নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেওয়া হয়েছে। গত ৩ অক্টোবর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের পরিদর্শক নাজমুল নিশাত এ চার্জশিট দেন। চার্জশিটে অন্য দুই আসামি হলেন- নারীবিষয়ক পোর্টাল ‘উইমেন চ্যাপ্টার’র সম্পাদক সুপ্রীতি ধর, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সুচিষ্মিতা সিমন্তী। তবে নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করতে না পারায় উইমেন চ্যাপ্টারের উপদেষ্টা লীনা হককে মামলা থেকে অত্যাহতির আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। এদিকে, চার্জশিটভুক্ত তিন আসামিই পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছে সিটিটিসি। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, উইমেন চ্যাপ্টারে ‘ধর্ষকের কাছে নারীর কোনো ধর্ম নেই’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। অভিযোগ উঠেছে সেখানে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে। জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে চারজনকে আসামি করে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন মাসিক পত্রিকা ‘আল বাইয়েনাত’-এর সম্পাদক আল্লামা মুহম্মদ মাহবুব আলম। আদালত ওইদিন শাহজাহানপুর থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে ওই বছরের ২৬ এপ্রিল শাহজাহানপুর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলায় তসলিমা নাসরিন, নারীবিষয়ক পোর্টাল ‘উইমেন চ্যাপ্টার’-এর সম্পাদক সুপ্রীতি ধর লিপা, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সুচিষ্মিতা সিমন্তি ও উপদেষ্টা সম্পাদক লীনা হককে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ‘উইমেন চ্যাপ্টার নামক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সুপ্রীতি ধর, সুচিষ্মিতা সিমন্তী ও লীনা হক প্রায়ই ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষমূলক লেখা প্রকাশ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ এপ্রিল বিকেলে তসলিমা নাসরিনের ‘ধর্ষকের কাছে নারীর কোনো ধর্ম নেই’ শীর্ষক একটি লেখা প্রকাশ করেন। ওই নিবন্ধে ইসলাম ও ইসলাম ধর্মের নবীদের নিয়ে লেখিকার বক্তব্যে বাদীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগায় তিনি লেখিকা ও সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের সম্পাদক এবং উপদেষ্টা সম্পদকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিটিটিসি ইউনিটের পরিদর্শক নাজমুল নিশাত বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতি ক্ষুণœ করার অভিপ্রায়ে লিপ্ত থাকার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছিল। মামলা তদন্ত শেষে গত ৩ অক্টোবর তিনজনকে আসামি করে চার্জশিট জমা দিয়েছি। এজাহারভুক্ত একজন আসামির নাম-পরিচয় সংগ্রহ করা সম্ভব না হওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়।