• শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না: আইনমন্ত্রী নাইজেরিয়ান চক্রের মাধ্যমে চট্টগ্রামে কোকেন পাচার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বললেন ব্যারিস্টার সুমন পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় নদী শাসনে ব্যয় বাড়ছে পিএসসির উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীরসহ ৬ জনের রিমান্ড শুনানি পিছিয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যবহার করছে না রেল ট্রানজিট রাজাকারের পক্ষে স্লোগান সরকারবিরোধী নয়, রাষ্ট্রবিরোধী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র-আলোকচিত্র প্রদর্শনী

খেলাধুলায় সাফল্য অর্জনে আরো প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

Reporter Name / ৬১ Time View
Update : বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে সাফল্য অর্জনের লক্ষে আরো প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি খেলোয়াড়দের জয়লাভের মনোভাব নিয়ে খেলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য অর্জনের জন্য আমাদের যথাযথ প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আরও প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে। আজ বুধবার সকালে তাঁর কার্যালয়ে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশীপ-২০২২’ শিরোপা জয়ী বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলকে সংবর্ধনা ও আর্থিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদেশের মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, আমরা বিজয়ী জাতি। সব সময় এটা মাথায় রাখতে হবে। খেলার মাঠেও মাথায় রাখতে হবে যে যুদ্ধে জয় করেছি, খেলায়ও জয়ী হবো। এই চিন্তা নিয়ে সবাইকে চলতে হবে। তাহলেই সাফল্য আসবে। কারণ, মনোবল এবং আত্মবিশ্বাস একান্তভাবে দরকার। আর সব সময় প্রশিক্ষণও দরকার, বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশিক্ষণ কোনমতেই শিথিল করা যাবে না। যত বেশি প্রশিক্ষণ হবে তত বেশি খেলাধুলায় উৎকর্ষ বাড়বে। নিজের পরিবারের সদস্যদের খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সব সময় এটা মনে করি যে, খেলাধুলা আমাদের অপরিহার্য্য। আমার আব্বা ঢাকা ওয়ান্ডার্স ক্লাবে খেলতেন, আবার আমার ভাই শেখ কামাল সে ও খেলতো, সবাই বিভিন্ন টিমের সঙ্গে জড়িত ছিল।
তিনি বলেন, কাজেই আমি এটা মনে করি যে, আমাদের ছেলে মেয়েরা যতবেশি খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত হতে পারবে, সংস্কৃতি চর্চার সাথে সম্পৃক্ত হতে পারবে,সাহিত্য চর্চা করবে, লেখাপড়ার পাশাপাশি এগুলো একান্তভাবে দরকার। শারীরিক, মানসিক সব দিক থেকেই আমাদের তরুণদের একটা আলাদা মানসিকতা ও দেশপ্রেম গড়ে উঠবে। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের ২৩ জন খেলোয়াড়ের প্রত্যেকের হাতে পাঁচ লাখ টাকার চেক এবং ১১ জন প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তার প্রত্যেকের হাতে দুই লাখ টাকার চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে খেলোয়াড়রা প্রধানমন্ত্রীর হাতে ‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২২’ এর ট্রফি তুলে দেন এবং ফটো সেশনে অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আহসানউল্লাহ মাস্টারের আজ জন্মদিনে তার ওপর রচিত ‘আহসানউল্লাহ মাস্টার জীবনালেখ্য’ নামক একটি গ্রন্থেরও মোড়ক উন্মোচন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মো. সালাহউদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মেসবাহ উদ্দিন। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে ‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশীপ-২০২২’-এর উপর একটি ভিডিও-ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। সরকার প্রধান অভিভাবকদের প্রতি তাদের সন্তানদের সুস্থ মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে বাইরে খেলার জন্য সময় দেয়ার পরামর্শ দেন। তিনি সকল বিশেষ করে যুবকদের খেলাধুলা, সংস্কৃতি ও সাহিত্যকর্মে নিজেদের সম্পৃক্ত রাখতে বলেন যা তাদেরকে দেশের যোগ্য নাগরিক হতে সাহায্য করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া সেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন ২০১১’ প্রণয়ন করে একটা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই ফাউন্ডেশনকে করোনাকালীন ৩০ কোটি টাকা দিয়েছিলাম। মোট ৪০ কোটি টাকার সীড মানি দেওয়া হয়েছে। আমি আরো ২০ কোটি টাকা দেব। এ ফাউন্ডেশন থেকে সমস্যাগ্রস্ত খেলোয়াড়দের সহযোগিতা করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফাউন্ডেশন থেকে যারা আমাদের খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত অনেক সময় তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে অথবা তাদের কোনরকম অসুবিধা দেখা দেয়, বয়স হয়ে গেলে বাড়িতে তাদের কোন কিছু করার থাকে না, সেখানে ফাউন্ডেশন থেকে সহযোগিতা করা যায়। আবার এই ফাউন্ডেশন তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য অনেক কাজও করতে পারে। খেলোয়াড়দের সহযোগিতা করতে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের যারা বিত্তশালী আছেন তাদেরকে বলবো এসব জায়গায় তারা যেন আরো সহযোগিতা করেন। তাছাড়া প্রত্যেকটা ব্যবসায়ী ইন্ডাস্ট্রির মালিক বা অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরকে আমি আহ্বান জানাই প্রত্যেককে যেন আমাদের খেলোয়াড়দের চাকরি দেন, কাজ দেন। আমি মনে করি খেলোয়ারদের কোন একটা কাজ দিয়ে উৎসাহিত রাখা উচিত। তিনি বলেন, যারা খেলাধুলা শেষ করে এখন ব্যবসা করে বেশ টাকা-পয়সার মালিক হচ্ছেন তাদেরতো উচিত এদিকের প্রতি আরও বেশি করে খেয়াল রাখা। সরকার প্রধান বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির পিতা অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের ক্রীড়াঙ্গনকেও সমান গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ১৯৭২ সালেই জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থা গঠন করেন এবং ১৬টি জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশন অনুমোদন করেন। ১৯৭৪ সালে আরও ১৮টি জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশন এবং বিভিন্ন জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে অনুমোদন দেন। ১৯৭৪ সালে ‘বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অ্যাক্ট’ পাস করে আজকের ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ’ গঠন করেন। ১৯৭৫ সালের ৬ আগস্ট ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী ও সংস্কৃতিসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ অনুমোদন দেন। গত ১৪ বছর ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের সফলতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, বিভিন্ন ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে মোট ৪৮৫টি স্বর্ণ, ৪৯৯টি রৌপ্য, ৫৯৫টি ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেছে; এবং ১১৪ বার চ্যাম্পিয়ন, ২৬ বার রানার্স আপ ও ২২ বার তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। তিনি বলেন, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে এশিয়ান গেমসে পুরুষদের ক্রিকেটে প্রথমবার স্বর্ণপদক পেয়েছে। ২০২২ সালের মার্চে ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ান হকি ফেডারেশন কাপ-এ বাংলাদেশ জাতীয় হকি দল ওমান, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, কাজাখস্তান, সিঙ্গাপুরকে পরাজিত করে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ কাবাডি দল কেনিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০২১ সালের মে মাসে এক ম্যাচ হাতে রেখেই শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ান-ডে সিরিজ জয় করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার তৃণমুল পর্যায়ে খেলাধুলার বিকাশে প্রতিটি বিভাগে বিকেএসপি এবং প্রতিটি জেলায় ইনডোর স্টেডিয়াম নির্মান করবে। শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার তৃণমূল পর্যায় থেকে খেলোয়াড় গড়ে তোলার পাশাপাশি ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। প্রথম পর্যায়ে ১২৫টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৮৬টি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে দেশের অবশিষ্ট ১৭৩টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উন্নয়ন কাজ চলমান। ইতোমধ্যে কাবাডি ও ভলিবল স্টেডিয়ামের উন্নয়ন, ১৩টি উপজেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণ, সারাদেশে ৫৬টি স্টেডিয়াম, ৮টি সুইমিংপুল, ৬টি সুটিং রেঞ্জ,৭টি ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category