• সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০৫ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার

চিনির দাম বাড়তে শুরু করলেও অর্থাভাবে আমদানিতে আগ্রহী নয় বিএসএফআইসি

Reporter Name / ১৪৭ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশে রমজান মাসেই সবচেয়ে বেশি চিনির চাহিদা থাকে। আর আসন্ন রমজান ঘিরে ইতিমধ্যে বাজারে চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে রোজায় চিনির দাম স্থিতিশীল রাখতে শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনকে (বিএসএফআইসি) আমদানির সুপারিশ করেছিল। কিন্তু বিএসএফআইসি তাতে আগ্রহী নয়। সংস্থাটির সংশ্লিষ্টদের মতে, চিনি আমদানি লাভজনক হবে না। তাছাড়া চিনি আমদানির মতো আর্থিক সক্ষমতাও বিএসএফআইসির নেই। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে দেশে চিনির দাম ঊর্ধ্বমুখী। রমজানে ব্যাপকভাবে চাহিদা বাড়ার কারণে পণ্যটির দাম আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রোজায় চিনির বাজার স্থিতিশীল রাখতেই বিএসএফআইসি চিনি আমদানি করতে বলা হলেও সংস্থাটি আগ্রহী নয়। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির অজুহাত, বর্তমানে চিনি আমদানি করার মতো আর্থিক সংস্থান বিএসএফআইসির নেই। আর আমদানি করতে হলে সরকারকে করমুক্ত চিনি আমদানির সুযোগ দিতে হবে। কারণ বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারদর অনুযায়ী ট্যাক্স, ভ্যাট, কাস্টম ডিউটিসহ প্রতি কেজি চিনির সম্ভাব্য আমদানি মূল্য দাঁড়াবে ৯২ টাকা ৮০ পয়সা। কিন্তু বিএসএফআইসির চিনির বর্তমান বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজি ৭৪ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে চিনি আমদানি করলে বিএসএফআইসির ওপর আরো আর্থিক চাপ বাড়বে। তবে প্রয়োজনে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে চিনি আমদানি করতে পারে সরকার।
সূত্র জানায়, একসময় লাভজনক হলেও বিগত কয়েক দশক লোকসানে চলছে বিএসএফআইসি। গত ৫ বছরে বিএসএফআইসির ৩ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা লোকসান গুনেছে। শুধু ২০১৯-২০ অর্থবছরেই সংস্থাটির লোকসান হয়েছে ৯৭০ কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতিতে বিএসএফআইসির কাছে চিনি আমদানির পর্যাপ্ত অর্থও নেই। আর চিনি আমদানি করতে হলে ৪শ থেকে ৫শ কোটি টাকা প্রয়োজন। কিন্তু এতো কোনো ব্যাংক বিএসএফআইসিকে ঋণও দেবে না।
সূত্র আরো জানায়, শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি বিএসএফআইসিকে চিনি আমদানির কথা বললেও বাস্তবে প্রয়োজন নেই। কারণ দেশে র-চিনির আমদানি বেড়েছে। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত আমদানি করা চিনির পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৬৪ হাজার ২৬৭ টন। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৫ টন বেশি। ওই সময়ে আমদানি করা চিনির পরিমাণ ছিল ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৯২ টন। তাছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন মিলে বিএসএফআইসির ১৯ হাজার ৭৯৭ টন চিনির মজুত রয়েছে। সব মিলিয়ে দেশে চিনির ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা কম।
এদিকে এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমানের মতে, চিনির বাজার স্থিতিশীল নয়। আর তা আরো অস্থিতিশীল হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে আমদানিতে বিএসএফআইসির অর্থসংকটের অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ বিএসএফআইসি সরকারি সংস্থা। আর সরকার চাইলেই অর্থের সংস্থান করতে পারে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে বিএসএফআইসির চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান অপু জানান, বিএসএফআইসি ইতিপূর্বে দু’দফা চিনি এনে প্রচুর লোকসান গুনেছে । ভ্যাট-ট্যাক্স মিলে এখন চিনি আমদানি করতে খরচ হবে কেজিপ্রতি ৯২ টাকাওর বেশি। আর বিক্রি করতে হবে ৭৪ টাকায়। যা বিএসএফআইসির পক্ষে সম্ভব হবে না। সেজন্যই চিনি আমদানি করতে চাই না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category