নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রথমবারের মতো চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ফোরআইআর ফর ইমার্জিং ফিউচার’ করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপ-কমিটি। আজ বুধবার এ উপলক্ষে দলটির সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপ-কমিটির সদস্যসচিব প্রকৌশলী আবদুস সবুর। তিনি বলেন, দুই দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক কনফারেন্সটি আগামী ৪-৫ নভেম্বর রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। কনফারেন্সের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে যাত্রা এবং ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন’। আগামী ৪ নভেম্বর এ আন্তর্জাতিক কনফারেন্সটির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াও দুই দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে রয়েছে, দেশি-বিদেশি ৬৬২টি গবেষণাপত্র থেকে বাছাই করা প্রায় ২৫০টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হবে। প্রকৌশলী সবুর বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব (ফোরআইআর) মানুষের দৈনন্দিন জীবনে লক্ষণীয় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। ফোরআইআরকে সফলভাবে কাজে লাগিয়ে দ্রুত অগ্রসর বাংলাদেশ ডিজিটালাইজেশনের মধ্য দিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে রোল মডেল হয়ে উঠেছে। এ সম্মেলনে ফোরআইআর প্রযুক্তির ব্যবহারে সরকারের উদ্ভাবনী কর্মসূচি বাস্তবায়নে এবং সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে পেশাদার বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, শিক্ষাবিদ, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের মতামত এবং চিন্তাভাবনা বিনিময় করতে পারবেন। যা ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ এবং শতবর্ষী ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও পথ দেখাবে। এছাড়াও বর্তমান অবস্থান থেকে ভবিষ্যৎ স্বপ্নপূরণের পথ অনুসন্ধানে দেশি-বিদেশি প্রতিভাবানদের দলগত ব্রেইন-স্ট্রর্মিং সেশনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেবে। তিনি বলেন, আমরা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্পবিপ্লব ধরতে পারিনি। কিন্তু আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লব যেন বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারি সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের সঠিক দিকনির্দেশনায় এগিয়ে যাচ্ছি। এরইমধ্যে দেশে ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবকে সামনে রেখে দেশে বিভিন্ন স্থানে হাই-টেক পার্ক স্থাপন করছে সরকার। উদ্যোক্তাদের সহায়তায় দেশে অনেকগুলো এক্সেলারেটর ও ইনকিউবেটর প্রতিষ্ঠা করেছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বিভিন্ন টেকনোলজি নিয়ে কাজ করছে সরকার। এসব এডভান্সড টেকনোলজিতে দেশের মেধাবী তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, একই সঙ্গে গবেষকদের উৎসাহ ও প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দেশ ও দেশের বাইরের গবেষকরা আওয়ামী লীগের ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ফোরআইআর ফর ইমার্জিং ফিউচার’ এ পেপার ও পোস্টার জমা দিয়েছেন। দেশের প্রথিতযশা শিক্ষক ও গবেষকদের নিয়ে কনফারেন্সের একটি টেকনিক্যাল কমিটি আছে, যারা পেপারগুলো রিভিউ করছেন। নির্বাচিত পেপারগুলো কনফারেন্স জার্নালে প্রকাশ করা হবে। এছাড়াও কনফারেন্সে বেস্ট পেপার ও বেস্ট পোস্টার অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে।
দুই দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে যা থাকছে: আগামী ৪ নভেম্বর সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ আন্তর্জাতিক কনফারেন্সটির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। প্রথম দিন সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) অডিটোরিয়ামে কনফারেন্সে প্রথম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। দুপুর ১২টা দ্বিতীয় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন থাইল্যান্ডের এআইটির বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. জয়শ্রী রায়। দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আইইবিতে মোট নয়টি ভেন্যুতে আলাদা আলাদা টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হবে। কনফারেন্সের দ্বিতীয় দিন আইইবির কাউন্সিল রুমে সকাল ১০টায় তৃতীয় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার। সকাল ১১টা ২০মিনিট থেকে দুপুর ১টা ২০ মিনিট পর্যন্ত আইইবিতে মোট নয়টি ভেন্যুতে আলাদা আলাদা টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর ২টা ২০ মিনিটে চতুর্থ এবং শেষ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আইইইইর ইতিহাসের প্রথম বাঙালি প্রেসিডেন্ট ড. সাইফুর রহমান। দুপুর ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট নয়টি ভেন্যুতে আলাদা আলাদা টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতারা অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। আন্তর্জাতিক কনফারেন্সটির সমাপনী অনুষ্ঠান ৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। কনফারেন্স থেকে যেসব সুপারিশমালা আসবে সেগুলো দলের দপ্তরে ও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দেওয়া হবে। যেন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে কার্যকর পদক্ষেপ রাখতে পারে।