নিজস্ব প্রতিবেদক :
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের রিট আবেদনের ওপর জারি করা রুলের ওপর আংশিক শুনানি হয়েছে। রুলের পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৯ জুন দিন নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট। আংশিক শুনানি শেষে আজ রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট আবদুল জব্বার ভুইয়া ও অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজল প্রমুখ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তাকে সহযোগিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলী। এছাড়াও দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। এর আগে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, ডা. জোবায়দা রহমান ও তার মা ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। পরবর্তী সময়ে জোবায়দার রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করে হাইকোর্ট। ওই রুলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে মামলা বাতিলে জারি করা রুল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জোবায়দা রহমানকে আট সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন তিনি। ওই আবেদনের উপর গত ১৩ এপ্রিল রায় দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়টি লিখেছেন বিচারপতি বোরহানউদ্দিন। রায়ে একমত পোষণ করেছেন প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের অপর সদস্য বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম। সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণ উঠে আসে। ‘ডা. জোবায়দা রহমান বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য’ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণ আপিল বিভাগ বলেন, দুর্নীতির মামলায় জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়নি বিচারিক আদালত। যেখানে অভিযোগ আমলে নেয়নি, সেখানে কী করে উনি (জোবায়দা) মামলা বাতিল চেয়ে ৫৬১ক ধারায় আবেদন করেছেন। আর যখন আবেদনটি করেছেন (হাইকোর্টে) তখন উনি আইনের দৃষ্টিতে তিনি (জোবায়দা রহমান) পলাতক। আইনের দৃষ্টিতে একজন পলাতক ব্যক্তির করা ওই আবেদন শুনে মামলার বিচার কাজ স্থগিতের পাশাপাশি রুল জারি করেছে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ। আমরা মনে করি, হাইকোর্টের এ ধরনের আদেশ প্রদান আইনানুযায়ী সঠিক ছিল না। কারণ, আইনের দৃষ্টিতে পলাতক ব্যক্তির আইনি প্রতিকার চাওয়ার কোনও সুযোগ নেই।