• শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৪:৩৬ অপরাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না: আইনমন্ত্রী নাইজেরিয়ান চক্রের মাধ্যমে চট্টগ্রামে কোকেন পাচার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বললেন ব্যারিস্টার সুমন পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় নদী শাসনে ব্যয় বাড়ছে পিএসসির উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীরসহ ৬ জনের রিমান্ড শুনানি পিছিয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যবহার করছে না রেল ট্রানজিট রাজাকারের পক্ষে স্লোগান সরকারবিরোধী নয়, রাষ্ট্রবিরোধী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র-আলোকচিত্র প্রদর্শনী

টেকসই উন্নয়নে সম্পত্তিতে প্রয়োজন নারীর সমানাধিকার

Reporter Name / ৫৯ Time View
Update : সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী হলেও অধিকাংশ অধিকার বঞ্চিত। বাংলাদেশে সম্পত্তিতে নারীর সমঅধিকার, আইনগত অধিকার ও নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপের দাবি জানিয়ে স্মারক বক্তৃতা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদেকা হালিম। উন্নয়ন টেকসই করতে সম্পত্তিতে নারীকে সমানাধিকার নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান তিনি। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ‘সম্পত্তিতে নারীর সমঅধিকার এবং সিডও সনদের সংরক্ষণ প্রত্যাহারপূর্বক পূর্ণবাস্তবায়নের প্রাসঙ্গিকতা’ বিষয়ক দদিল মনোয়ারা মনু স্মারক বক্তৃতায় নারী অধিকার নিয়ে অধ্যাপক সাদেকা হালিম এ প্রতিবেদন দেন। পুরুষদের দ্বারা নারী যে অসমতার শিকার হয় তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীদের ভাই বা বাবা জড়িত উল্লেখ করে অধ্যাপক হালিম বলেন, নারীর উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদ তাদের অধিকার শুধু পরিবারে না, সমাজেও তাদের অবস্থান নির্দেশ করে। পৃথিবীর প্রায় সকল সমাজেই নারীরা সম্পত্তিতে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। সাদেকা হালিম বলেন, উন্নয়ন হলেই হয় না। নারীর সমতা নিশ্চিত করার মাধ্যমেই টেকসই উন্নয়নের পথ সুগম হয়। সংবিধানের ধারা ২৭ অনুযায়ী নারীকে আইনের দৃষ্টিতে সমতা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করবে। কিন্তু নারীকে পেছনে রাখার আইনও এ সময় দেখা গেছে। দীর্ঘসময় পর সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরে এলেও নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক মানসিকতা সমাজে রয়ে গেছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব ছিল, কিন্তু এ পদক্ষেপ নিতে রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুরুষের তুলনায় নারী কাজ বেশি করলেও অনেক ক্ষেত্রে নারী যথাযথ পারিশ্রমিক পায় না। সরকারি দপ্তরগুলোতে যেভাবে প্রধানরূপে নারী প্রশাসক প্রয়োজন ছিল, সেভাবে পদায়ন হয়নি। সংরক্ষিত নারী আসন সাময়িক হিসেবে ঠিক থাকলেও নারী যাতে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে, সে ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। দেশের পোশাকশিল্পে প্রায় ২৫ লাখ নারী কাজ করছে অথচ তাদের সুপারভাইজার পুরুষ উল্লেখ করে এ অধ্যাপক বলেন, এজন্য নারী যথাযথ অধিকার পায় না। ক্ষমতা স্তরে পুরুষরা ওপরে আর নারীরা নিচেই থেকে যায়। কৃষিকাজে যুক্ত নারীদের ৪৮ শতাংশই জমির মালিকানা থেকে বঞ্চিত বলেও উল্লেখ করে সাদেকা হালিম বলেন, গ্রামীণ এলাকায় কৃষি চাষযোগ্য জমির ৭.২ শতাংশ জমি নারীরা চাষ করে। জমিতে নারীদের মালিকানা থাকলে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হওয়ার সুযোগও বাড়ে। অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আশার আলো সঞ্চারিত হয়েছে। আশ্রয়ণের ঘরের দুই কাঠা জমি স্বামী-স্ত্রী উভয়ের নামে হবে। তবে গোলমাল বাধলে জমি স্ত্রীর নামে যাবে। নতুন বাড়ি পেয়ে নতুন বউ আনবে তা হবে না। তিনি বলেন, মুসলিম আইনে নারীদের সম্পত্তিতে অধিকার প্রদান করা হলেও, নারীরা সম্পদের প্রকৃত মালিকানা পায় খুবই কম। মুসলিম উত্তরাধিকার তিন ধরনের সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে বৈবাহিক সম্পর্ক, রক্তের সম্পর্ক এবং দূর সম্পর্ক। বৈবাহিক সম্পর্কে স্ত্রী ও স্বামীর ক্ষেত্রে উত্তরাধিকার আইনটির সমালোচনা আমরা এখানে প্রাসঙ্গিক মনে করছি। মুসলিম আইনে নারীদের সম্পত্তিতে অধিকার প্রদান করা হলেও, নারীরা সম্পদের প্রকৃত মালিকানা পায় খুবই কম পায় উল্লেখ করে অধ্যাপক হালিম বলেন, কোনো পুরুষ সন্তানহীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে কিংবা তার কোনো ছেলে সন্তান না থাকলে, ওই লোকের স্ত্রী মোট সম্পত্তির ১৪ ভাগ পাবেন। কিন্তু, কোনো সন্তান থাকলে বা কোনো ছেলে সন্তান থাকলে, স্ত্রী মোট সম্পত্তির ১৮ ভাগ পাবেন। অর্থাৎ নারীকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। অন্যদিকে একজন হিন্দু নারী স্বাধীনভাবে তার সম্পত্তি বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। উল্লেখ করে অধ্যাপক হালিম বলেন, কিন্তু হিন্দু পুরুষদের ক্ষেত্রে এমন কোনো আইন নেই। পুরুষরা স্বাধীনভাবে ক্রয়, ভোগদখল ও বিক্রি করতে পারে। হিন্দু আইন পরিষ্কারভাবেই অসম একটি আইন। পিতৃসূত্রে একজন নারী কখনোই জমির মালিকানা পায় না, বা স্বামীর মৃত্যুর পরও স্বামীর জমির কোনো মালিকানা তারা পায় না। স্বামীর মৃত্যুবরণের পর নারীরা সাধারণত পরিবারের অন্য সদস্যদের অনুগ্রহে বেঁচে থাকে। ১৯৫৬ সালে সংশোধনের মাধ্যমে সম্পত্তিতে নারী সমঅধিকার ভারতে প্রতিষ্ঠিত হলেও বাংলাদেশে হয়নি। নারীদের ভূমি অধিকার প্রতিষ্ঠায় ৪টি প্রস্তাব উপস্থাপন করে অধ্যাপক হালিম বলেন, সম্পদে লিঙ্গ সমতা বিধান করতে হবে, উত্তরাধিকার আইনে পরিবর্তন আনতে হবে, হিন্দু নারীদের আইনগত অধিকার দিতে হবে, আদিবাসী নারীদের জমিতে অধিকার দিতে হবে। আদিবাসীদের সম্পদে উন্নয়নকার্যের নামে জমি দখল বন্ধ করতে হবে। এ স্মারক বক্তৃতায় এএলআরডির সহ সভাপতি ড. রওশন আরা ফিরোজের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category