• মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:০৬ অপরাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
ডিসেম্বরকে লক্ষ্য রেখে জাতীয় নির্বাচনেরই প্রস্ততি নিচ্ছে ইসি দদুর্নীতির বড় অভিযুক্তরা পাশের দেশে আছেন: দুদক চেয়ারম্যান এবারও আসছে তীব্র তাপপ্রবাহ, নেই তেমন প্রস্তুতি লিবিয়ায় দুই গণকবর থেকে ৪৯ অভিবাসী-শরণার্থীর মরদেহ উদ্ধার তিন জিম্মির বিনিময়ে ১৮৩ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিলো ইসরায়েল শিক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্যে সাবেক এমপি চয়নকে গ্রেফতার করলো পুলিশ হাওরে কৃষি জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার ‘ডেভিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপারেশন চলবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই ২৫ কর্মকর্তার লকারই পায়নি দুদক কৃষিঋণ বিতরণ কমায় বোরো উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা

চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ বিলিয়ন ডলার: অর্থমন্ত্রী

Reporter Name / ১৪৬ Time View
Update : শনিবার, ১ জানুয়ারী, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ বিলিয়ন ডলার বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বাংলাদেশকে ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ’ সম্পর্কিত চূড়ান্ত সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় স্মারক অনুষ্ঠানের প্রি-ইভেন্ট প্রেস ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। রেমিট্যান্সে প্রণোদনা বৃদ্ধির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনা বাড়ালাম। আমি যখন পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলাম সেসময় আমি নিজে স্টাডি করেছি। সেসময় আমাদের রেমিট্যান্স যা অর্জন করার কথা, আমরা ৪৯ শতাংশ অর্জন করতাম ফরমাল চ্যানেলে আর ইনফরমাল চ্যানেলে বাকিটা আসতো। আমি চিন্তা করলাম এটাকে ফরমাল চ্যানেলে আনলে আমাদের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে এবং সবাই এটার বেনিফিটটা পাবে। সেই চিন্তা থেকে আমরা প্রথম ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া শুরু করি। এরপর লক্ষ্য করলাম আমাদের যে উদ্দেশ্য সেটি সফল। আমাদের যে অ্যাভারেজ রেমিট্যান্স ছিল ১৪ শতাংশ, এই প্রণোদনা দেওয়ার পর প্রথম বছরে রেমিট্যান্স বেড়ে হলো ১৮ বিলিয়ন ডলার। এরপর আমাদের রেমিট্যান্স আরও বেড়ে যায় এবং ২০২০-২১ সালে আমাদের রেমিট্যান্সের পরিমাণ প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। এই অর্জন আমি মনে করি একদিকে আমরা সহজ করেছি এবং পাশাপাশি ২ শতাংশ প্রণোদনা কাজে লেগেছে। কারণ রেমিট্যান্স পাঠাতে একটি খরচ করতে হয় সেটি কাভার করতে পারছে। এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ বিলিয়ন ডলার। সেটা করতে গেলে আমরা দেখলাম আমরা যদি ইনসেনটিভ আরেকটু বাড়িয়ে দেই তাহলে বর্ধিত যে খরচ তারা সেটি কাভার করতে পারবে। তিনি বলেন, এই রেমিট্যান্সটা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক এলাকায় কত বড় ভূমিকা রাখে সেটি অর্থনীতিবিদরা বুঝবেন এবং তারা আমার সঙ্গে একমত পোষণ করবেন যে, এটি অসাধারণ ভালো কাজ হয়েছে। আমরা একদিকে এটাকে সঠিক চ্যানেলে আনার চেষ্টা করছি, তাহলে জানতে পারি কতটা আসা উচিত আর কতটা পেলাম। যেটা পাচ্ছিলাম না সেটা ইনফরমাল চ্যানেলে চলে যাচ্ছিল। আমরা সেই চ্যানেলটাকে অনুৎসাহিত করবো এবং ফরমাল চ্যানেলেই পুরোটা অর্জন করতে চাই। সেজন্যই প্রণোদনা ২ শতাংশ ছিল সেখানে থেকে বাড়িয়ে ২.৫ শতাংশ করা হয়েছে, আজ থেকে (গতকাল শনিবার) এটি কার্যকর হবে। আশা করি এই অর্থবছরে ২৬ বিলিয়ন অর্জন হবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন অসৎ ব্যবসায়ীরা ভিন্ন পথে টাকা পাচার করছেন এবং রেমিট্যান্স থেকে সেটা কাভার করা হচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ থেকে টাকা পাচার হয় এটা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। আপনাদের (মিডিয়া) থেকে তথ্য নিয়েই আমরা ব্যবস্থা করছি। গত কয়েকদিন আগেও কয়েকটি মামলার রায় হয়েছে, অনেকেই জেলে আছে। আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় যেটি সম্ভব তা বাস্তবায়ন করছি। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে কে দোষী বা নির্দোষ সেটি কীভাবে প্রমাণ করবো আমার যে চিন্তা সেটি হলো এখন বিদেশে টাকা রাখলে কেউ সেই টাকার ওপর কোনো লাভ পাচ্ছে না বরং দেশে ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ দিতে হয়। এই টাকাগুলো আমাদের কষ্টার্জিত টাকা, আমাদের ভাইবোন যারা বিভিন্ন ব্যবসা ও পেশায় জড়িত তারাই এ অর্থটি পাঠায়। আমরা চাই এই অর্থ দেশের মানুষের কাজে আসুক। দেশের সরকারের কাছে আসুক। সরকার যদি এই অর্থটি সম্পর্কে জানতে পারে তাহলে সরকার অর্থবহভাবে এই অর্থ ব্যবহার করতে পারবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ইম্পোর্ট বাড়বে, ইম্পোর্ট বাড়া ভালো। ইম্পোর্ট বাড়লে এক্সপোর্টও বাড়বে। আমাদের এক্সপোর্টও বেড়েছে। আমরা যতই রপ্তানি করি তার সিংহ ভাগই ইম্পোর্ট খাতে চলে যায়। তবুও আমাদের এক্সপোর্ট বাড়াতে হবে, আমরা সেই কাজটি অব্যাহত রেখেছি। আমরা কয়েকটি খাতকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছি। এবং সেখানেও বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিয়ে থাকি। এগুলোর মূল কথাটা হলো একটু সাহায্য-সহযোগিতা করা। আমাদের উদ্দেশ্য হলো দেশের টাকা যারা যেখান থেকে অর্জন করুক দেশে আসুক। দেশে আনার জন্য যা যা বাস্তবায়ন করা দরকার আমরা করবো। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রবৃদ্ধির ফলে লাভবান হচ্ছেন মুষ্টিমেয় লোক, এমন একটি প্রবৃদ্ধি নিয়ে আমরা এসডিজি অর্জন কিংবা উন্নত বিশ্বের কাতারে গিয়ে সাসটেইন করতে পারবো কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ থেকে আমাদের যে স্বীকৃতি দিয়েছে সেখানে কিন্তু এ ধরনের প্রশ্ন ছিল না। আমাদের ইকোনমিক যে ইনডেস্ক সেটি বিবেচনা করা হয়েছে এবং সেই বিবেচনায় আমাদের মাথাপিছু আয়সহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করেই আমাদের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য তারা বিবেচনা করেছে। আমি মনে করি, আমাদের কাঙিক্ষত লক্ষ্যপথেই আমরা আছি। আমাদের জাতির পিতার দেখানো পথে প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে নিয়ে যাচ্ছেন, সেই স্বপ্নের জায়গায়। আমরা জাতির কাছে কমিটেট ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত করবো। সেটি করলে একটি ইক্যুয়িটেবল জাস্টিজ এনশিওর করে আমাদের অর্থনীতি আরেও কীভাবে বেগবান হতে পারে সেভাবে এগিয়ে যাবো। আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের স্বপ্ন পূরণ করা, ২০৩১ সালে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত বিশ্বের কাতারে আমরা পৌঁছাবো। আমাদের স্বপ্ন হচ্ছে সেই সময় পৃথিবীর ২০টি উন্নত দেশের একটি হবে বাংলাদেশ। এ অর্জন আমরা করবোই করবো। নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি সারাবিশ্বে আছে। আমাদের এখানে নাই। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও কম বাড়ছে; সহনীয় পর্যায়ে আছে। অন্য কোনো দেশের সঙ্গে মেলালে দেখবেন এখন মূল্যস্ফীতিতে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছে। আমরা গত ১৫ বছর ধরে আমাদের ৫ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতির রেট। পৃথিবীর কোনো দেশ এমন খুঁজে পাওয়া যাবে না, এটি একটি অসাধারণ দেশ। তিনি বলেন, আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে, এ দেশের মানুষের দক্ষতা বেড়েছে, উৎপাদনশীলতা বেড়েছে। আমাদের আশপাশের দেশ দেখেন, তাদের যে অবস্থান সেটি আমরা দখল করে নিচ্ছি। আমরা চ্যালেঞ্জগুলো ভালোভাবেই নিই, এগুলো উত্তরণে আমরা ফ্লেক্সিবল অ্যাপ্রোচে আছি। আমরা চ্যালেঞ্জগুলোকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে চাই। অতীতেও আমরা এতে সফলতা পেয়েছি। আগামীতেও এটাকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগাবো। আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য ৪৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। আমরা ৬০ বিলিয়নে যাবো। আমাদের রপ্তানিও কমবে না কিছুই কমবে না। আমাদের হোঁচট খেতে হবে না এবং আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো না। জ¦ালানির দাম বাড়ানো সঠিক ছিল কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থমন্ত্রী হিসেবে আমি নিজের কাজ নিজে করি না, আপনাদের (মিডিয়া) থেকে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে আপনাদের মতামত নিয়ে আমরা কাজ করি। এটি নিয়ে আমাদের সরকারের সংশ্লিষ্ট যারা কাজ করেন তারা বিষয়টি দেখবেন। আমি অর্থমন্ত্রী হলেও সব বিষয়ে আমি হস্তক্ষেপ করি না, সব বিষয় দেখি না। আমার যে অংশটুকু সেটুকু নিয়ে আমি নিয়োজিত থাকি। এ বিষয়টি যারা বিবেচনা করার তারা দেখবেন কী করা যায়। প্রেস ব্রিফিংয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বক্তব্য দেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category