নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণটিকা কার্যক্রমের প্রথম দিন গত শনিবার সারাদেশে এক কোটি ২০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ রোববার দুপুরে ৪২তম বিশেষ বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্ত চার হাজার চিকিৎসকের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, গত গত শনিবার আমাদের এক কোটি টিকা দেওয়ার কর্মসূচি ছিল। আমরা সবাই মিলে এ কর্মসূচি পালন করার চেষ্টা করেছি। কাজটি শুধু সফলই হয়নি, গণটিকার প্রথম দিনে আমরা এক কোটি ১২ লাখ প্রথম ডোজ দিতে সক্ষম হয়েছি। আর সব মিলিয়ে এদিন এক কোটি ২০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। যারা টিকা কর্মসূচিতে জড়িত ছিলেন সবাইকে প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ জানিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুযায়ী ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু গত শনিবারের কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা মোট ৭৩ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্পন্ন করেছি। জাহিদ মালেক বলেন, টার্গেট পপুলেশনের মধ্যে আমরা প্রায় শতভাগ টিকা দিতে পেরেছি। এ টিকা কর্মসূচি চলমান থাকবে। দুদিন পরেও প্রথম ডোজ, দ্বিতীয় ডোজ ও বুস্টার ডোজ চলমান থাকবে। তিনি বলেন, আপনারা জানেন বাংলাদেশ কোভিড টিকা দিতে অনেক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। টিকাদানে গত দুই-তিন দিন আগের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান পৃথিবীর ২০০ দেশের মধ্যে বর্তমানে ১০ নম্বরে। এটি বিরাট একটা পাওয়া, তবে এটা এমনি এমনি হয়নি। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ যিনি করোনার টিকা ক্রয়ে তাৎক্ষণিক অর্থায়ন করেছেন ও নির্দেশনা দিয়েছেন। করোনা নিয়ন্ত্রণে সফলতা পেয়েছি উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে ভ্যাক্সিন। এ পর্যন্ত প্রায় ২০ কোটি ৫০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। আজকেরটা ধরলে সংখ্যাটা প্রায় ২১ কোটি। অনুষ্ঠানে ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, দেশে টিকা উৎপাদন হবে। আমাদের দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি ও গরিব দেশকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সফলভাবে ভূমিকা রাখছে। টিকাদান কর্মসূচি শুরু থেকে একটু সমস্যা হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সংকট কাটিয়ে উঠে চমৎকারভাবে টিকা ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে আমাদের টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনা মোকাবিলায় সফলভাবে ভূমিকা রাখছে। যে কারণে সংক্রমণ ও মৃত্যু তুলনায় কম ছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ইতিহাসে এত সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগ আর কখনও হয়নি। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আমরা চিকিৎসক হয়েছি, নামমাত্র খরচে চিকিৎসক হয়েছি। নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে অনেক দরিদ্র মানুষের ঘামে ভেজা উপার্জন আমাদের পিছনে রয়েছে। তিনি বলেন, চিকিৎসক হিসেবে একেকজন একেকটি প্রতিষ্ঠান এবং স্বাস্থ্য বিভাগের একেকজন অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করবেন। এমনভাবে জনগণকে সেবা দিতে হবেÑচিকিৎসার পর কোনও রোগীর মৃত্যু হলেও যেন রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খোরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহমেদুল কবীর প্রমুখ।