নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হল বন্ধ করে দেওয়ার পর নিস্তব্ধতার মধ্য দিয়ে কেটে গেছে ৫৭০ দিন। দীর্ঘদিন পর সেই নিস্তব্ধতা ভেঙে আজ শনিবার থেকে হলে আসতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের ফুল দিয়ে বরণ নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় এ কার্যক্রম। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট হল প্রশাসন উপস্থিত ছিলেন। পরে একে একে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য আবাসিক হলেও শুরু হয় শিক্ষার্থীদের প্রবেশ। হল প্রশাসনের উদ্যেগে গোলাপ-রজনীগন্ধা ফুল চকলেট দিয়ে বরণ করে নেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। আবার কোনো কোনো হলে ফুল দেওয়ার পাশাপাশি মিষ্টি মুখ কররিয়ে বরণ করে নিচ্ছেন। আর শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের সময় আবাসিক কার্ড এবং করোনার অন্তত একডোজ টিকা নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারও দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থী আদনান ফাহিম বলেন, হল জীবন হলো আমার দ্বিতীয় পরিবার। পরিবার ছেড়ে এতোদিন থাকাটা ছিল আমার কাছে পাহাড় সমান কষ্টের। মুখিয়ে ছিলাম কবে পরিচিত মুখগুলোর সংস্পর্শে আসবো। আজ শেষ হলো সেই অপেক্ষার প্রহর। মানসিক প্রশান্তির প্রকৃত সুখ পেয়েছি আমি। বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরতœ শেখ হাসিনা হলের শিক্ষার্থী মিথিলা ইসলাম বলেন, প্রতিটা দিনই অপেক্ষায় ছিলাম কখন হল খোলার ঘোষণা পাবো। হল খোলার ঘোষণা আসার পর একেকটা দিন যেনো একেকটা বছরের মতো মনে হয়েছে। আজ ছিলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। এ মুহূর্তটি ঈদের খুশির চেয়েও বেশি। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিন হলে দেখতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত হল প্রশাসন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, সন্তান যখন দীর্ঘদিন পর বাবার কোলে ফিরে আসে তখন এর থেকে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না। শূন্য বাড়ি পাহারা দিতে কারই বা ভালো লাগে? এতোদিন পর শিক্ষার্থীদের কাছে পেয়েছে এর থেকে আনন্দের কিছু হতে পারেনা। তাদের রক্ষণাবেক্ষণ করাই এখন আমার প্রধান কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এতোদিন পর হল খুলতে পেরে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আমরাও খুব আনন্দিত। এখন আমাদের একার পক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হবেনা, শিক্ষার্থীদের তাদের নিজ নিজ স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। গত ৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫৩তম সিন্ডিকেটে করোনার প্রাদুর্ভাব কাটিয়ে গতকাল শনিবার থেকে আবাসিক হল খোলার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের অন্তত একডোজ টিকার তথ্য এবং আবাসিক কার্ড নিশ্চিত করে হলে প্রবেশের নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের গণরুমে না উঠানোর নির্দেশনা দেয়।