নিজস্ব প্রতিবেদক :
জ¦ালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং ধর্মঘটের নামে ‘পরিবহনে নৈরাজ্য’ বন্ধের দাবি করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তন এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এই দাবি করেন। এ সময় তারা জ¦ালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির নামে অযৌক্তিকভাবে গণপরিবহনে যাত্রীদের ওপর অধিকা ভাড়া চাপিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘করোনা সংকটে লকডাউনসহ নানা কারণে দেশের ৩ কোটি ২৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে বলে এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। এরকম শঙ্কটাপন্ন অবস্থায় দেশের মানুষজন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে যখন দিশেহারা, ঠিক তখনই জ¦ালাইন তেলের দাম একলাফে ২৩ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে মানুষের যাতায়াত, পণ্য পরিবহন, খাদ্যপণ্য ও কৃষিজ উৎপাদনসহ সামগ্রিক ব্যয় আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। পণ্য ও সেবামূল্য আরও একদফা বৃদ্ধির ফলে চরমভাবে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। এতে নতুন করে আরও কয়েক কোটি মানুষ দারিদ্রের ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। ‘দুঃসময়ে’ একলাফে ২৩ শতাংশ তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা ‘আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত’ উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ করেন, করোনা শঙ্কটাপন্ন জনগণকে প্রণোদনা দিয়ে সরকার যেখানে জনগণের পাশে থাকার কথা সেখানে জ¦ালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে জনসাধারণকে আরেক দফা শঙ্কটে ঠেলে দিয়েছে। বিশ্ববাজারে জ¦ালানি তেলের দাম কম থাকায় সরকার উচ্চহারে তেল বিক্রি করে গত ৬ বছরে ধরে একচেটিয়া মুনাফা করার মাধ্যমে প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করেছে বলেও দাবি করেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ৬ লাখ কোটি টাকার জাতীয় বাজেটে জ¦ালানির মূল্য না বাড়িয়েও ৬ হাজার কোটি টাকা বছরে ভুতর্কি দেওয়ার সক্ষমতা সরকারের রয়েছে। শিগগিরই জ¦ালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে পরিবহন ধর্মঘটের নামে ‘যে নৈরাজ্য চলছে’ তা বন্ধের দাবি করেন তিনি। সংগঠনের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, যে প্রক্রিয়ায় দাম বাড়ানো হয়েছে তা অবৈধ। জ¦ালানি তেলের দাম বাড়ানোর কোন ক্ষমতা জ¦ালানি মন্ত্রণালয়ের নেই, এটা করার ক্ষমতা বিইআরসির। সেখানে শুনানির পরেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিয়ম। সরকার গায়ের জোরে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের নেতা কর্মীদের বিরাট অংশের আয় বৃদ্ধিকে সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধি মনে করে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হকসহ আরও অনেকে।