নিজস্ব প্রতিবেদক :
পিতামাতার কাউকে যেন কোনোভাবে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয় সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন দেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। আজ সোমবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সিনিয়র সিটিজেনস ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সন্তানদের শুধু পিতামাতার ভরণ-পোষণ দিলেই হবে না, তাদের সব বিষয়ে খোঁজখবর রাখতে হবে। শুধু পিতামাতার সেবা করলেই হবে না, সন্তান যদি চাকরি করে তাহলে সন্তানের বেতন থেকে বৃদ্ধ বয়সে তাদের কিছু অংশ দিতে হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, সন্তানরা তাদের পিতামাতার ভরণ-পোষণ দেওয়ার পাশাপাশি দাদা-দাদি, নানা-নানির প্রতি দায়িত্বপালন করবেন। তথাকথিত শিক্ষিতরাই বৃদ্ধ পিতা-মাতার প্রতি সীমাহীন উদাসীনতা দেখায়, এটি দেখে ব্যথিত হন বলে মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রবীণদের প্রতি নিপীড়ন ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। তথাকথিত শিক্ষিত ব্যক্তিরা বয়োবৃদ্ধ পিতা-মাতার প্রতি সীমাহীন উদাসীনতা প্রদর্শন করছে-যা সবসময় আমাকে ব্যথিত করে। পিতা মাতার প্রতি অবহেলা প্রদর্শনকারী সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ আনা এখন বাস্তবতার নিরীখে অপরিহার্য। পিতা মাতার ভরণ-পোষণ নিশ্চিতের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ তথা প্রবীণদের প্রতি নবীনদের দায়িত্ব পালন সকল ধর্মেরই শিক্ষা। সন্তান কর্তৃক পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩ অনুযায়ী প্রত্যেক সন্তানকে তার পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করতে হবে। কোনো পিতা-মাতার একাধিক সন্তান থাকলে সেক্ষেত্রে সন্তানরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের পিতা-মাতার ভরণ পোষণ নিশ্চিত করবেন। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা ও বর্তমান সম্মানজনক অবস্থান সৃষ্টির জন্য প্রবীণদের ভূমিকা অনস্বীকার্য উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, তাই তাদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার ও সমাজের সকল স্তরের মানুষকে অবস্থান থেকে আরো এগিয়ে আসতে হবে। সরকারের প্রণীত প্রবীণ নীতিমালা পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন পূর্ণ বাস্তবায়নে সমাজের সকলকে ভূমিকা পালন করতে হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সিটিজেনস ওয়েলফেয়ার সোসাইটির চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।