• মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
ডিসেম্বরকে লক্ষ্য রেখে জাতীয় নির্বাচনেরই প্রস্ততি নিচ্ছে ইসি দদুর্নীতির বড় অভিযুক্তরা পাশের দেশে আছেন: দুদক চেয়ারম্যান এবারও আসছে তীব্র তাপপ্রবাহ, নেই তেমন প্রস্তুতি লিবিয়ায় দুই গণকবর থেকে ৪৯ অভিবাসী-শরণার্থীর মরদেহ উদ্ধার তিন জিম্মির বিনিময়ে ১৮৩ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিলো ইসরায়েল শিক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্যে সাবেক এমপি চয়নকে গ্রেফতার করলো পুলিশ হাওরে কৃষি জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার ‘ডেভিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপারেশন চলবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই ২৫ কর্মকর্তার লকারই পায়নি দুদক কৃষিঋণ বিতরণ কমায় বোরো উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা

দেশে বৈধ পথের চেয়ে অবৈধ পথেই বেশি কল আসছে

Reporter Name / ১৮৫ Time View
Update : শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশে অবৈধ ভিওআইপি কারবারীরা সক্রিয় থাকায় বৈধ পথের চেয়ে অবৈধ পথেই বেশি কল আসছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি অভিযানের ফলে বৈধ পথে কলের পরিমাণ কিছুটা বাড়লে ভিওআইপির অবৈধ কারবারিদের এখনো সক্রিয়। আর অভিযানে কর্মচারী পর্যায়ের কিছু লোক ধরা পড়লেও মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। দেশে বৈধ ও অবৈধ পথে আসা আন্তর্জাতিক কলের দৈনিক ৫ থেকে ৬ কোটি মিনিট বাজার রয়েছে। তবে ওই হিসাবের মধ্যে ওটিটি (ওভার দ্য টপ) কল অন্তর্ভুক্ত নয়। কিন্তু বৈধ পথের তুলনায় অবৈধ পথেই বেশি কল আসছে। দৈনিক অবৈধ পথে আসা ৩ কোটি মিনিট কল থেকে বিদ্যমান রেটে সরকারের রাজস্ব হারানোর পরিমাণ বছরে ২১৮ কোটি টাকা এবং দেশের সব আইজিডাব্লিউর হারানো আয়ের পরিমাণ বছরে ১০৯ কোটি টাকা। বিটিআরসি এবং আইজিডাব্লিউ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সাম্প্রতিক সময়ে ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল বা ভিওআইপির অবৈধ কারবারিদের বিরুদ্ধে বিটিআরসি ও র‌্যাবের কয়েকটি সফল অভিযানের পর প্রতিদিন দেশে আসা বৈদেশিক ভয়েস কলের পরিমাণ গড়ে প্রায় ৭৫ লাখ মিনিট বেড়েছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ ২ কোটি ৭০ লাখ ৭৩ হাজার মিনিট কল আসে। তার আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর কল আসে ২ কোটি ৭০ লাখ ৬৪ হাজার মিনিট। গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ২ কোটি ৬৫ লাখ মিনিট কল এসেছে। অথচ অভিযানের আগে ওই কলের পরিমাণ ছিল প্রতিদিন গড়ে এক কোটি ৯০ লাখ মিনিটের মতো। গত ২৩ সেপ্টেম্বরের বিটিআরসি ও র‌্যাবের যৌথ অভিযানে রাজধানী ফকিরাপুল এলাকা থেকে প্রায় ২০ কোটি টাকার কলিং কার্ডসহ ভিওআইপির অবৈধ ব্যবসা চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সূত্র জানায়, অসাধু কারবারীরা অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় প্রচলিত সফটওয়্যারভিত্তিক সুইচের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করে অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক কল রাউট করে এবং ওই স্থাপনা পরিচালনা করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিতে যান্ত্রিক ভার্চুয়াল সফটওয়্যারভিত্তিক কৌশল অবলম্বন করে অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ও রিচার্জ সেবা দেয়। চক্রটি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রচলিত ডায়ালার কলগুলো বাংলাদেশে অবৈধভাবে আউট করে এবং ওই অ্যাপে রিচার্জের জন্য বিভিন্ন অঙ্কের কলিং কার্ড বিক্রি করে। তাছাড়া তারা অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক রিচার্জ সেবা দেয় এবং হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বিটিআরসির কারিগরি সক্ষমতা বাড়লে ভিআইপির অবৈধ কারবার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। ওই কারবার বন্ধে মোবাইল ফোন অপারেটররা ২০১০ সালের মে মাসে বিটিআরসিতে যে সিমবক্স ডিটেকশন সিস্টেম স্থাপন করে দিয়েছিল, তা গত ৩১ মে বন্ধ হয়ে গেছে। অপারেটররা আর ওই সিস্টেম চালু রাখার জন্য টাকা খরচ করতে রাজি নয়। তাছাড়া বেসরকারি ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডাব্লিউ) অপারেটরদের সংগঠন ‘আইওএফ’ এ পরীক্ষামূলকভাবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান ল্যাট্রো সার্ভিস ইনকরপোরেশনের একটি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা চালু ছিল। সেটাও বন্ধ। বর্তমানে মোবাইল ফোন অপারেটরদের এসআর বা সেলফ রেগুলেটরি ব্যবস্থার মাধ্যমে কোনো গ্রাহকের সিমের মাধ্যমে অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক কলের পর্যবেক্ষণ কিছুটা চালু আছে। ওসব সীমাবদ্ধতা থেকে উত্তরণের জন্য বিটিআরসি সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে নিজেদের অর্থায়নে একটি পর্যবেক্ষণব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, মোবাইল ফোন অপারেটরদের কার্যক্রম তদারকির জন্য বিটিআরসি সম্প্রতি কানাডাভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান টিকেসি টেলিকমের সঙ্গে টেলিকম মনিটরিং সিস্টেম ক্রয়সংক্রান্ত একটি চুক্তি করেছে। ওই সিস্টেমটি বাস্তবায়িত হলে মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ এবং রিপোর্টিং প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় হবে। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব তথ্য বাস্তব সময়ে পর্যবেক্ষণ করাও সম্ভব হবে। চুক্তি স্বাক্ষরের দিন থেকে পরের ১৮০ দিনের মধ্যে বা আগামী ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে ওই মনিটরিং সিস্টেম চালু হওয়ার কথা। তবে এর মাধ্যমে ভিওআইপির অবৈধ কারবার বন্ধ করা যাবে কি না সে সম্পর্কে বিটিআরসির কর্মকর্তারা নিশ্চিত নয়।
এদিকে এ প্রসঙ্গে বেসরকারি আইজিডাব্লিউ অপারেটরদের ফোরাম আইওএফের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মুশফিক মঞ্জুর মতে, অভিযান চলাকালে ভিওআইপির অবৈধ কার্যক্রমে সাময়িক ভাটা পড়ে। কিছু কল অবৈধ পথ থেকে বৈধ পথে পরিচালিত হয় এবং বৈধ পথে আসা কলের পরিমাণ সাময়িক বৃদ্ধি হয়। গত ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে বিটিআরসি ও র‌্যাবের যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণে অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জাম ধরা পড়ার পর ওই মাসে বৈধ পথে দৈনিক ৮০ লাখ মিনিট কল বেড়ে যায়। ফলে রাজস্ব আয়ের পরিমাণও দৈনিক ৪২ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ৫৮ লাখ টাকায় উন্নীত হয়। কিন্তু মার্চে আবারো কল কমতে থাকে। আগস্ট মাসে কলের পরিমাণ দাঁড়ায় দৈনিক এক কোটি ৯০ লাখে। গত ফেব্রুয়ারির অভিযানের মতো এবারের অভিযানেও বৈধ পথে আসা আন্তর্জাতিক কল কিছুটা বেড়েছে।
অন্যদিকে সাম্প্রতিক অভিযান ও কারিগরি দক্ষতা বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার জানান, ভিওআইপির অবৈধ কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে ও থাকবে। এটা কখনই বন্ধ হবে না। বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা এটা নিয়ে কাজ করছে। আশা করা যায় আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে বিটিআরসি এ বিষয়ে পুরোপুরি সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থেই বিটিআরসি এ কারবার পুরোপুরি বন্ধের পক্ষে। রাজস্ব ক্ষতিও এ ক্ষেত্রে উপেক্ষার নয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category