০৭:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | ই-পেপার

টিপু-প্রীতি হত্যার ঘটনায় অস্ত্র ও মোটরসাইকেল চালকের খোঁজ মেলেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর শাজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যাকা-ের ঘটনায় শুটার মাসুম মো. আকাশসহ ছয় জন এরইমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। হত্যাকা-ের পর মোটরসাইকেলের পেছনে বসে পালিয়ে যায় মাসুম। সেই মোটরসাইকেল চালককে শনাক্ত করতে পারলেও এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। এছাড়া, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এরইমধ্যে এ ঘটনায় দামাল নামে একজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই অস্ত্রটি হত্যাকা-ে ব্যবহৃত হয়েছিল কিনা তা ফরেনসিক বিভাগে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একাধিক শুটার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল বলে জানা গেছে। বাকিরা কারা, তা বের করতেও চলছে তদন্ত। গোয়েন্দারা বলছেন, কাট-আউট পদ্ধতিতে এ হত্যাকা- সংঘটিত হলেও মূলত দুবাই বসে কিলার মুসা এ হত্যাকা-ের ছক কষে। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী শামীমের সহায়তায় মাসুম মো. আকাশ হত্যাকা- ঘটায়। ঘটনার ১২ দিন আগে ১২ মার্চ চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হয়ে দেশ ছেড়ে দুবাই চলে যায় মুসা। এ সময় হত্যাকা-ের চুক্তি অনুযায়ী পাওয়া পাঁচ লাখ টাকা সঙ্গে নিয়ে যায়। আরও চার লাখ টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো হয় মুসাকে। হত্যাকা- ঘটানোর পর মোবাইল ফোনে জানানো হয় ‘ইট ইজ ডান’। মাসুমের ঘনিষ্ট লোক হওয়ায় তার দুর্বলতাগুলো জানা ছিল মোল্লা শামীমের। চলমান মামলার কারণে মাসুম তার এলাকা সবুজবাগে যেতে পারতো না। এমনকি বাড়িতেও যেতে পারতো না পরিবারের কাছে। তার এ বিষয়টিকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে শামীম। মামলা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাসুমকে বলা হয় একজনকে হত্যা করতে হবে। এর আগে টিপুকে হত্যা করতে কয়েকদফা চেষ্টা করেও সফল হয়নি মাসুম। ২৪ মার্চ রাতে মতিঝিলের রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় ফেরার পথে শাজাহানপুর রেলগেটের সামনে মাইক্রোবাসের সামনে বসা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে লক্ষ করে এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায় মাসুম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এ হত্যাকা-ের পেছনে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। বিদেশে অবস্থান করা শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান, ফ্রিডম মানিক, বিকাশ, মোল্লা মাসুদের সম্পৃক্ততাও পাওয়া গেছে। হত্যাকা-ের ১৫ লাখ টাকা কোথা থেকে এসেছে, কারা দিয়েছে তা এখনও তদন্তাধীন। টিপু হত্যাকা-ে জড়িত থাকায় এরইমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে শুটার মাসুম। সে আদালতকে জানায়, টিপুকে গুলি চালানোর সময় সে ট্রিগার চেপে ধরে রেখেছিল। পরে জানতে পারে টিপুর পাশাপাশি রিকশায় থাকা আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ছয় জন। এরমধ্যে মতিঝিলের স্থানীয় যুবলীগ নেতা আরফান উল্লাহ খান ওরফে দামাল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ১০ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আরও গ্রেফতার হয়েছে, নাসির উদ্দিন ওরফে কিলার নাসির, সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনবলেন, ‘টিপু হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছে থেকেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সমুদ্রসম্পদ আহরণের জন্য গবেষণার ওপর জোর দিতে হবে:চসিক মেয়র

টিপু-প্রীতি হত্যার ঘটনায় অস্ত্র ও মোটরসাইকেল চালকের খোঁজ মেলেনি

আপডেট সময়ঃ ০৮:০৪:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর শাজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যাকা-ের ঘটনায় শুটার মাসুম মো. আকাশসহ ছয় জন এরইমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। হত্যাকা-ের পর মোটরসাইকেলের পেছনে বসে পালিয়ে যায় মাসুম। সেই মোটরসাইকেল চালককে শনাক্ত করতে পারলেও এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। এছাড়া, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এরইমধ্যে এ ঘটনায় দামাল নামে একজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই অস্ত্রটি হত্যাকা-ে ব্যবহৃত হয়েছিল কিনা তা ফরেনসিক বিভাগে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একাধিক শুটার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল বলে জানা গেছে। বাকিরা কারা, তা বের করতেও চলছে তদন্ত। গোয়েন্দারা বলছেন, কাট-আউট পদ্ধতিতে এ হত্যাকা- সংঘটিত হলেও মূলত দুবাই বসে কিলার মুসা এ হত্যাকা-ের ছক কষে। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী শামীমের সহায়তায় মাসুম মো. আকাশ হত্যাকা- ঘটায়। ঘটনার ১২ দিন আগে ১২ মার্চ চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হয়ে দেশ ছেড়ে দুবাই চলে যায় মুসা। এ সময় হত্যাকা-ের চুক্তি অনুযায়ী পাওয়া পাঁচ লাখ টাকা সঙ্গে নিয়ে যায়। আরও চার লাখ টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো হয় মুসাকে। হত্যাকা- ঘটানোর পর মোবাইল ফোনে জানানো হয় ‘ইট ইজ ডান’। মাসুমের ঘনিষ্ট লোক হওয়ায় তার দুর্বলতাগুলো জানা ছিল মোল্লা শামীমের। চলমান মামলার কারণে মাসুম তার এলাকা সবুজবাগে যেতে পারতো না। এমনকি বাড়িতেও যেতে পারতো না পরিবারের কাছে। তার এ বিষয়টিকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে শামীম। মামলা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাসুমকে বলা হয় একজনকে হত্যা করতে হবে। এর আগে টিপুকে হত্যা করতে কয়েকদফা চেষ্টা করেও সফল হয়নি মাসুম। ২৪ মার্চ রাতে মতিঝিলের রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় ফেরার পথে শাজাহানপুর রেলগেটের সামনে মাইক্রোবাসের সামনে বসা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে লক্ষ করে এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায় মাসুম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এ হত্যাকা-ের পেছনে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। বিদেশে অবস্থান করা শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান, ফ্রিডম মানিক, বিকাশ, মোল্লা মাসুদের সম্পৃক্ততাও পাওয়া গেছে। হত্যাকা-ের ১৫ লাখ টাকা কোথা থেকে এসেছে, কারা দিয়েছে তা এখনও তদন্তাধীন। টিপু হত্যাকা-ে জড়িত থাকায় এরইমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে শুটার মাসুম। সে আদালতকে জানায়, টিপুকে গুলি চালানোর সময় সে ট্রিগার চেপে ধরে রেখেছিল। পরে জানতে পারে টিপুর পাশাপাশি রিকশায় থাকা আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ছয় জন। এরমধ্যে মতিঝিলের স্থানীয় যুবলীগ নেতা আরফান উল্লাহ খান ওরফে দামাল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ১০ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আরও গ্রেফতার হয়েছে, নাসির উদ্দিন ওরফে কিলার নাসির, সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনবলেন, ‘টিপু হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছে থেকেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি।’