নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঘাটতি মেটাতে দেশের বিদ্যমান গ্যাসক্ষেত্রগুলোর হাইপ্রেসার জোনে (উচ্চ চাপ এলাকা) অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলোর আরো গভীরে অনুসন্ধান করলে বেশ ভালো পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার যাবে। যা ঘাটতি মেটাতে বড় ভূমিকা রাখবে। ফলে ব্যয়বহুল এলএনজির (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) ওপর নির্ভরশীলতা কমবে। রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী সংস্থা বাপেক্স পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্রে ৫টি গভীর কূপ খননের পরিকল্পনা নিয়েছে। বাপেক্স সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন ক্রমান্বয়ে কমছে। শুধু এলএনজি আমদানি করে ঘাটতি পূরণ করা যাবে না। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যমান গ্যাসক্ষেত্রেগুলোর আরো গভীরে হাইপ্রেশার জোনে কাজ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সেখানে কাজ করা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও একেবারে অসম্ভব নয়। এখন যেসব কূপ খনন করা হয় সেগুলোর সাধারণ ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার পিএসআই (প্রতি বর্গইঞ্চিতে গ্যাস চাপের ইউনিট) চাপ থাকে। সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার পিএসআই চাপ পাওয়া গ্যাস ভোলায়। উচ্চচাপ এলাকা অতিক্রম করতে হলে ১৫ হাজার পিএসআই গ্যাসের চাপ সহ্য করতে হবে। ধারণা করা হয় বাংলাদেশের মাটির ৫ হাজার মিটারের নিচে হাইপ্রেশার জোন রয়েছে। সূত্র জানায়, দেশের অনেক আবিস্কৃত গ্যাসক্ষেত্রেই হাইপ্রেশার জোন পাওয়া গেছে। দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন অজুহাতে হাইপ্রেশার জোন পর্যন্ত কূপ খনন করা হয়নি। ফলে হাইপ্রেশার জোনে কী পরিমাণ গ্যাস আছে তা প্রমাণিত নয়। অনুসন্ধানের আগে এ সম্পর্কিত একটি তথ্যভান্ডার তৈরি করা প্রয়োজন। বিশ্বের গ্যাস মজুতের এক-তৃতীয়াংশই রয়েছে উচ্চচাপযুক্ত কাঠামোতে (টাইট স্যান্ড), যা হাইপ্রেশার জোনের নিচে থাকে। এদেশে ওই কাঠামোতে অনুসন্ধান চালানো হয়নি। দেশের সবচেয়ে গভীর কূপ ফেঞ্চুগঞ্জ-২। কূপটি ৪ হাজার ৯৭৭ মিটার গভীর পর্যন্ত খনন করা হয়। সেখানে তিনটি স্তরে গ্যাস পাওয়া যায়। যদিও কূপটি ৫ হাজার ৫০০ মিটার পর্যন্ত খনন করার পরিকল্পনা ছিল। বাপেক্স গঠনের আগে ১৯৮৬-৮৭ সালে ওই কূপ খনন করা হয়েছিল। এদিকে এ বিষয়ে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, বাপেক্স হাইপ্রেশার জোনে ৫টি কূপ খননের উদ্যোগ নিয়েছে। সেগুলো হলো- মোবারকপুর, শ্রীকাইল, তিতাস, বাখরাবাদ ও সিলেটের রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্র। ৬ হাজার মিটার পর্যন্ত খননের পরিকল্পনা রয়েছে। সেজন্য রিগ ভাড়া করা হবে। অন্যদিকে এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, দেশে গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে সব রকম উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বাপেক্সকে হাইপ্রেশার জোনে অনুসন্ধান কূপ খননের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেজন্য পরামর্শক নিয়োগ করতে বলা হয়েছে।