নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীতে দ্রুত বাড়ছে এটিএম বুথের পানির গ্রাহক। ওই পানিতে দুর্গন্ধ নেই। আবার ফুটিয়ে পান করারও প্রয়োজন হয় না। দামে কম ও পানেও ভালো হওয়ায় এটিএম বুথের পানির গ্রাহক দিন দিন বেড়েই চলেছে। মূলত রাজধানীর যেসব এলাকায় পানির সঙ্কট আর পানিতে গন্ধ ও দূষণ রয়েছে ওসব এলাকাতেই বেশিসংখ্যক মানুষ গ্রাহক হচ্ছে। ওসব এলাকার মধ্যে শ্যাওড়াপাড়া, মুগদা, কদমতলা, ফকিরাপুল ও পুরান ঢাকা রয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঢাকা ওয়াসা রাজধানীতে আরো এটিএম বুথ তৈরির পরিকল্পনা করছে। পানির গ্রাহক এবং ড্রিংকওয়েল সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঢাকা ওয়াসা রাজধানীতে পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করে। কিন্তু ওই পানি দূষিত ও দুর্গন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি সংস্থা ড্রিংকওয়েল ওয়াসার পানি শোধন করে এটিএম কার্ড আর বুথের মাধ্যমে বিক্রি করছে। আর তা ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। রাজধানীর মুগদায় বিগত ২০১৭ সালে প্রথম এটিএম পানি বুথ উদ্বোধন হয়। বর্তমানে ঢাকায় ড্রিংকওয়েল ২২৬টি বুথের মাধ্যমে ২ লাখ ৮৪ হাজার গ্রাহককে পানি সরবরাহ করছে। প্রতিদিন গড়ে ১০.১২ লাখ লিটার পানির বিক্রি হচ্ছে। যার প্রতি লিটার পানির দাম মাত্র ৪০ পয়সা। বর্তমানে রাজধানীতে শ্যাওপাড়া ও ফরিকরাপুলে সবচেয়ে বেশি এটিএম বুথ পানির গ্রাহক রয়েছে।
সূত্র জানায়, এদেশের যে কোনো নাগরিক তার জাতীয় পরিচয়পত্র, দুই কপি ছবি ও ৫০ টাকা জমা দিয়ে যে কোনো বুথ থেকে একটি এটিএম কার্ড নিতে পারবে। এটিএম কার্ডে সর্বোচ্চ ৯৯৯ টাকা আর সর্বনিম্ন ১০ টাকা রিচার্জ করে পানি নেয়া যায়। ভূ-গর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক, আয়রন ও অদৃশ্য ব্যাকটেরিয়া থাকে। তাছাড়া এলাকাভেদে পানির পিএইচ কমবেশি থাকে। আর নদীর শোধিত পানিতে অনেক সময় ক্লোরিন, অ্যামোনিয়া ও অন্যান্য রাসায়নিকের গন্ধ পাওয়া যায়। কিন্তু বুথে পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে তা ফিল্টারে শোধন করা হয়। বুথে দুটো বড় ভেসেল থাকে। প্রথমটায় আয়রন ও আর্সেনিক ও দ্বিতীয়টায় পানির রাসায়নিকের গন্ধ বা ময়লা শোধন করা হয়। তাছাড়া মাইক্রন নামে আরেকটা ফিল্টার থাকে। প্রথম দুই ফিল্টারের পরও কোনো ময়লা থাকলে সেখানে ধরা পড়ে। তাছাড়া অদৃশ্য ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করার জন্য আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ব্যবহার করা হয়।
এদিকে এ প্রসঙ্গে ড্রিংকওয়েলের সহকারী ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম জানান, রাজধানীর নিম্নবিত্ত পরিবারকে সুলভমূল্যে পানি দেয়ার জন্য প্রকল্পটি শুরু করা হয়েছিল। এ পানি বাজারের বোতলজাত পানির মতোই নিরাপদ। পানি পরিশোধনের যে ব্যয় তার তুলনায় দাম কম রাখায় জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ঢাকা শহরে মোট ২৭৯টি পানির বুথ ছিল। কিন্তু পানির স্তর নেমে যাওয়া, কমবসতি এলাকায় বুথ স্থাপনসহ বিভিন্ন জটিলতায় এখন ৫৩টি বুথ বন্ধ। তবে হকের চাহিদা বাড়লে ৪শ’ এটিএম বুথ করার পরিকল্পনা রয়েছে।