নিজস্ব প্রতিবেদক :
বন্যার পানিতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের আদাবাড়ি গ্রামের একটি ব্রিজ ধসে পড়েছে। ফলে গত তিনদিন ধরে কড়াইল ও হিলড়া গ্রামসহ ১০ গ্রামের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভোগান্তি পোহাচ্ছেন গ্রামবাসী। এলজিইডি সূত্র জানায়, জনদুর্ভোগ লাগবে এলজিইডি গত ১৯৮৯-৯০ অর্থবছরে কড়াইল-আদাবাড়ি সড়কের আদাবাড়ি এলাকায় আনুমানিক ২৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৬ ফুট প্রশস্ত ব্রিজটি নির্মাণ করে। পরবর্তীতে ওই রাস্তাটি কার্পেটিং করা হয়। রাস্তা পাকা হওয়ায় মহেড়া ইউনিয়নের হিলড়া, গোড়াকী, আদাবাড়ি, কড়াইল, বানিয়ারা, ডোকলাহাটি গ্রামের লোকজন ছাড়াও উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া, বৈল্যানপুর, ফতেপুর ও তরফপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের লোকজন নিয়মিত চলাচল করেন। এছাড়া গোড়াকী মাদরাসা, নতুন আদাবাড়ি মিকতাহুল জান্নাত হাফেজিয়া মাদরাসা, আদাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হিলড়া মদিনাতুল উলুম কওমি মাদরাসা রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় তিন সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থী ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে থাকে। গত বছরের বর্ষায় পানির ¯্রােকে ব্রিজটির নিচ থেকে মাটি সরে যায়। এতে ব্রিজটির পূর্ব-দক্ষিণ পাশের কিছু অংশ ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এলজিইডি মির্জাপুর অফিসের লোকজন ব্রিজটি পরিদর্শনে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন। এরপর এলাকাবাসী ঝুঁকি নিয়ে ওই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এদিকে গত এক সপ্তাহের প্রবল বৃষ্টি এবং উজান থেকে বন্যার পানি আসায় ব্রিজের নিচ দিয়ে প্রবল বেগে তা প্রবাহিত হতে থাকে। ফলে বুধবার বিকেলে ব্রিজটি সম্পূর্ণ ধসে পড়ে। এ ছাড়া এই পানির ¯্রােতে ব্রিজের দুই পাশের পাকা রাস্তাও ভেঙে পড়ছে। এতে ওই এলাকার আদাবাড়ি ছাড়াও হিলড়া, ডোকলাহাটি, কড়াইল, থলপাড়া, বৈল্যানপুর ও ফতেপুরসহ ১০ গ্রামের সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে বলে। হিলড়া গ্রামের নুরু কাজী, আজাহার মিয়া, পশু চিকিৎসক মোক্তাদির, সাইদুল ইসলাম, লুৎফর রহমান, আবদুল মান্নান ও পারভীন আক্তার জানায়, ব্রিজ ধসে যাওয়ায় ছোট ছোট নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে। হিলড়া গ্রামের পুত্রবধূ লাভলী আক্তার বলেন, কয়েকদিন আগে ব্রিজের ওপর দিয়ে বাবাবাড়ি গিয়েছিলাম। আজ স্বামীর বাড়ি আসতেই দেখি ব্রিজটি ভেঙে গেছে। আব্দুস সাত্তার মিয়া জানান, ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় হিলড়া ও কড়াইল গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের লোকজনের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুদিন আগে ব্রিজটি ভেঙে পড়লেও সরকারি কর্মকর্তারা আসেননি। মহেড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. বাদশা মিয়া বলেন, গত বছর ব্রিজটির একাংশ ভেঙে গেলেও উপজেলা প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আজ পুরো ব্রিজ ধসে গেছে। মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, গত বছর ব্রিজটি পরিদর্শন শেষে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। ব্রিজটি ধসে পড়েছে তা আমার জানা নেই। তবে এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে একটি বাঁশের সাকো নির্মাণ করে দিবো। পরবর্তীতে কী ধরনের ব্রিজ নির্মাণ করা যায় তা সম্ভাব্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।