেকে ১৫-২০ লাখ টাকা নিলেও কিডনি ডোনারকে ৩-৪ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলে দিতো দুই লাখ টাকা। এ চক্রটি এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক মানুষকে কিডনি বিক্রির জন্য ভারতে পাচার করেছে বলে জানায় র?্যাব। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এস তথ্য দেন র?্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, গত সোমবার রাত থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত র?্যাব-৫, র?্যাব-২ ও র?্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা যৌথ অভিযান চালায়। অভিযানে জয়পুরহাট ও রাজধানীর নর্দা থেকে এ সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- মো. শাহরিয়ার ইমরান আহম্মেদ (৩৬), মো. মেহেদী হাসান (২৪), মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), মো. আবদুল মান্নান (৪৫), ও মো. তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু (৩৮)। অভিযানে ভুক্তভোগী কিডনি দাতাদের ৪টি পাসপোর্ট, মেডিকেল চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট, ভিসা সম্পর্কিত বেশকিছু কাগজপত্র, ৫টি মোবাইল ও দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে কিডনিসহ মানবদেহের নানা অঙ্গের অবৈধ ট্রান্সপ্লান্টেশনের সঙ্গে সক্রিয় রয়েছে কয়েকটি চক্র। এসব চক্রের ফাঁদে পড়ে অসহায় নিম্নআয়ের মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানান, তাদের চক্রের মোট সদস্য সংখ্যা ১৫-২০ জন। তারা ৩টি ভাগে বিভক্ত হয়ে কিডনি কেনাবেচা করে থাকে। চক্রের প্রথম গ্রুপ ঢাকায় অবস্থান করে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন প্রয়োজন এমন বিত্তশালী রোগীদের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। আর চক্রের দ্বিতীয় দলটি চাহিদা অনুযায়ী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব ও অভাবী মানুষ চিহ্নিত করে এবং তাদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য ডোনার হতে প্রলুব্ধ করে ঢাকায় নিয়ে আসে। অপরদিকে তৃতীয় গ্রুপটি প্রলোভনের শিকার কিডনি ডোনারদের ঢাকায় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন রোগীর সঙ্গে ব্লাড ম্যাচিং ও অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। ব্লাড ম্যাচিং ও অন্যান্য ডায়াগনস্টিক টেস্টে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের উপযুক্ততা নিশ্চিত হওয়ার পর, তার পাসপোর্ট, ভিসা প্রসেসিং ও ভুয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে ডোনারকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়। এরপর ভারতে অবস্থানকারী আরেকটি চক্র কিডনি ডোনারকে এয়ারপোর্ট অথবা স্থলবন্দরে রিসিভ করা থেকে শুরু করে হাসপাতালের ডকুমেন্টেশন, অস্ত্রোপচারসহ যাবতীয় কর্মকা- করে থাকে। তারপর ভিকটিমদের বৈধ কিংবা অবৈধ উপায়ে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। র?্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেপ্তাররা এভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধ উপায়ে হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তারা রোগীর কাছ থেকে ১৫-২০ লাখ টাকা গ্রহণ করে থাকতো। বিপরীতে তারা কিডনি ডোনারকে ৩-৪ লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করে অগ্রিম দুই লাখ টাকা প্রদান করতো। আইনের হাত থেকে বাঁচার জন্য চক্রটি কোনো প্রকার রিসিট, পাসপোর্ট বা অন্যান্য প্রমাণ ডোনারকে সরবরাহ করতো না বলে জানায় র?্যাব। এ ছাড়া প্রতিশ্রুত অর্থ না দিয়ে কিডনি দাতাদের ভয়ভীতি দেখানো হতো। র?্যাব জানায়, চক্রের হোতা ইমরান প্রতি কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন বাবদ ৫-১০ লাখ টাকা, মান্নান ও তাজুল প্রতি কিডনি দাতা সংগ্রহ বাবদ যথাক্রমে ৫ ও ৩ লাখ টাকা গ্রহণ করতেন। অপরদিকে চক্রের মূলহোতা ও অন্যতম আসামি শাহরিয়ার ইমরান ভারতে অবস্থান করে স্থানীয় দালাল ও অনলাইনের মাধ্যমে কিডনি রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। এ পর্যন্ত তিনি কিডনি বিক্রির জন্য প্রায় শতাধিক মানুষকে ভারতে পাচার করেছেন বলে জানান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তার বিরুদ্ধে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে ৬টির বেশি মামলা রয়েছে। কিডনি কেনাবেচা চক্রের সদস্যরা দেশীয় কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকের সঙ্গে জড়িত কি না এমন প্রশ্নে র?্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, দেশের হাসপাতালের তথ্য আমরা পায়নি। তবে তারা পার্শ্ববর্তী দেশে কোন হাসপাতাল-ক্লিনিকে কিডনি প্রতিস্থাপন করতেন স বিষয়ে জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category