• রবিবার, ২১ জুলাই ২০২৪, ১২:০৩ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না: আইনমন্ত্রী নাইজেরিয়ান চক্রের মাধ্যমে চট্টগ্রামে কোকেন পাচার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বললেন ব্যারিস্টার সুমন পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় নদী শাসনে ব্যয় বাড়ছে পিএসসির উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীরসহ ৬ জনের রিমান্ড শুনানি পিছিয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যবহার করছে না রেল ট্রানজিট রাজাকারের পক্ষে স্লোগান সরকারবিরোধী নয়, রাষ্ট্রবিরোধী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র-আলোকচিত্র প্রদর্শনী

নির্ধারিত বরাদ্দের চেয়েও ভর্তুকি ব্যয় বাড়ার শঙ্কা

Reporter Name / ৯২ Time View
Update : শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্ধারিত বরাদ্দের চেয়েও ভর্তুকি ব্যয় বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। কারণ বিশ্ববাজারে শিগগিরই কাক্সিক্ষত মাত্রায় পণ্যমূল্য কমার সম্ভাবনা নেই। ফলে বর্ধিত মূল্যেই সার, গম, এলএনজি গ্যাস ও চাল আমদানি করতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি ভালো না হলে সরকারের ভর্তুকি এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। চলতি অর্থবছরে সার্বিক ভর্তুকিতে ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। কিন্তুঅর্থ বিভাগ নির্ধারিত বরাদ্দের চেয়ে আরো ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ভর্তুকি ব্যয় বাড়তে পারার প্রাক্কলন করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ভর্তুকিতে বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হলে তা মোকাবেলায় একাধিক প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। তার মধ্যে প্রথম প্রস্তুতি হচ্ছে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বন্ধ করা হয়েছে। বাড়তি কোনো অর্থ ব্যয়ের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থ খরচের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে। ফলে ওই দুই খাত থেকে অর্থ সাশ্রয় হবে এবং তা দিয়ে ভর্তুকির অতিরিক্ত চাহিদা মেটানো যাবে।
সূত্র জানায়, ভর্তুকির ওপর চাপ কমাতে সম্প্রতি প্রতি কেজি সারের মূল্য ৬ টাকা বাড়িয়ে ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৮১ টাকা কেজিতে ইউরিয়া সার আমদানি করতে হচ্ছে। ফলে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে মূল্য বাড়ানোর পরও সরকারকে কেজিতে ৫৯ টাকা ভর্তুকি গুনতে হচ্ছে। আর তা গুনতে গিয়ে চলতি অর্থবছরে সারের জন্য যে ১৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি রাখা হয়েছে তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন হবে। এ বছর বিদ্যুৎ খাতে ১৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হয়েছে। দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ¦ালানি তেল ব্যবহার হচ্ছে। বিশ্ববাজারে জ¦ালানি তেলের সঙ্গে দেশের বাজারেও এর মূল্য বাড়ানো হয়েছে। তারপরও সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে ইতোমধ্যে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির আভাস দেয়া হয়েছে। বিদ্যুতের মূল্যও খুব শিগগিরই বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্ববাজার থেকে গ্যাস ও জ¦ালানি আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করে ভর্তুকি নির্দিষ্ট বরাদ্দের মধ্যে রাখা সম্ভব হবে না। আর চলতি অর্থবছরে বিদেশ থেকে ২ লাখ টন চাল এবং ৫ লাখ টন গম আমদানি করা হবে। কম মূল্যে গরিব মানুষের বিভিন্ন কর্মসূচিতে ওসব খাদ্য বিতরণ করা হবে। সেজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে গমের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশসহ সর্বত্র মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণেও চালের আমদানি মূল্য বেড়েছে। ফলে বেশি দামে আমদানি করে কম মূল্যে বিক্রির জন্য খাদ্য খাতে অর্থবছরের শুরুতে যে ৬ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকার ভর্তুকি রাখা হয়েছে, ওই অর্থ দিয়ে তা মেটানো সম্ভব হবে না। ফলে খাদ্য খাতে ভর্তুকি বাড়বে। আর এ বছর এলএনজি গ্যাস আমদানিতেও প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকার উপরে ভর্তুকি রাখা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববাজারে যেভাবে পণ্যটির মূল্য বেড়েছে তাতে শেষ পর্যন্ত ভর্তুকি নির্ধারিত বরাদ্দ ছাড়িয়ে যাবে। অতিসম্প্রতি জ¦ালানি তেলের মূল্য গড়ে ৪৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আর গত ৭ বছর ধরে জ¦ালানি তেলে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে না। চলতি অর্থবছরেও জ¦ালানিতে কোনো ভর্তুকি দেয়া হয়নি। তবে বিপিসি বেশি দামে আমদানি করে কম মূল্যে বিক্রি করছে। তাতে বিপিসির লোকসানের পরিমাণ বেড়েছে। আর তা কমিয়ে আনতেই জ¦ালানি তেলের মূল্য বাড়ানো হয়।
সূত্র আরো জানায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহিবলের (আইএমএফ) ঋণ পেতে ভর্তুকি কমিয়ে আনার জন্য সরকারের ওপর এক ধরনের চাপ রয়েছে। সম্প্রতি সংস্থাটি ভর্তুকি কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছে। যদিও ভর্তুকি কমিয়ে আনার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছে। তবে এক লাফে অনেক বেশি মূল্য বাড়িয়ে ভর্তুকি সমন্বয় করা হলে মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যায়। ভর্তুকি কমিয়ে আনার সঙ্গে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আয় বাড়লে ভর্তুকির টাকা ব্যবস্থা করা যায়। সেজন্য জরুরি ভিত্তিতে রাজস্ব আহরণের দুর্বল দিকগুলো শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।
এদিকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল চলতি অর্থবছরের জন্য ৬ ধরনের চ্যালেঞ্জ শনাক্ত করেছেন। তার মধ্যে একটি হচ্ছে-গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাড়তি হারে ভর্তুকির জন্য অর্থসংস্থান করা। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ভর্তুকি খাতে ব্যয় নির্ধারিত বরাদ্দের চেয়ে আরো বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category