নিজস্ব প্রতিবেদক :
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নুহা ও নাভা নামের দুটি শিশুর জোড়া মেরুদ- আলাদা করার অপারেশন সাকসেসফুল হলো। এটি সাধারণ কোনো কাজ নয়। এখানে আমাদের অভীজ্ঞ বড় একটি চিকিৎসক টিম একটানা ১৩ ঘণ্টার বেশি সময় অপারেশন করে এই অসাধ্য কাজ সাধন করেছেন। এই অপারেশন ভারত বা বাইরের দেশে করতে গেলে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হতো। কিন্তু বাংলাদেশে এই দুই অবুঝ শিশুর চিকিৎসা ব্যয় প্রধানমন্ত্রী নিজে বহন করেছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের ১০ তলায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বিএসএমএমইউ’র ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, নুহা ও নাভার মাসহ অন্যান্য সিনিয়র চিকিৎসকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাকে এখানে আসতে বলেছেন। এর আগেও বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরাই মাথায় জোড়া লাগা শিশুর সফল অপারেশন করেছি। সুযোগ পেলে আমরা যে আসলেই পারি এগুলো, এটা তারই প্রমাণ। চিকিৎসা ক্ষেত্রেও আমরা দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছি। আমি বলতে পারি, দায়িত্ব নিয়ে আমরা চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিলে বাংলাদেশ থেকে এখন জটিল সব রোগেরই চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি অপার সম্ভাবনার দেশ। আমাদের দেশে প্রচুর শিক্ষার্থী প্রতি বছর মেডিকেল পড়ালেখা শেষ করে চিকিৎসক হচ্ছেন। আমাদের চিকিৎসকরা যেমন মেধাবী তেমন দক্ষ। শুধু একটু সুযোগসুবিধা বাড়াতে হবে এবং তাদের দায়িত্ব অনুযায়ী ভরসা দিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তাহলে বাংলাদেশ থেকে কোনো রোগীকে আর আগামীতে বিদেশ যেতে হবে না। কিছুদিন আগেই আমরা ভুটানের ক্যান্সার আক্রান্ত এমন এক মেয়েকে চিকিৎসা দিয়ে ভালো করেছি যার চিকিৎসা ভারত ও ব্যাংককেও সম্ভব হয় নাই। কাজেই বাংলাদেশ পারে না এমন কোনো কাজ নাই। বাংলাদেশেই এখন সব রোগের চিকিৎসা সুবিধা আছে। বাংলাদেশ থেকে এইডস, যক্ষা, ম্যালেরিয়া রোগ নির্মূলে অর্থায়ন বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্যতম দাতা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফান্ড। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দপ্তরে তার সঙ্গে বৈঠকে গ্লোবাল ফান্ডের কর্মকর্তা জিয়নগাইভার জ্যাকব এই আশ্বাস দেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অনুরোধে অর্থায়ন বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। এ সময় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর আহমেদুল কবীর এবং গ্লোবাল ফান্ডের প্রগ্রাম কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।