নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) বাস্তবায়নসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় জাতিসংঘ এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা প্রদান করবে। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক জিন লুইস এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ এডিমন গিন্টিং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সাথে পৃথক দুটি সভায় একথা বলেন। বৈঠকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মিজানুল হক চৌধুরী, যুগ্মসচিব জাকিয়া আফরোজ, এডিবির কান্ট্রি স্পেশালিস্ট সুন চ্যাং হং, এডিবির এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের টিম লিডার গোবিন্দ বর-সহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ প্রণীত ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যান (ন্যাপ) বাস্তবায়নে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। ন্যাপ বাস্তবায়নে জাতিসংঘ ও এডিবির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি। কপ-২৭ সম্মেলনে বাংলাদেশের যোগদানের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত এবং গ্লাসগো-শার্ম আল শেখ ওয়ার্ক প্রোগ্রাম অন দ্যা গ্লোবাল গোল অন অ্যাডাপটেশন বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছে। মন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ক্ষয়ক্ষতির জন্য একটি সুনির্দিষ্ট অর্থায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করা আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ফাইন্যান্সের হিসাবমতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় ৮.৮ থেকে ৯.৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। মন্ত্রী বলেন, ধরিত্রীকে বাঁচাতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের হার ৪৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বিশ্ব সম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক জিন লুইস বলেন, কপ-২৭ সম্মেলন শেষে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করলে জাতিসংঘ সেমতো বাংলাদেশকে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা, ডেল্টা প্ল্যান, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রভৃতি থেকে অগ্রাধিকার নির্ধারণপূর্বক এ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের সহায়তার জন্য তিনি বিশেষ আগ্রহ ব্যক্ত করেন। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ এডিমন গিন্টিং বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বে রোল মডেল। বাংলাদেশের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি বিশ্বের অন্যান্য দেশ অনুসরণ করে। তিনি বলেন, এডিবি বাংলাদেশকে বিভিন্ন প্রকল্পে সহায়তা করছে। সরকার জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় কোনো প্রকল্প প্রস্তাব প্রেরণ করলে এডিবি তাতে অর্থায়ন করবে। এডিবির কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ এ সময় হাওর এলাকায় জলাশয়ের কোনো ক্ষতি না করেই পানির উপরে সোলার প্যানেল স্থাপনে কাজ করার বিষয়ে প্রস্তাব পেশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এডিবির সহায়তা ক্রমবর্ধমান গতিতে অব্যাহত থাকবে।