নিজস্ব প্রতিবেদক :
পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিনোরি আজ বুধবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সভা কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম বলেছেন, বাংলাদেশের নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নে জাপানের কাছে কারিগরি সহায়তা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সরকারি ব্যয়ের দক্ষতা বাড়াতে দ্বিতীয় ধাপে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, জাপানি রাষ্ট্রদূত আমাকে অভিনন্দন জানাতে এসেছেন। বাংলাদেশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে জাপান সহযোগিতা দিয়ে আসছে সেটি অব্যাহত রাখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে তাকে। বিশেষ করে পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের দ্বিতীয় পর্যায়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। জাপানের অর্থায়নে ৪০ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধি নিয়ে জাপানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পঞ্চবার্ষিক ও প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জাপান পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিনোরি। এক প্রশ্নের জবাবে আবদুস সালাম বলেন, জাপান সব সময় আমাদের সঙ্গে আছে। ভবিষ্যতে নানা উন্নয়নে তারা পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে। জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের মধ্যে নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নবম-পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ। এই বিশাল পরিকল্পনায় জাপানের পলিসি ও বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী জাপান অর্থায়ন করে পাশে থাকবে। এদিকে, নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাকে টার্গেট করে বাংলাদেশের চাহিদা ও জাপানের পলিসি অনুযায়ী সহযোগিতা পরিকল্পনা সংশোধন করছে জাপান। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাটি তৈরি করা হবে। কোভিডের কারণে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। নবম পরিকল্পনায় তা পুষিয়ে নেবে সরকার। ২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২০৩০ সালের জুন মাসের মধ্যে নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) এ পরিকল্পনা তৈরি করছে।
এদিকে ১০ টাকার প্রকল্পের মধ্যে ৩ থেকে ৫ টাকা ঘুষ দিয়ে বাকি ৫ টাকার কাজ করা; এসব চলবে না। এইরকম অবস্থা শক্ত হাতে দমন করতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আবদুস সালাম। গতকাল বুধবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) ও বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটির (বিপিপিএ) কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মন্ত্রী একথা বলেন। পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, কথায় কথায় প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো চলবে না। এটা ভালোভাবে মনিটরিং করতে হবে। কোনো প্রকল্পের মেয়াদ ও সময় বৃদ্ধির জন্য যখন আমার কাছে আসে তখন আমি এগুলো সংশোধনের আগে আইএমইডি’র প্রতিবেদন দেখে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। কোনোভাবেই কথায় কথায় সময় ও টাকা বাড়ানো চলবে না। দেখেশুনে প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেখেশুনে প্রকল্প নিতে হবে। সেই জন্য আমরা কাজ করছি। আমি সব সময় আইএমইডি’র প্রতিবেদন দেখি। অনেকে পিডি একাধিক প্রকল্পের পরিচালক, ফিজিবিলিটিও স্টাডিও ঠিকমতো হয় না। ৩ বছরের প্রকল্প ১১ বছর লাগে, এটা চলবে না। তিনি আরও বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের কাজ আগে করতে হবে। প্রকল্প ধরে বসে থাকলো চলবে না। দ্রুত কাজ করতে হবে। আইএমইডি রিপোর্ট ঠিক না হলে হবে না। আপনারা ঠিকমতো কাজ করবেন। প্রকল্প ঠিক সময়ে, কোয়ালিটিভাবে বাস্তবায়ন করে জনগণকে সুবিধা দিতে হবে। কিছুকিছু বিষয় আমাদের হাত নাই, জমি অধিগ্রহণ, ডলার পরিস্থিতি অনেক সময় প্রকল্প সংশোধন হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, আপনাদের কাজের মূল্যায়নের উপর প্রকল্প নির্ভর করে। আমাদের কষ্টার্জিত অর্থ কাজে লাগাতে হবে। আমরা বিদেশি সাহায্য কমিয়ে আমতে চাচ্ছি। তাই পরীবিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলেও তিনি জানান।